২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ৪৪ আসামির আপিল গ্রহন

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী, ২০১৯ ০৪:২২:৫০

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ৪৪ আসামির আপিল গ্রহন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ দণ্ডপ্রাপ্ত  ৪৪ আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এইসব আসামির ক্ষেত্রে যে অর্থদণ্ড নিম্ন আদালত দিয়েছিল তার কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে।

আজ রোববার সকালে এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।এই বেঞ্চের সহকারী অ্যাটর্নি জেনালের ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ জানিয়েছেন, এই ৪৪ আসামি কারাগারে আছেন। এর মধ্যে ১৮ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং বাকিরা বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত। তারা কারাগারের মাধ্যমে জেল আপিল করেন এবং আদালত সেই আপিলগুলো শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন।

এদিকে তারেক রহমানসহ এ মামলায় পলাতক আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করার আগ পর্যন্ত তাদের পক্ষে আপিল দায়েরের কোনো সুযোগ নেই। এর আগে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়সহ মোট ৩৭ হাজার তিনশ ৮৫ পৃষ্ঠার নথি গত ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় এসে পৌঁছায়।

প্রসঙ্গত গত ১০ অক্টোবর এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিস চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।  বাকি ১১ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। 

সেইসঙ্গে পলাতক ১৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ওই ঘটনা ঘটে।  হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন ও আহত হন আরও তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

এ ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।এর পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

সম্পূরক চার্জশিটে যে ৩০ জনকে আসামি করা হয় তারা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও জোট সরকারের মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ,

এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বকস, ডিএমপির তৎকালীন উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান, সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, হুজির আমির মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আবদুর রউফ,

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ডিজিএফআইর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার (বরখাস্ত), বিএনপির ঢাকা মহানগর নেতা আরিফুর রহমান, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে।গোলাম মোস্তফা, সিআইডির বিশেষ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ,

হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মো. হানিফ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও বাবু ওরফে রাতুল বাবু।এদের মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগী শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হয়েছে।

তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলার বর্তমান আসামির সংখ্যা ৪৯ জন।

প্রজন্মনিউজ২৪/মোস্তাফিজুর রহমান

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ