প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৩৯:০৯
ভ্রমণ ডেস্ক: ঢাকার ব্যস্ত জীবনে অফিস-বাসা, বাসা-অফিস করতে করতে হাঁপিয়ে ওঠেন মোটামুটি সবাই। সপ্তাহের ব্যস্তদিনগুলোর শেষে যে একদিন বিরতির দেখা মেলে তাও স্বস্তির শ্বাস ফেলে উপভোগের কোনও উপায় নেই। চন্দ্রিমা উদ্যান, হাতিরঝিল, রমনা পার্ক, পূর্বাচল এলাকা- ঢাকার সব বিনোদন স্পটেই একটু স্বস্তির খোঁজে নগরবাসীর ভিড়। এসব স্পটে ঘুরেফিরে কৃত্রিম সৌন্দর্যও এক সময় ফিকে হয়ে ধরা দেয়। ঢাকায় বসবাস করা অনেক মানুষের একটা সময় কেটেছে গ্রামে। গ্রামীণ জীবনের অনেক স্মৃতি তাঁদের তাড়িত করে। যাঁরা ইট-পাথর ও কংক্রিটের জঞ্জালে থেকে হাঁপিয়ে ওঠেন, গ্রামীণ পরিবেশ তীব্রভাবে অনুভব করেন; তাঁরা এক বিকেলে গ্রামীণ জীবনের ছোঁয়া নিতে চলে আসতে পারেন ঢাকার বুকেই আফতাবনগরে। ঢাকার রামপুরা ব্রিজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে সোজা পূর্ব দিকে এমন গ্রামীণ আবহ।
নিরিবিলি সড়ক, সড়কের পাশে সবুজ ঘাস, গবাদিপশু, তরুলতা, গুল্ম, কাশফুল, ঘাসফুল, জঙ্গল, জলাশয় ও বাঁশের সাঁকোর অনিন্দ্য দৃশ্যপট মুহূর্তের মধ্যে আপনাকে গ্রামীণ জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
এটি জহুরুল ইসলাম সিটি হিসেবেও পরিচিত। সেখানে সারি সারি ব্যাটারিচালিত রিকশা। বেশির ভাগ রিকশাচালক ঘুরতে আসা লোকজনকে কাশবন মোড়ের যাত্রী করতে মুখিয়ে থাকেন। ভাড়া চেয়ে বসেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। দর-কষাকষি করে ৩০ টাকা ভাড়ায় কয়েক মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় কাশবন মোড়ে। রিকশা থেকে নামতেই চোখে পড়ে বেশ কিছু ছেড়ে দেওয়া গরু পিচঢালা সড়কের পাশের জমিতে সবুজ ঘাস খাচ্ছে। পাশেই সাদা কাশবনে ছবি তুলছেন দর্শনার্থীরা।
এখানে ঘুরতে আসা আদনান নামের এক কলেজছাত্র বললেন, এলাকাটা দেখতে সুন্দর, তাই তিন বন্ধু মিলে এখানে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। কাশবন মোড়ের (এন ব্লক) কাছেই একটি বদ্ধ জলাশয়। সেই জলাশয়ে নৌকার এক পাশে বসে আপনমনে বিড়ি টানছিলেন, আর ঘুরতে আসা তিন তরুণের সঙ্গে গল্প করছিলেন এক বৃদ্ধ। ওই বৃদ্ধ বললেন, নিজের জমি ও কিছু জমি বর্গা নিয়ে জলাশয়ে বিভিন্ন মাছ চাষ করেছেন। পাশাপাশি ঘুরতে আসা লোকজনকে টাকার বিনিময়ে জলাশয়ের চারপাশে ঘোরান। এতে জনপ্রতি ৫০ টাকা নেন।
কাশবন মোড় থেকে পিচঢালা সড়ক ধরে হেঁটে সোজা দক্ষিণ দিকে ফেরার পথে শীতল বাতাসের ঝাঁপটা এসে দেহ-মনকে প্রশান্তি দিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এসে সড়ক বিভাজকের গাছের নিচে থামতে বাধ্য করে। এম ব্লকের পাশে তিন রাস্তার মোড়ে চটপটি, ঝালমুড়ি ও বুট-বাদামের কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে। ফুচকা ও চটপটি বিক্রেতা নুরুন্নাহারের দোকানে সবুজ গালিচায় কিংবা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে ৫০ টাকায় খেয়ে নিতে পারেন এক প্লেট ফুচকা কিংবা চটপটি।
তিন রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিকে তাকালে চারদিকে পানি মাঝখানে গাছগাছালিতে ঘেরা টিনের ঘর চোখে পড়ে। সেটি জহিরুল ইসলাম দারুল উলুম মাদ্রাসা। দেখে মনে হয়, দ্বীপের মধ্যে মাদ্রাসাটি স্থাপিত। মাদ্রাসায় যেতে হয় বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে। সাঁকোটির সামনে ঘাস পরিষ্কার করছিলেন মাদ্রাসাটির তরুণ ছাত্র আরিফ ইসলাম। তাঁর বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায়। বছরখানেক আগে তিনি ঢাকার বনশ্রীর একটি মাদ্রাসায় পড়তেন। সেখানে মন বসাতে পারেননি। তাই এখানে নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশে এসে তাঁর মন বসেছে। তিনি এখন মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ যাত্রায় পরিবারের সদস্য, স্বজন, প্রিয়জন সঙ্গী থাকলে মসজিদ থেকে মাগরিবের আজানের ধ্বনি শোনামাত্র ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম। আর সমবয়সী বন্ধুরা থাকলে সন্ধ্যার আড্ডাটা এখানেই দিতে পারেন। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলে এখানকার নিরিবিলি সড়কে ছিনতাইয়ের আশঙ্কা সচেতন মানুষ করতেই পারেন। তাই এবার বন্ধুরা হেঁটে গল্পে গল্পে রামপুরা ব্রিজে চলে আসতে পারেন। কিংবা ব্যাটারিচালিত রিকশাপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়ায় আবার ফিরতে হবে কংক্রিটের জঞ্জালে।
প্রজন্মনিউজ২৪/এমটি
বিয়ের আসর থেকে বর চলে যাওয়াতে কনের আত্মহত্যা
বিএনপির ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের আশ্বাস
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নেওয়া আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ : কামাল
খুলনার আরও ৬ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়ে
সহিংসতায় বর্তমান ও সাবেক ক্ষমতাসীনরা দায়ি : মোমিন মেহেদী
নোটিশ পেয়ে দুঃখ পাওয়ার কথা থাকলেও আনন্দিত: শামীম ওসমান
খুলনা থেকে ঢাকায় ২১০ টাকায় যাওয়া যাবে