সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০২:৩৫:১৯ || পরিবর্তিত: ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০২:৩৫:১৯

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন

অনলাইন ডেস্ক: সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন করা হয়েছে।

চাঁদ দেখা যাওয়ায় শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সৌদি আরবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় একই দিন ঈদের নামাজ আদায় করছেন মুসলমানদের একাংশ।

শেরপুর

শেরপুরের ৯টি গ্রামে পালিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে পৃথক স্থানে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এসব জামায়াতে পুরুষদের পাশাপাশি নারী মুসল্লিরাও ঈদের নামাজ আদায় করেন।

শেরপুর সদরের উত্তর ও দক্ষিণ চরখারচর, মুন্সীরচর, বামনারচর, ঝিনাইগাতী উপজেলার বনগাঁও চতল, নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী মধ্যপাড়া ও চিনামারা, নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দীসহ ৯টি স্থানে পৃথকভাবে ঈদুল ফিতরের এসব জামাত হয়েছে।

দিনাজপুর

দিনাজপুর সদর উপজেলাসহ সাতটি উপজেলায় ঈদুল ফিতরের আগাম নামাজ আদায় করেছেন মুসলমানদের একাংশ।

দিনাজপুর পৌর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টার, চিরিরবন্দর উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায় কয়েকটি গ্রাম, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ও ১৩ মাইল গড়েয়া এলাকা, বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা বাজার জামে মসজিদ, জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর জামে মসজিদ এবং বিরল উপজেলার বালান্দোর ও ভারাডাঙ্গী গ্রাম, বোচাগঞ্জ উপজেলার তেতরা গ্রামে, ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় আগাম ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়।

সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে দিনাজপুর পৌর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজে লালমনিরহাট, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েকজন মুসল্লিও অংশ নেন। এ জামাতে পুরুষ, নারী ও শিশুসহ তিন শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন।

জামাতে ইমামতি করেন ফ্যামিলি কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রতিষ্ঠা পরিচালক ও নবাবগঞ্জ উপজেলার মোহাজেরপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক মাওলানা মো. রাজ্জাক।

জামালপুর

প্রতিবারের মতো জামালপুরের সরিষাবাড়ীতেও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন ১৪ গ্রামের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ। সকাল সাড়ে ৮টায় সরিষাবাড়ী পৌরসভার বলারদিয়ার মধ্যপাড়া মাস্টারবাড়ি রাস্তা সংলগ্ন জামে মসজিদ মাঠে এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন বলারদিয়ার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিম উদ্দিন মাস্টার।

লক্ষ্মীপুর

একদিন আগেই ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামের মানুষ। সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব নোয়াগাঁও তালিমুল কোরআন নূরানী মাদরাসা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া এ উপজেলার চারটি ও রায়পুর উপজেলার একটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাওলানা ইসহাকের (রা.) অনুসারী হিসেবে ৪৬ বছর ধরে এ নিয়ম পালন করে আসছেন তারা। জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, বারোঘরিয়া, হোটাটিয়া, শরশৈই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপাসহ ১১টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করে আসছেন। তারা পৃথকভাবে স্ব স্ব এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজের আদায় করেছেন। রামগঞ্জ পৌরসভার জাহাঙ্গীর টাওয়ার, উপজেলার পূর্ব বিঘা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, পশ্চিম নোয়াগাঁও জামে মসজিদে ও রায়পুরের কলাকোপা গ্রামে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চাঁদপুর

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। মাওলানা ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

সকাল ৯টায় সাদ্রা দরবার শরীফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাতের ইমামতি করেন দরবারের পীর কিবলা অধ্যক্ষ আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী মু. জি. আ.।

সাদরা দরবার শরীফের পীরজাদা ড. বাকি বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী জানান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ নিশ্চিত হওয়ায় ঐতিহাসিক সাদরা দরবার শরীফের সব অনুসারীরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে৷

সাতক্ষীরা

সকাল সাড়ে ৭টায় সাতক্ষীরার ঘোনা ইউনিয়নের ভাড়ুখালি এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন। এতে ইমামতি ও খুতবা পাঠ করেন হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান। এছাড়া সদর উপজেলাসহ সবগুলো উপজেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছেন।

নোয়াখালী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার চার গ্রামে পুলিশ পাহারায় আগাম ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দুই উপজেলার ৯ টি মসজিদে একযোগে ঈদের জামাতে হয়।

গ্রামগুলো হলো- নোয়াখালী পৌরসভা লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিণারায়নপুর এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর।

মসজিদ গুলো হলো- বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বসন্ত বাগ গ্রামের সিনিয়র মাদ্রাসা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ পোদ্দার বাড়ি জামে মসজিদ, বসন্তবাগ গ্রামের নগর বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, পশ্চিম বসন্তবাগ গ্রামের মুন্সি বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, ফাজিলপুর গ্রামের দায়রা বাড়ির জামে মসজিদ, বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের জামে মসজিদ ও নোয়াখালী পৌরসভা লক্ষীনারায়নপুর গ্রামের দায়রা বাড়ি কাছারীঘর, হরিণারায়নপুর রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফ।

স্থানীয় অনুসারীরা জানান, তারা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মির্জাখিল দরবার শরীফ (চাঁদ টুপি) পীর সাহেবের অনুসারী হয়ে ২০০ বছর ধরে আগাম ঈদ পালন করে আসছেন।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সাত গ্রামের মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। সকাল সোয়া ৯টায় উপজেলার মুন্সিপাড়ায় জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল মাজেদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি চর, তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি মুন্সিপাড়া জামে মসজিদ, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের পানি খাওয়ার ঘাট ও একই ইউনিয়নের বোতলা এলাকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন

মাদারীপুর

মাদারীপুরের ৪০ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ আগাম ঈদ উদযাপন করছেন। হযরত সুরেশ্বরী (রা.) এর ভক্ত অনুসারীরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

সকারে মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের তাল্লুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঈদের প্রধান জামাত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা, জাজিরা, মহিষেরচর, জাফরাবাদ, চরকালিকাপুর, তাল্লুক, বাহেরচর কাতলা, চর গোবিন্দপুর, আউলিয়াপুর, ছিলারচর, মস্তফাপুর, কালকিনির সাহেবরামপুর, আন্ডারচর, আলীনগর, বাঁশগাড়ী, খাসেরহাট, ক্রোকিরচর, সিডিখান, কয়ারিয়া, রমজানপুর, বাটামারা, রাজারচর, শিবচরের পাচ্চর, স্বর্ণকারপট্রিসহ মাদারীপুর জেলার পাঁচ উপজেলার ৩০ হাজার মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন

ভোলা

ভোলার সাত উপজেলার ১০ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামের আমিন মিয়া চৌকিদার বাড়ির দরজা জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত হয়। পর্যায়ক্রমে সাত উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে নামাজ নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঈদ উদযাপন

শরীয়তপুর

শরীয়তপুরে ৫০ গ্রামের মুসল্লিরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। শুরেশ্বর পীরের ঈদগাহ মাঠে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের প্রধান জামাত হয়। নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সুরেশ্বর দরবার শরিফ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে। তাদের সঙ্গে মিল রেখে শরীয়তপুরের শাহ সুরেশ্বরীর (রা.) অনুসারীরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন আজ।

প্রাচীনকাল থেকেই একদিন আগে চাঁদ দেখার দিন সুরেশ্বর পীরের সব ভক্ত ও তাদের মুরিদানেরা এই নিয়মে ঈদ উৎসব পালন করে আসছেন।

ফরিদপুর

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১২ গ্রামে আগাম ঈদ উদযাপন হচ্ছে। সকালে সহস্রাইল দায়রা শরিফ, রাখালতলি ও মাইটকুমরা জামে মসজিদে ঈদের জামাত হয়।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের সহস্রাইল, দড়ি সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, বারাংকুলা, বড়গাঁ, মাইটকুমড়া, গঙ্গানন্দপুর, রাখালতলী, কাটাগড়, কলিমাঝি, বন্ডপাশা ও জয়দেবপুর, দিঘীরপাড় গ্রামের মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন।

শেখর ইউনিয়নের রাখালতলী পুরাতন মসজিদের ইমাম জয়নাল ফকির ঈদের জামাতের ইমামতি করেন। তিনি বলেন, গ্রামের প্রায় পৌনে দুইশ পরিবারের মধ্যে প্রায় শতাধিক পরিবারের মানুষ আগাম ঈদের নামাজ আদায় করেন এবং ঈদ উদযাপন করছেন।

পিরোজপুর

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, নাজিরপুর ও কাউখালী উপজেলার ১০ গ্রামে সহস্রাধিক পরিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। এর মধ্যে মঠাবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়ার ছয় শতাধিক, কাউখালী উপজেলার বেতকা, শিয়ালকাঠি ও পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের ৭৫-৮০ পরিবার, নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৫০ পরিবার, জেলার সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের কদমতলা ও একপাই জুজখোলা গ্রামের ৬০ পরিবার ঈদ পালন করছেন।

গাইবান্ধা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে। সৌদির সঙ্গে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর তারা এ ঈদ উদযাপন করছেন।

সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা গ্রামের মধ্যপাড়ার নতুন জামে মসজিদের ভেতরে ঈদের জামাত হয়।

জানা যায়, সকাল থেকেই মোটরসাইকেল, ভ্যান যোগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জমঈয়তে আহলে হাদিস (সহিহ হাদিস) অনুসারী লোকজন মসজিদ চত্বরে আসেন। পরে মাওলানা আব্দুল মালেকের ইমামতিতে মুসল্লিরা পবিত্র ঈদুফিতরের নামাজ আদায় করেন।

এতে তালুক ঘোড়াবান্ধা, দুর্গাপুর, তিনগাছতল, হরিনসিংহাসহ কয়েকটি গ্রামের ৫০ মুসল্লি অংশ নেন। নামাজ শেষে মুসুল্লিরা যথা নিয়মে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/জেড আই

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ