প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ ১১:১০:৫৪
লেবানের ভিসা এক সময় ছিল সোনার হরিণ, বন্ধই থাকত বেশি সময় কাল। ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেখা গেছে জর্ডানে আসা প্রবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিরিয়া বর্ডার দিয়ে লেবানন আসত। এদের প্রায় সকলেই লেবাননে ফ্রি ভিসা নিয়ে বৈধ হন, আবার কেউ কেউ দেশে চলে যান। এদের খুব কম সংখ্যায় মালিকানা ভিসায় কাজ করত। সিরিয়া যুদ্ধের কারনে বর্ডারের দালাল চক্র যেমন খুঁজে পাওয়া যায়না, আবার জীবনের ভয়ে এখন আর কাউকে লেবাননও আসতে দেখা যায়না।
২০০৫ থেকে বাংলাদেশী মহিলা কর্মীদের ভিসা চালু থাকলেও পুরুষ ভিসা লেবানন সরকার বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে পুরুষ কর্মীর ভিসার দ্বার উম্মুক্ত হলে কর্মী আসার হিড়িক পড়ে যায়। এমনও দিন গেছে তিনশ’র অধিক পুরুষ মহিলা একদিনে লেবানন প্রবেশ করেছে। ফ্রি ভিসায় আসলে নাকি লেবাননে অধিক কামাই করা যায়, তাই অনেক পুরুষ-মহিলা কর্মীরা ফ্রি ভিসায় এসেছে বা এখনো আসছে। কিন্তু ইদানিং দেখা গেছে লেবাননে এই ফ্রি ভিসার কর্মীরাই বেকার রয়েছে কাজের অভাবে। কর্মহীন অনেক কর্মীদের এখন রাস্তায় কাঁদতে দেখা যায়। এখন শুধু ফ্রি ভিসাধারীরা নয়, কাজের অভাবে নিরবে কাঁদে অনেকে।
সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত সহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানরতদের কাছ থেকে জানা যায়, ফ্রি ভিসা বলতে আসলে কোন ভিসা কিছু নেই। একজন মালিকের অধিনে থাকতে হয়, মালিককে টাকা দিয়ে ভিসা করতে হয় আর কাঙ্খিত দেশে যাবার পর আকামা নিজের খরচে বানাতে হয়। কারন ফ্রি মানে মুক্ত। মালিককে টাকা দিলে আকামা করে দেয় আর না দিলে দেয়না, ফলে কর্মীরা অবৈধ হয়ে পড়ে। লেবানন তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। তবে ব্যতিক্রম যেটি হচ্ছে আকামার খরচ অন্য দেশের তুলনায় লেবানন অর্ধেক বেশী লাগে।
২০০৯ সালের আগে ফ্রি ভিসার শ্রমিকরা অধীক বেতনে কাজ করতেন আর আকামা বানাতে ৯শ থেকে ১শ ডলার খরচ হত। লেবানিজদের একটি সরকারী বীমা রয়েছে যাকে দামান বলা হয়। যা বর্তমান সময়ে প্রতিমাসে একেকজনকে ৮৫ ডলার দিতে হয়। লেবানিজরা সরকারের কাছ থেকে এই টাকায় হাসপাতের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। ২০০৯ সালের আগে সেটি শুধু লেবানিজদের লাগত, কিন্ত হঠাৎ করে লেবানন সরকার আইনপাশ করেন এটি যারা আজনবি তাদেরকেও দিতে হবে, তবে কোন সুবিধা ভোগ করতে পারবে না, আর এটি পরিশোধ না করলে আকামা দেয়া হবে না।
১হাজার ডলারের আকামা চলে আসে ১৭শ ডলারে, যা বর্তমান সময়ে ২হাজার থেকে ২৪হাজার ডলারে দাড়িয়েছে। শুরুকালে লেবাননে বাংলাদেশি লেবানিজ দ্বারা পরিচালিত কন্সুলেট ছিল। তারা কিছুই করতে পারেনি, আবার অনেক সময় লেবাননে দায়িত্বে থাকা জর্ডানের রাষ্ট্রদূত আসলেও তার কাছে সাধারন প্রবাসীরা যেতেই পারতেন না। যারা লেবানন নেতা নামে পরিচিত তারা যেতে পারলেও এবিষয়ে আলোচনা হতনা। এই দমান যখন শুরু হয় তখন মিশরীরা তাদের সরকারের উদ্যোগে লেবানন সরকারের সাথে আলোচনা করে এটি বাতিল করে নেয়, এবং মিশরীদের আকামা ফিও বাংলাদেশীদের চেয়ে অনেক কম।
২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপিত হবার পর থেকে এ বিষয়ে লেবাননের বিভিন্ন দপ্তরে কথা বলেও কোন কাজ হয়নি। এরপর কয়েক দফায় বাংলাদেশ থেকে সরকারে এমপি মন্ত্রীগন এসেছেন, প্রবাসীদের সাথে মত বিনিময়কালে বিষয়টি বিশাল এটি ট্রপিক হয়ে উঠলেও কেউ আমলে নেননি। গত মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধি দল প্রবাসীদের সাথে মত বিনিময় করেন, সেখানেও বিষয়টি হালে পানি পায়নি।
প্রতিনিধি দল জানালেন, আকামা-দমান এসব টাকা মালিক বহন করবে, কিন্তু যারা বেশী ইনকামের আশায় ফ্রি হয়ে কাজ করছেন তাদেরটা নিজেদেরই বহন করতেই হবে, তাদের জন্য তো সরকারের নিয়ম বদল হবে না। প্রতিনিধি দল বলেছিলেন আপনারা বেশী টাকা ইনকামের জন্য ফ্রি হবেন, আকামা খরচ বেশীতো লাগবেই।
লেবাননের প্রবাসী কর্মীরা যা বেতন পান, তার অর্ধেকের বেশী খরচ হয়ে যায় আকামার জন্য, তারপর থাকা খাওয়া সহ অন্যান্য যাবতীয় খরচতো রয়েছেই। শুধু ফ্রি ভিসার কর্মীরাই নিজের খরচে আকামা বানান তা নয়, অনেকে কোম্পানী বা মালিকানায় কাজ করলেও নিজের টাকা দিয়ে আকামা বানান, অথবা মালিক খরচ বহন করলেও বেতন থেকে কেটে নেয়। কাজেই সমস্যাটি মুষ্ঠিগত।
প্রবাসীদের প্রশ্ন, যারা ফ্রি ভিসায় কাজ করেন, তারা কি বাংলাদেশে টাকা পাঠান না? তাদের টাকা কি সরকারের রেমিটেন্স আয়ের খাতায় যোগ হয় না? এখনতো আবার অনেকে বাধ্য হয়ে মালিকানা বা কোম্পানী ভিসায় এসেও ফ্রি হয়ে পড়েন। স্যালারী মালিকানা- ফ্রি সব সমান। কাজেই বাংলাদেশ সরকার যদি এই উদ্যোগ নেন, অন্তত দমানটা বাতিল করা যায়, তাহলে হাজার হাজার প্রবাসী অবৈধ হয়ে পড়বেনা।
মায়ের চিকিৎসার টাকা যোগাতে গাড়ি বিক্রি করলেন শাহাদাত
দিনে ঘুমিয়ে, রাত জাগছে টাইগাররা
কাঁচামালের দাম দ্বিগুণ, বাড়ছে সিমেন্টের দাম
চমেকে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
নারী ক্রিকেট দলের খন্ডকালীন কোচ নিয়োগ
রহিমার প্রেমের টানে কেশবপুরে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার
নাইজেরিয়ার স্কুলে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
বছরে ৩২ লাখ ফ্রিজ বিক্রি,দেশীয় ব্র্যান্ডের দাপট