সালমান এফ রহমানের পাচার করা টাকার পরিমাণ জানালো সি আই ডি

প্রকাশিত: ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৮:০২:৩৬

সালমান এফ রহমানের পাচার করা টাকার পরিমাণ জানালো সি আই ডি

প্রজন্মনিউজ ডেক্স: বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। যার বিরুদ্ধে রয়েছে শেয়ার বাজার জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ। সালমান এফ রহমানের অর্থপাচার সম্পর্কে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর তদন্তে উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট - 

অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গতকাল জানিয়েছে, রপ্তানি মূল্য ফেরত না দিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপ ১৮ টি কোম্পানির মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে পাচার করেছে কমপক্ষে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১ হাজার ৬ শত ১৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

সিআইডির আর্থিক অপরাধ বিভাগ অসঙ্গতিগুলিকে "বাণিজ্য-ভিত্তিক অর্থপাচার" হিসাবে অভিহিত করেছে এবং ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

সিআইডির ডাটাবেস অনুসারে, অ্যাপোলো অ্যাপারেলসের মাধ্যমে প্রায় ২৩.০৪ মিলিয়ন ডলার, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস-এর মাধ্যমে ২৪ মিলিয়ন ডলার, আন্তর্জাতিক নিটওয়্যার এবং পোশাকের মাধ্যমে ২৫.২০ মিলিয়ন ডলার এবং এসেস ফ্যাশনের মাধ্যমে ২৪.৩৯ মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

এ সবেরই মূল হোতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

সিআইডির আর্থিক অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, গ্রুপটি প্রথমে পণ্য রপ্তানির জন্য ক্রেডিট লেটার খুলে তারপর ৮০ শতাংশ মূল্যের বিপরীতে স্থানীয়ভাবে ঋণ নেয়।
গ্রুপটি রপ্তানির অর্থ ফেরত না আনায় ঋণ অপরিশোধিত রয়ে গেছে।

একই বিভাগের আরেক কর্মকর্তা বলেন, তারা প্রাথমিক তথ্য পেয়েছেন যে সালমান এফ রহমান অর্থ পাচার করেছেন এবং দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেছেন।

সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান সৌদি আরবে একটি বড় ওষুধ কোম্পানি খুলেছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আর সৌদি আরবের ওই কোম্পানির বেশিরভাগ তহবিল বাংলাদেশ থেকে গেছে বলে জানান তিনি।

সি আই ডি-র সংগঠিত অপরাধ বিভাগের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল কুসুম দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডার আইনে মামলা করা হবে।

প্রাথমিক তদন্তে সিআইডির আর্থিক অপরাধ বিভাগ জানতে পেরেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে ঋণ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ঋণের মধ্যে ৫ হাজার ২৮ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে, যার চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান নিজেই।

তদন্তের সাথে জড়িত একজন সিআইডি কর্মকর্তার মতে, রাষ্ট্র পরিচালিত জনতা ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে কমপক্ষে ২১,৬৮১ কোটি টাকা নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ।

বেক্সিমকো ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেও নিয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা; সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী থেকে ৫,৬৭১ কোটি টাকা; এবং এবি ব্যাংক থেকে ৬০৫ কোটি টাকা।

সিআইডির আর্থিক অপরাধ বিভাগ তাদের ডাটাবেস সংগ্রহের জন্য সাতটি ব্যাংকে টিম পাঠিয়েছে বলে এর বিশেষ সুপার মোহাম্মদ বসির উদ্দিন জানিয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্তে আরও দেখা গেছে, সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিদেশে ঋণ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত তিন বছরে বাজার থেকে দৃশ্যমানভাবে প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং জালিয়াতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

দোকানের কর্মচারীকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সালমান এফ রহমান গত ১৩ আগস্ট থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/ সিয়াম শেখ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ