ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক পটভূমি।

প্রকাশিত: ০৭ জুন, ২০২৩ ১১:২২:৩৭

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক পটভূমি।

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে এক রক্তঝরা আন্দোলনের ইতিহাস। ব্রিটিশ আমলে বঙ্গে আরবি ইসলামি শিক্ষার উচ্চতর পঠন-পাঠনের জন্য ১৭৮০ সালে বিশিষ্ট ইসলামি শিক্ষানুরাগীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠিত হয় কলিকাতা আলিয়া মাদরাসা।

 ১৮৩৭ সালে সরকারি এক নির্দেশে আলিয়া মাদরাসায় বাধ্যতামূলক ইংরেজি শিক্ষার আশানুরূপ ফল না হওয়ায় ১৮৫৮ সালে কলিকাতা আলিয়া মাদরাসা বিলোপের সুপারিশ আসে। কিন্তু মুসলমানদের আন্দোলনের মুখে সে যাত্রা আলিয়া মাদরাসা নিশ্চিত বিলোপের হাত থেকে রেহাই পায়। এরপর থেকে এ উপমহাদেশে মুসলিম মনীষী ও শিক্ষাবিদগণ একটি স্বতন্ত্র ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন করতে থাকে।
১৯১৩ সালের মার্চ মাসে বগুড়া জেলার বানিয়া পাড়ায় মওলানা আকরম খাঁকে (১৮৬৮-১৯৬৮) সেক্রেটারি এবং মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীকে (১৮৭৫-১৯৫০) জয়েণ্ট সেক্রেটারি করে গঠিত আঞ্জুমানে ওলামায়ে বাঙ্গালা আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে। ১৯১২ সালে ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদসহ ঢাকায় একটি আবাসিক ‘মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠারও দাবি ওঠে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ একটি বিভাগসহ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে বহু কমিশন গঠিত হয় কিন্তু ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় ১৯৭৪ সালে মাওলানা ভাসানী সন্তোষে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেসরকারিভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৯৭৬ সালের ১ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব অনুধাবন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। ১৯৭৭ সালের ১ জানুয়ারী ড.এম এ বারীকে সভাপতি করে দ্যা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি স্কিম ’৭৭ গঠন করেন। যার সুপারিশের আলোকে ১৯৭৯ সালে ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ-এর মাঝামাঝি শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে ১৭৫ একর জমির উপর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়।

১৯৮২ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন লে. জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৩ সালের ১৮ জুলাইয়ের এক আদেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থানান্তর করেন। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ২৮ জুন ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদাধীন আল-কুরআন ওয়া উলুমুল কুরআন ও উলুমুল তাওহীদ ওয়াদ দাওয়াহ বিভাগ এবং মানবিক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদাধীন ব্যবস্থাপনা ও হিসাব বিজ্ঞান- এ চারটি বিভাগ আটজন শিক্ষক এবং তিন শ’ ছাত্র নিয়ে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯০ সালের ২ জানুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনরায় গাজীপুরের বোর্ড বাজার হতে কুষ্টিয়ায় স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়। ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ হতে প্রথমবারের মতো ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর গ্রোত্র/জাতি এবং ছাত্রী ভর্তির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ   স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সকল ধর্মের ও বর্ণের দেশী-বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকের সমন্বয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসা প্রশাসন, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান এবং মানবিক ও কলা অনুষদীয় বিষয়ের পাশাপাশি দেশে শুধুমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতেই ধর্মতত্ব ও ইসলামী আইনের উপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করা হয়। ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় করে দেশের উচ্চশিক্ষায় ভূমিকা রেখে উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলায় প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ৮টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ চালু আছে।


প্রজন্মনিউজ২৪এমএই

এ সম্পর্কিত খবর

হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিসকা’র অনুমতি দেয়নি ঢাবি প্রশাসন

গুচ্ছের হাবিপ্রবি কেন্দ্রে তিন ইউনিটে পরীক্ষার্থী ১২৩৪১ জন

বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিতে রাবিতে 'মলাট' চালু

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার নতুন পরিচালক কমান্ডার আরাফাত

বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম

আধুনিক ওয়ার্ড গঠনে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চান সোহেল

বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস আজ

রাবিতে বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে বইপাঠ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ