৫০০ টাকার বাসভাড়া দেড় হাজার, পকেটে এক হাজার, কী করবেন তিনি

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫ ০২:৫৭:৪২ || পরিবর্তিত: ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫ ০২:৫৭:৪২

৫০০ টাকার বাসভাড়া দেড় হাজার, পকেটে এক হাজার, কী করবেন তিনি

প্রজন্মডেস্ক : রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সারা দেশের সব স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থেকে যাত্রীদের আগাম কোনো বার্তাও দেওয়া হয়নি। ফলে স্টেশনে এসে ফিরে যাওয়াসহ গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। খুলনা অঞ্চলের যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ট্রেন বন্ধ থাকায় বাসসংশ্লিষ্টরা যাত্রীদের অনেকটাই জিম্মি করে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ২৮ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। ফলে ট্রেন যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষ বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

খুলনা
আজ সকালে দূরদূরান্ত থেকে যাত্রীরা খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে এসে ট্রেন চলাচল বন্ধ দেখে ফিরে গেছেন। অবশ্য এখানে অগ্রিম কাটা টিকিটের অর্থ যাত্রীদের ফেরত দিয়েছে রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ।

খুলনা থেকে ট্রেন বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে বাসের ওপর। এতে বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাস না পেয়ে ট্রেন ছাড়বে, সেই আশায় অনেককে স্টেশনের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।


যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ট্রেন বন্ধ থাকবে, এমন কোনো নোটিশ তাঁরা পাননি। এসএমএস বা অন্য কোনো মাধ্যমেও কাউকে ব্যাপারটা জানানো হয়নি। ট্রেন বন্ধ থাকবে ব্যাপারটি জানলে আগে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

আজ মঙ্গলবার সকালে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় অনেক যাত্রীকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাঁদের অনেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর জানতেন না। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্টেশনে অনেক যাত্রীকেই ট্রেনের খবর জানতে আসতে দেখা যায়। ট্রেন চলবে না জেনে অনেকেই স্টেশন ছেড়ে যান।

মো. মইনুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায়। তিনিও কৃষিকাজ করার জন্য খুলনায় এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আছেন আরও কয়েকজন। মইনুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেন চলাচল বন্ধ, তা জানতাম না। সকাল আটটায় স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন চলছে না। এখন কোনো বাসও নেই। ট্রেন যদি না ছাড়ে, তাহলে সবাই মিলে বাস বা ট্রাক ভাড়া করে বাড়ি যাব।’

খুলনা রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. জাকির হোসেন বলেন, মূলত সোমবার রাত ১২টার পর থেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। প্রতিদিন ভোর থেকেই ঢাকা, রাজশাহী, বেনাপোল, নীলফামারীর উদ্দেশে খুলনা থেকে ট্রেন ছেড়ে যায়। রানিং স্টাফদের ধর্মঘটের কারণে আজ কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। যাঁরা আগ থেকে টিকিট বুকিং দিয়েছিলেন, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। কবে এ সমস্যার সমাধান হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি।

ময়মনসিংহ
প্রতিদিন গড়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা, জামালপুর, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনে যাতায়াত করেন প্রায় ছয় হাজার মানুষ। বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন চলাচল না করায় ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এখানকার যাত্রীরা।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কেটেও গন্তব্যে যেতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন যাত্রীরা। যথাসময়ে টিকিটের টাকা পেতেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছিল তাঁদের।

নেত্রকোনা যেতে স্টেশনে আসেন কলেজশিক্ষার্থী সিফাত ই জামান। তিনি বলেন, ‘ভোটার হতে কাগজপত্র নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। ট্রেনে মাত্র ২০ টাকায় যেতে পারতাম, কিন্তু বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প পথে যেতে হবে।’

কর্মবিরতিতে থাকা রেলওয়ে রানিং স্টাফ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ময়মনসিংহ কেওয়াটখালী শাখার অতিরিক্ত সম্পাদক মো. হানিফ বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো ট্রেন চলবে না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যদিও আমাদের এই আন্দোলন পূর্বঘোষিত। সরকার আমাদের দাবি মেনে নিলেই কর্মে ফিরব।’

এদিকে জংশন স্টেশনটিতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান স্টেশন সুপারের সঙ্গে। সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট এস এম নাজমুল হক খান বলেন, আন্দোলনের কারণে ২৮ জোড়া ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিসি বাসে তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


প্রজন্ম নিউজ২৪/টিপু

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ