শাজাহানপুরে তীব্র গরমে বেড়েছে তালশাঁসের চাহিদা

প্রকাশিত: ০৫ জুন, ২০২৩ ০৭:২৪:৩৪

শাজাহানপুরে তীব্র গরমে বেড়েছে তালশাঁসের চাহিদা

শাজাহানপুর প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রচন্ড গরমে প্রাণ হাঁসফাঁস। বাজার ছেয়ে গেছে মৌসুমি বিভিন্ন ফলে। হাত বাড়ালেই আম, আনারস, তরমুজ, লিচু, বেলসহ নানা ফল মিলছে বাজারে। এ ছাড়া বারোমাসি ফলও মিলছে বাজারে। কিন্তু নিশ্চিন্তে কোনো ফল আর খাওয়ার জো নেই। ফরমালিনের বিষে হয়তো নীল হয়ে আছে প্রিয় ফলটি। তবে এসবের ভিড়ে ব্যতিক্রম তালশাঁস। এতে যে ফরমালিন মেশানো হয়নি, তা বলাই যায়! তাই তীব্র গরমে বগুড়ার শাজাহানপুরে চাহিদা বেড়েছে তালশাঁসের।

শাজাহানপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড, বাজার, রাস্তার মোড় সহ বিভিন্ন এলাকায় বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ তালশাঁস বিক্রি করা হচ্ছে। একটি, দুটি, এক হালি অথবা কেটে কোয়া হিসেবেও বিক্রি করা হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এ ফল। প্রচন্ড গরমে তালশাঁসের কদর বাড়ে। জ্যৈষ্ঠের ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে এ ফলটি। সহজলভ্য ও মুখরোচক হওয়ায় বিভিন্ন বয়সি, শ্রেণি-পেশার মানুষের পছন্দের ফল এটি।

উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে তালশাঁস বিক্রি করতে দেখা যায়। উপজেলার বনানী হাটে মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, 'তালের শাঁস মোটামুটি মাসখানেক পাওয়া যাবে। প্রতিটি তাল ২০ টাকা ও তালের কোয়া ১০ টাকা করে বিক্রি করছি।'

তালশাঁস বিক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, 'তালের সিজন শুরু হয়েছে। তাল আসছে। প্রতিটি তাল ২০ টাকা করে বিক্রি করছি।'

অপর তালশাঁস বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, বেশ কয়েকদিন হলে বিভিন্ন গ্রাম থেকে তাল কিনে এনে বিক্রি করতেছি। পর্যাপ্ত বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা সমাগমও হচ্ছে প্রচুর। প্রতিদিন তাল বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে ছয় থেকে ৭০০ টাকা আয় থাকে।

উপজেলার জামাদারপুকুর বাসস্ট্যান্ডে মোটরসাইকেল থামিয়ে তাল কিনছিলেন সোহাগ হোসেন। তিনি বলেন, 'তালের দাম এবার একটু বেশি। সব জিনিসের দামই তো বেশি। তারপরও খেতে হবে। আগে যে তাল ১০-১৫ টাকা ছিল, এখন তা ২০ থেকে ২৫ টাকা।

বনানী হাটে তাল কিনতে আসা মেডিকেল ছাত্র 
ফাহিম বলেন, 'তালের শাঁস পুষ্টিকণা সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, তাই পেটের জন্য খুবই উপকারী। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে তালের জুড়ি নেই। আমি পরিবারের সদস্যদের জন্য দুই তিন দিন পর পর তালশাঁস কিনে নিয়ে যায়।

চিকিৎসকদের মতে, তালশাঁসে থাকে আয়োডিন, মিনারেলস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক এবং ফসফরাস। এসব পুষ্টি উপাদান গরমে নানা উপায়ে শরীর ভালো রাখে। গরমে শরীরে পানির অভাব দেখা দেওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।খাবারের তালিকা থেকে অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার বাদ দেওয়ার পাশাপাশি খাওয়া যেতে পারে তালশাঁস। এটি লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে কাজ করে। গরমের সময় ত্বকে চুলকানি ও অ্যালার্জি সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে। তালশাঁস শরীরকে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে ভূমিকা রাখে। তবে তালশাঁস অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় তাল গাছের বাণিজ্যিক ভাবে কোন বাগান নেই। মানুষ সাধারণত বসত বাড়ী ও রাস্তার পাশে কিছু তাল রয়েছে। পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত প্রতিরোধের জন্য তালগাছের চারা রোপন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/একে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ