প্রকাশিত: ০৯ জুন, ২০২৩ ১০:৩৯:৪৪ || পরিবর্তিত: ০৯ জুন, ২০২৩ ১০:৩৯:৪৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে বলা হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। তবে এটি প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে একটি ঐতিহাসিক পটভূমি। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘটনার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার বীজ বপন হয়েছিল । ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ব বাংলা ও আসামকে নিয়ে যে আলাদা রাজ্য গঠিত হয়েছিল, তা এ অঞ্চলের মুসলিমপ্রধান জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের আশা ও চাওয়া–পাওয়ারই বাস্তব প্রতিফলন।
এটা এই অঞ্চলের মুসলমানদের শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে এবং সর্বোপরি তাদের স্বাবলম্বিতা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ছিল। কিন্তু নানা বিরোধিতার মুখে ইংরেজ সরকার ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ ব্যবস্থাকে বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। সেই সময় কলকাতার তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ও হিন্দু নেতারা ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা রোধে স্মারকলিপি প্রদান করেই ক্ষান্ত থাকেননি, তাঁরা প্রতিবাদ সভা থেকে শুরু করে র্যালি পর্যন্ত আয়োজন করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে।
বঙ্গভঙ্গ রদের ঘটনায় পূর্ব বাংলার মুসলিম জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ ও আশাহত হন। ঢাকার তৎকালীন নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে একদল মুসলিম জনপ্রতিনিধি, যাকে বলা হয় বাংলার বাঘ’ এ কে ফজলুল হক ও সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী অন্যতম, বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান সর্বপ্রথম ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি।
ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের ঢাকা পরিদর্শনকালে এই দাবি তোলা হয়। সেই সময়ে পূর্ব বাংলায় ৯টি কলেজ থাকলেও উচ্চশিক্ষার জন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। পরে এই অঞ্চলের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবিকে সম্মান জানিয়ে লর্ড কার্জন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদনে সম্মতি দেন এবং তার ফলে একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় রাজ্য সরকার কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সপক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৪ এপ্রিল বাংলার রাজ্য সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়। এ লক্ষ্যে ২৭ মে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয় স্যার রবার্ট নাথানিয়েলের নেতৃত্বে, যা ‘নাথান কমিটি’ নামে পরিচিত। এ কমিটি দ্রুততার সঙ্গে রিপোর্ট প্রদান করে ১৯১২ সালের শেষ দিকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কনভোকেশন ১৯৩৬ স্যার যদুনাথ সরকার , শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় , স্যার জন এন্ডারসন , আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রয় , স্যার এ এফ রহমান। ১৯১৩ সালে নাথান কমিটি রিপোর্ট জনমতের জন্য প্রকাশিত হয় এবং একই বছরের ডিসেম্বরে তা অনুমোদন লাভ করে। এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প স্থগিত থাকে দীর্ঘদিন। ১৯১৭ সালের নভেম্বরে ইংরেজ সরকার ‘স্যাডলার কমিশন’ গঠন করে পূর্ববর্তী ‘নাথান কমিশনে’র রিপোর্টকে পর্যালোচনা করে ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোকে বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নতুন করে রিপোর্ট দিতে। এই ‘স্যাডলার কমিশন’ তাদের রিপোর্ট প্রদান করে ১৯১৯ সালের মার্চে।
১৯১৭ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতের আইন সভা Imperial Legislative Council-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও নিবন্ধনের জন্য আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি বিল উত্থাপন করেন। পরে এটি পাস হয় ১৯২০ ইং ২৩ মার্চ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯২০’ নামে, যার অধীনে পূর্ব বাংলার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১৯২১ সালের ১ জুলাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে যে ব্যক্তিটি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, তিনি আর কেউ নন ঢাকার চতুর্থ নবাব, ব্রিটিশ রাজত্বের সময়কার উপমহাদেশের অন্যতম রাজনীতিবিদ, পূর্ব বাংলার শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত স্যার খাজা সলিমুল্লাহ। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব স্যার সলিমুল্লাহ ঢাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি মূলত ১৯১১ সালের আগস্টেই কার্জন হলে এক রাজনৈতিক সমাবেশে উত্থাপন করেছিলেন। পরে তাঁর এই দাবি সর্বজনীন রূপ পায় ১৯১১ তে বঙ্গভঙ্গ বাতিলের পর। স্যার সলিমুল্লাহর দান করা ৬০০ একর জমিতেই ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
মাহির হাসান
প্রজন্মনিউজ২৪/জাহিদ
চমক দেখালো রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
নীতির প্রশ্নে আমাদের প্রধানমন্ত্রী পিতার মতোই আপসহীন: দীপু মনি
ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা তিন বিভাগে
একাদশে ভর্তির শেষ ধাপের ফল রাতে
তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ কোটি ডলার ঋণ এডিবির
ঢাকায় আজ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ
ইউজিসির গবেষণা অনুদান পেলেন ড. মাহবুবুর রহমান
দফায় দফায় ছাত্রলীগের সংঘর্ষ: দুই হলে তল্লাশি অভিযান
চবির আবাসিক হলে ঘন্টা ব্যাপি তল্লাশি অভিযান: দেশীয় অস্ত্রসহ আটক ৫