চকবাজারের ইফতার ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ, ২০২৩ ০৪:১৭:০৬ || পরিবর্তিত: ২৩ মার্চ, ২০২৩ ০৪:১৭:০৬

চকবাজারের ইফতার ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত

ধর্ম ডেক্স: রাত পোহালেই পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম দিন।রমজানকে ঘিরে ইফতারি নিয়ে থাকে আলাদা প্রস্তুতি। দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার পুরান ঢাকার চকবাজারে প্রস্তুত ইফতার ব্যবসায়ীরা। চকবাজার শাহী জামে মসজিদের সামনে চক সার্কুলার রোডে প্রায় শত বছর আগে থেকে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে ইফতার বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। এর জন্য নেন নানা প্রস্ততি। বছরের সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা করা এসব ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে ব্যস্ত সময় কাটান এ সময়ে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে পুরান ঢাকার চকবাজারে ইফতার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সেহেরি খাওয়ার মধ্য দিয়েই এ বছর রোজা রাখা শুরু করবে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে নানা ধরনের খাবারের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতিও নগরবাসীর আগ্রহ থাকে। পুরান ঢাকার চকবাজারে বাহারি ইফতারের আলাদা একটি আগ্রহ থাকে রোজাদারদের। আর এসব ইফতার বিক্রির জন্য নানা ধরনের প্রস্তুতি নেয় সেখানকার ইফতার বিক্রেতারা।

সুতি কাবাব, জালি কাবাব, মুঠি জালি কাবার, নারগিস চাপ, টিকা কাবাব, শাহি জিলাপি ও বোম্বে জিলাপি, ডিম চপ, রোস্ট, দই, বড়া, হালিম, নুরানি লাচ্ছি, পনির, পেস্তা বাদামের শরবত, লাবাং, পরোটা, ছোলা, পিঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ফালুদাসহ নানা ধরনের ইফতারের পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা

চকবাজার শাহী জামে মসজিদের সামনে চক সার্কুলার রোডে অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসেন নিয়াজ মোহাম্মদ আলিম। ৪৫ বছর ধরে ইফতার বিক্রি করা আলিম বলেন, শাহী জিলাপি তৈরি করে ইফতারে বিক্রি করি। চারজন কর্মচারী দুপুরের পর থেকেই দোকান নিয়ে বসেন। আগে ইফতারে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। বছরের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় রমজান মাসে। এবারও বসবে। তার জন্য যা দরকার তার সব কেনা হয়েছে। জিলাপির পাশাপাশি সিঙ্গারা, সমচাও বিক্রি করি। এর জন্য যেসব জিনিস দরকার তা আজই কিনে ফেলবো।

জিলাপি বিক্রেতা আবেদ। বাহারি ধরনের জিলাপি তৈরি করেন তিনি। রোজা আসলেই কেউ এক কেজি ওজনের, কেউ বিভিন্ন ধরনের জিলাপি ওর্ডার করেন। এছাড়া রোজার শুরুর দিন থেকেই চকবাজারের শাহী জামে মসজিদের সামনে চক সার্কুলার রোডে বসান অস্থায়ী দোকান। প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার ইফতার বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসা মো. পাপ্পু নামের এক ব্যক্তি জাগো নিউজকে বলেন, ২৭ বছর ধরে আমি একটি দোকানে কাজ করি। ইফতারের সময় আসলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজের চাপ বাড়ে। এ সময়েই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।

সারাদিন রোজা রাখার পর তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই খোঁজেন পছন্দের জুস। তাই ইফতার কেনার পাশাপাশি পছন্দের জুস কিনে নিয়ে যান অনেকে। জুস বিক্রেতাদেরও তাই বাড়তি প্রস্তুতি। চকবাজারে নানা চকবাজারে নানা ধরনের জুস বিক্রি করেন মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের জুস বিক্রি করি। পেঁপে, ভাঙ্গি আনারসসহ আরও কয়েক ধরনের জুস থাকবে এবার। কিছু ফল কিনেছি। আজ রাতে আরও দুইটা ফল নিয়ে আসবো। আমাদের দুটি দোকান বসবে। এরই মধ্যে ইফতারের সময়ে বেচাকেনার জন্য দুইজন নতুন কর্মচারীও নিয়েছি।

শুধু অস্থায়ী দোকানীরাই নয়, চকবাজারে রয়েছে বেকারিসহ অন্যান্য দোকানও। ডিসেন্ট শপের ম্যানেজার সাদ্দাম আহমেদ বলেন, আমাদের হালিমসহ বিভিন্ন ধরনের আইটেম থাকে ইফতারের জন্য। আগামীকাল দোকানের সামনে এসব ইফতার আইটেমের পসারা সাজিয়ে বসানো হয়। পুরো রমজানে এ ব্যবস্থা থাকবে। এসময়ে বেশ ভালো বেচাকেনা হয়।

চকবাজারের ফলের দোকানি মো. আবু বকর জাগো নিউজকে বলেন, ইফতারে ফল বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছি, কিন্তু সেটা আগের বছরের তুলনায় কম। সব ফলের দাম বেড়েছে। কেমন বেচাকেনা হয় তাই এবার দেখার বিষয়।


প্রজন্মনিউজ২৪/জেড আই

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ