বিএসএফ এর গুলিতে কিশোরী নিহতের ঘটনায় এইচআরএসএস' এর তীব্র নিন্দা

প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৫:৩১:১১

বিএসএফ এর গুলিতে কিশোরী নিহতের ঘটনায় এইচআরএসএস' এর তীব্র নিন্দা


নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে কিশোরী স্বর্ণা দাস (১৪)  নিহতের ঘটনায় এইচআরএসএস' এর তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু বিচারের আহবান

বাংলাদেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে স্বর্ণা দাস (১৪) নামের এক কিশোরী মারা গেছে। গত রোববার রাত ৯.০ টায় উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরের দিন সোমবার তার লাশ বিএসএফ নিয়ে যায় এবং ৪৫ ঘন্টা পর ফেরত দেয়। নিহত স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছে।

কিশোরীর বাবা পরেন্দ্র দাস ও মা সঞ্জিতা রানী দাসের তথ্যমতে, তাঁদের চার ছেলে-মেয়ে। এক ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় থাকেন। ছেলেকে দেখতে সঞ্জিতা ছোট মেয়ে স্বর্ণাকে সঙ্গে নিয়ে গত রোববার রাতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে চট্টগ্রামের এক দম্পতিও ছিলেন। রাত ৯.০ টার দিকে ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে স্বর্ণা ঘটনাস্থলে মারা যায়। তাঁদের সঙ্গে থাকা দম্পতি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। গুলি থামার পর সঞ্জিতাসহ বাকিরা লালারচক গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেন। পরে আহত দম্পতিকে চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৪ সালের জানুয়ারী থেকে ০২ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ৪৭ টি হামলার ঘটনায় ২১ জন বাংলাদেশী নিহত, ২৩ জন আহত ও ৪৭ জন গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক মোট ২৭৭ জন বাংলাদেশি নিহত এবং ২৬১ জন আহত হয়েছেন। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক শুধুমাত্র ২০২৩ সালে ৩০ জন বাংলাদেশি নিহত এবং আরও ৩১ জন আহত হন, যা সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রæতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্বেও, এই দুঃখজনক ঘটনাগুলি উদ্বেগজনক হারে  বছরের পর বছর ধরে ঘটছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এবং উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলে আসছে। বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকান্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমরা উভয় দেশের কর্তৃপক্ষকে এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপ এবং সীমান্তের হত্যাকান্ডের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে শূন্যে নিয়ে আসার বিষয়ে আহ্বান জানাই। 

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে কিশোরী স্বর্ণা দাস ও ফেলানীর  হত্যাকান্ডের ঘটনাসহ পূর্ববর্তী সকল সীমান্ত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার আহবান জানাচ্ছে। সীমান্ত এলাকায়, সমস্ত সীমান্তব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলিকে মেনে চলতে দুই দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আমরা আশা করি যে কিশোরী স্বর্ণা দাসের মর্মান্তিক মৃত্যু বাংলাদেশের সীমান্তে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যে অর্থবহ সংলাপ ও পদক্ষেপের অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।  


প্রজন্মনিউজ২৪/আরফাত 
 

এ সম্পর্কিত খবর

ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি এপিবিএন সুজন ৩ দিনের রিমান্ডে

বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু হতে ২০২৬

শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করুন- আতিকুর রহমান

পবিপ্রবিতে দিনব্যাপী ক্রয় এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা কর্মশালা

হল উদ্ধার নিয়ে ভূয়া তথ্য ছড়াচ্ছে জবি শিক্ষার্থী বকর

আশুলিয়ায় দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ, নিহত ১

ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট উত্তরণে অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে

মির্জা আব্বাসকে হত্যাচেষ্টা, ৩ দিনের রিমান্ডে মেনন

আমেরিকার ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তির প্রসঙ্গ

মাদকের গডফাদারদের ধরে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ