শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনায় অভিযুক্ত

প্রকাশিত: ২৯ মে, ২০২৩ ১২:৩৫:৫০

শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনায় অভিযুক্ত

রাবি প্রতিনিধি: নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত ও অসত্য দাবি করে এবার উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন পত্র দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অভিযুক্ত সেই অধ্যাপক ড. এনামুল হক। লিখিত আবেদনে নিজের নিরাপত্তহীনতার কথা উল্লেখ করে উপাচার্যের সুবিবেচনাপ্রসূত হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন তিনি।

গতকাল রোববার (২৮মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে এই লিখিত আবেদন জমা দেন তিনি।

লিখিত আবেদনে তিনি উল্লেখ করে বলেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ও বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপিকা প্রফেসর মাহমুদা কানিজ কেয়া আমার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। বিষয়টি অতিরঞ্জিত ও অসত্য। যদিও একাডেমিক কমিটির সভা শেষে অধ্যাপিকা প্রফেসর মাহমুদা কানিজ কেয়ার সাথে অপ্রীতিকর তর্ক হয়েছিল, যার সূত্রপাত করেছিলেন উনি নিজেই। তর্কের এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রনহীন, আবেগীয় অবস্থায় আমি একটি শ্রুতিকটু শব্দ উচ্চারণ করে ফেলি, যেটি কখনোই যৌন হয়রানিমূলক নয়। উক্ত ক্ষুদ্র ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগের সভাপতি ও ওই অধ্যাপিকা শুধু আমার বিরুদ্ধেই অবমাননাকর তৎপরতায় লিপ্ত নয়, বরং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আমি মনে করি উক্ত ছোট একটি অপ্রীতিকর ঘটনা বিভাগেই সমাধানযোগ্য।

নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভাগের সভাপতি ও ওই অধ্যাপিকার নানাবিধ তৎপরতা ও বিভাগে বহিরাগত ব্যক্তিদের আনাগোনার কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। ফলে বিভাগের পঠন-পাঠনের স্বার্থে সামগ্রিক বিষয়টিতে আপনার (উপাচার্যের) সুবিবেচনাপ্রসূত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। রাবির ভর্তি পরীক্ষার ফলে এ বিষয়ে এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৩ মে) ভুক্তভোগীসহ ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা নয়জন শিক্ষক উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দেন। কিন্তু এরপরদিনই বুধবার (২৪ মে) ওই অভিযোগ পত্র থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনজন শিক্ষক। নাম প্রত্যাহার করা ওই তিন শিক্ষকসহ মোট সাতজন শিক্ষক বুধবার (২৪ মে) অভিযোগ পত্রে উল্লেখিত অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বিভাগের পরিবেশ রক্ষার্থে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করে একটি আবেদন পত্র দেন। এরপর থেকেই বিভাগে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।

গত মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর দেওয়া ওই অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারী নয়জন শিক্ষক হলেন- মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া, একই বিভাগের অধ্যাপক নাজমা আফরোজ, অধ্যাপক আঞ্জুমান শিরি, অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক শিরি ফারহানা, সহযোগী অধ্যাপক মো. আশিক শাহরিয়ার, সহযোগী অধ্যাপক মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, সহকারী অধ্যাপক ফিউজি আক্তার এবং প্রভাষক সাদেকা বানু।

এরমধ্যে তিনজন স্বাক্ষর প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারা হলেন- অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক মো. আশিক শাহরিয়ার এবং সহযোগী অধ্যাপক মো: নূর-ই-আলম সিদ্দিকী।

অন্যদিকে বুধবার অভিযুক্তের পক্ষে আবেদন পত্র দেওয়া ওই সাতজন শিক্ষক হলেন- মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহরিয়া এনাম, অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক জেসান আরা, সহযোগী অধ্যাপক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, সহযোগী অধ্যাপক মো. আশিক শাহরিয়ার, সহযোগী অধ্যাপক তানজির আহমেদ তুষার এবং সহযোগী অধ্যাপক তরুন কুমার জোয়ার্দার।

গত শনিবার (২৭ মে) বিভাগের অচলাবস্থার নিরসন চেয়ে বিভাগের সভাপতি বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন বিভাগের ৯ জন শিক্ষক। এতে বুধবার অভিযুক্তের পক্ষে আবেদন পত্র দেওয়া সাত শিক্ষকসহ অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান ও অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব স্বাক্ষর করেছেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/এমএ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ