৮ কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতি করেছি: যুবলীগ নেতা

প্রকাশিত: ০৮ জুন, ২০২৩ ০৩:৫৭:৫৫ || পরিবর্তিত: ০৮ জুন, ২০২৩ ০৩:৫৭:৫৫

৮ কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতি করেছি: যুবলীগ নেতা

অনলাইন ডেস্ক: বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজার শহরের ৮টি ভোট কেন্দ্র দখল করে ‘ভোট ডাকাতি’ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন বলে দাবি করেছেন কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী। এমন বক্তব্য দেওয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব রহমানের সমর্থনে আয়োজিত এক সভায় যুবলীগ নেতা ইমরুল এমন মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে পুরো জেলায় তোলপাড় শুরু হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর পক্ষে শহরের তারাবনিয়ারছড়ায় এক সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরুল কায়েস।

সভায় কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জুয়েলকে উদ্দেশ করে ইমরুল কায়েস বলেন, বিগত সদর উপজেলা নির্বাচনে আমি কক্সবাজারে আটটি কেন্দ্র নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতি করেছি। আমি ভোট ডাকাতি না করলে তুমি জুয়েল আজ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পারতে না। আমার অবদান জানা না থাকলে তোমার বড় ভাই রাশেদ এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মার্শালের কাছে জেনে নিও।

তিনি আরও বলেন, আজ তোমরা সেই অবদান ভুলে গিয়েছো। জুয়েল তুমি বড় অকৃতজ্ঞ, অমানুষ। তোমারা নির্বাচিত হলে পৌরবাসীকেও ভুলে যাবেন। কারণ আপনারা যে শেখ হাসিনার নাম সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চলেন সেই জননেত্রী প্রধানমন্ত্রীকে আপনারা আজ ভুলে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ আপনাদের ডেকেছিলেন আপনারা যাননি। এ সময় হুমকি ধমকির পরিবর্তে পালটা জবাব রেড়ি আছে বলেও হুঁশিয়ার করে দেন ইমরুল।

প্রসঙ্গত, কায়সারুল হক জুয়েল বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি কক্সবাজার জেলা সবচেয়ে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ পরিবার হিসেবে পরিচিত ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা একেএম মোজ্জামেল হকের কনিষ্ঠ ছেলে। তার বড়ভাই সদস্য বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মাসেদুল হক রাশেদ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে কক্সবাজার পৌরসভায় নির্বাচন করছেন।

যদিও ইমরুল কায়েস নিজেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলসহ নানা অভিযোগ তুলেছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত পরাজিত প্রার্থী অধ্যক্ষ সাহা আলম।

এদিকে যুবলীগ নেতা ইমরুলের এ বক্তব্যের ফলে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কারণ কায়সারুল হক জুয়েল ২০১৯ সালে প্রথম ইভিএম পদ্ধতির ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রক্রিয়া দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।

ইমরুলের ভোট ডাকাতি করে জয় নিশ্চিত করার বিষয়ে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল ও পৌর বিদ্রোহী প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে রিং দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।

তবে যুবলীগ নেতা ইমরুলের বক্তব্যের দায় নেবে না জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মেয়র মজিবুর রহমান সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয় কারো উদ্ভট ও ব্যক্তিগত বক্তব্যের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না। বর্তমান সরকারের আমলে সবসময় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।

ভোট ডাকাতির বিষয়ে যুবলীগ নেতার বক্তব্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/একে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ