ঢাবিতে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশনের সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০৭:০১:০৯

ঢাবিতে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশনের সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ‘ড্রাগ অ্যাডিকশন অ্যান্ড সুইসাইড প্রিভেনশন : রুল অব মেন্টাল ওয়েলবিং ইন উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে এ সিম্পোজিয়াম শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষ হয়।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবগত করিয়ে বলেন, সমাজে চলতে গেলে অনেকে অনেক কথা বলবে। এগুলো নিয়ে ভাবার দরকার নেই। কোনো ঘটনাকে আমরা রিয়্যাক্ট না করে যদি সেসবে রেসপন্স করি, তখন বিষয়টাকে হ্যান্ডল করা সহজ হয়। আমরা চাইলে এ পরিবর্তনগুলো আমাদের নিজেদের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিভাবান শিক্ষার্থী যখন আত্মহত্যা করেন, সেটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বলে, তাদের মনের কথা শুনার কেউ নেই। তাদের কথা কেউ শুনছে না। সুতরাং আমাদের তাদের কথা শুনতে হবে। খাওয়ানো আর লেখাপড়ার খরচ বহন করাই মা-বাবার একমাত্র কাজ নয়। সন্তানদের সঙ্গে আবেগীয় বন্ধন তৈরি করতে হবে। তাদের রেসপন্সিবিলিটি নিতে শিখাতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক হক বলেন, জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর সক্ষমতা নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের একে অন্যের সহমর্মিতার হাত একে অপরের দিকে বাড়িয়ে দিতে হবে। ড্রাগ অ্যাডিকশন বা আত্মহত্যা এগুলো কারও একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব না। পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। যারা আত্মহত্যা করেন, তাদের মরে যাওয়াটাই উদ্দেশ্য নয়। আসলে তারা মূলত হতাশা থেকে বাঁচতে চান। সুতরাং তাদের হতাশা যদি দূর করে দেওয়া অথবা অন্তত কমানো যায় তাহলে তাদের বাঁচানো যাবে। সুতরাং আমাদের চেষ্টা করতে হবে যেন তাদের হতাশা দূর করা যায়। এজন্য সবাইকে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এসময় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বাংলাদেশ মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নারী। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী বা সাফল্যমণ্ডিত জনগোষ্ঠী কখনোই তৈরি হবে না। কারণ একটি দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে সুস্থ না রাখলে সে দেশ কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। এটি চরম একটি সত্য কথা।

তিনি বলেন, আমরা যারা নারী তাদের বড় একটি দুর্ভাগ্য হচ্ছে আমাদের প্রতি পদক্ষেপে প্রমাণ করতে হয় যে আমরা পারি। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রথমেই ধরে নেওয়া হয় তারা পারে। আর সেজন্যই আমাদের সবকিছুতে এক্সট্রা অ্যাফোর্ট দিতে হয়। এটাও কিন্তু মানুষের মধ্যে এক ধরনের মানসিক প্রেশার তৈরি করে।

নারীদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে সাবেক এ তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা মানসিক অসুস্থতা বা বিপর্যস্ততার কারণে নিজেদের ভালনারেবল মনে করেন, তাদের প্রতি আমার পরামর্শ হচ্ছে- অবশ্যই একজন সাইকোলজিস্ট দেখাবেন এবং পরিবারের কাছে সহযোগিতা চাইবেন। পরিশেষে এজ অ্যা টিম স্রোতের বিপরীতে সাতরিয়ে আপনার গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম দেশের বিশেষ করে নারীদের কল্যাণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, তোমার নিজের উন্নয়ন নিজেকেই করতে হবে। পরিস্থিতি যাই হোক সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে, তোমাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তোমার থাকতে হবে। একবার লস্ট মানে কিন্তু লস্ট ফরেবার। সার কথা হলো, প্রতিযোগিতা থাকতে হবে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকার মানুষরা চাইলেও মিথ্যা কথা বলতে পারে না। আর আমরা প্রতিনিয়ত অহরহ মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছি। আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বা সামাজিক ক্ষেত্রে যতটা এগিয়েছি, আমাদের বিহেভিয়ার্ল প্যাটার্ন ততটা এগোয়নি। আমাদের মূল্যবোধ বা দৃষ্টিভঙ্গি ততটা উন্নত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় পড়েও আমরা উন্নত মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে পারছি না।

সরকারের এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমাজের কাঠামোটা এখনো কয়েক দশক আগের। আমাদের উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের সোশ্যাল নর্মসগুলো উন্নত হচ্ছে না। উন্নত দেশের মানুষ হতে হলে তো উন্নত মন-মানসিকতার অধিকারী হতে হবে। তখনই উন্নত সমাজের ফল পাওয়া যাবে।

সিম্পোজিয়ামে অ্যাকশনিস্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আ ন ম  ফখরুল আমিন ফরহাদের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির হেড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন খাদিজ আকতার উর্মী এবং শেহেরজান হকের সঞ্চালনায় সিম্পোজিয়ামে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমরান হোসেন ভূইয়া এবং সংগঠনটির হেড অব কমিউনিকেশন রাইসা নাসের। এছাড়া প্যানেল ডিসকাশনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. নাইমা নিগার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব উম্মে ইশরাত এবং কোকাকোলার মার্কেটিং প্রধান রাজবীন আবির প্রমুখ।


প্রজন্মনিউজ২৪/এফএ

এ সম্পর্কিত খবর

 সহিংস পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী? ঘটনা পরিক্রমা কী বলছে?

আন্দালিব পার্থকে ১০ দিনের রিমান্ডে চায় ডিবি

স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর অনুষ্ঠিত

২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাবির ভিসি চত্বরে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত,কফিন ধরে শপথ শিক্ষার্থীদের 

সরকারি আজিজুল হক কলেজে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীলেগর হামলা

খুলনায় কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ

বিজিবির পাহারায় ঢাবিতে সিন্ডিকেট সভা শুরু

কোটা আন্দোলনে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন

ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ খুবি-কুয়েট শিক্ষার্থীদের

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ