শিশুদের থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা

প্রকাশিত: ০৮ মে, ২০২৩ ০৬:৩৭:৫৫

শিশুদের থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা

থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ। জেনেটিক আকারে শিশুরা তাদের বাবা-মার কাছ থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগ পেয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, থ্যালাসেমিয়ার কারণে শরীরের হিমোগ্লোবিন তৈরির প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ না করায় শিশুদের শরীরে রক্তের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে ঘন ঘন রক্ত দিতে হয়।

থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ
থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে, গ্লোবিন প্রোটিন খুব কম উৎপাদিত হয়। যার কারণে লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে শরীর অক্সিজেন না পাওয়ায় রোগীকে বারবার রক্ত​দেওয়ার প্রয়োজন হয়।

এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্লান্তি, দুর্বলতা, পেট ফুলে যাওয়া (হালকা স্প্লেনোমেগালি), শিশুর দুর্বল শারীরিক বিকাশ, অ্যানোরেক্সিয়া, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া, মুখের হাড়ের পরিবর্তন।

থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের হিমোগ্লোবিনের ত্রুটি থাকে, যা একটি মিউটেশনের কারণে ঘটে ও বি-চেইন উৎপাদনকে হ্রাস করে গুরুতর রক্তাল্পতার কারণ হতে পারে। এটি একটি জেনেটিক রোগ, যা প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে চলে যায়।

যদি বাবা-মায়ের থ্যালাসেমিয়া রোগ থাকে, তবে শিশুর থ্যালাসেমিয়া মেজর হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ, থ্যালাসেমিয়া মাইনর ৫০ শতাংশ এবং স্বাভাবিক ২৫ শতাংশ।

থ্যালাসেমিয়া মেজর শিশুদের চিকিৎসা
চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্ত​সঞ্চালন (পিআরবিসি), আয়রন ক্যালেটিং ওষুধের ব্যবহারসহ কিছু শিশুদের নিয়মিত রক্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় এবং গুরুতর স্প্লেনোমেগালিতে হাইড্রোক্সিউরিয়া ব্যবহৃত হয়। তবে থ্যালাসেমিয়া মাইনরের কোনো চিকিত্‍সার প্রয়োজন হয় না।

থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের যত্ন
লিউকোসাইট হ্রাসকারী ফিল্টার এবং বিকিরণকারী রক্তের পণ্য (পিআরবিসি) সর্বদা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য ব্যবহার করা হয়। অল্প বয়সে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেতে পারে। এর থেকে পরিত্রাণে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার, শাকসবজিসহ প্রচুর ফল খেতে হবে। এছাড়া আয়রন ক্যালেশন ওষুধ নিয়মিত ব্যবহার, হালকা ব্যায়াম, ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।

লিভার, হার্ট এবং অন্যান্য অঙ্গে আয়রন ওভারলোড পরীক্ষা করার জন্য প্রতি বছর গ্রোথ হরমোন এবং টি২ এমআরআই পরীক্ষাসহ সিরাম ফেরিটিন, থাইরয়েড প্রোফাইল, ভিটামিন-ডি এবং ভাইরাল মার্কার, যেমন- এইচআইভি, এইচবিএসএজি, এইচসিভি প্রতি তিন মাস পর পর পরীক্ষা করতে হবে। অবস্থা গুরুতর না হলে পুষ্টিকর খাবার এবং ব্যায়াম রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত লোহিত রক্ত কণিকার বয়স ১২০ দিন হয়, কিন্তু এ রোগের কারণে সময়টি ২০ দিনে কমে যায়, যা হিমোগ্লোবিনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার কারণে রোগী কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত হয়।


প্রজন্মনিউজ২৪/একে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ