উপহারের ঘর বদলে দিয়েছে তাদের জীবন

প্রকাশিত: ২১ মার্চ, ২০২৩ ০৪:০৮:১৫

উপহারের ঘর বদলে দিয়েছে তাদের জীবন

সাবিক ওমর বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুরের প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর বদলে দিয়েছে ১৭৭ জন ভূমিহীনদের জীবনের গল্প। এই ঘর অনেকের জীবন পরিবর্তনের প্রধান অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করছে। মাথা গোজার নিজস্ব-ঠিকানায় অনেকেই অনেক কিছু করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বদলে ফেলেছেন দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।

সরোজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চোপীনগর ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দেওয়া উপহারের ঘরে পেয়ে বসবাস শুরু করেছেন খায়রুল ও মনোয়ারা দম্পতি । এই প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে তারা উপহারের ঘর পেয়েছেন।

আট মাস আগেও খায়রুল ও মনোয়ারা দম্পতির মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। জমিও ছিল না তাদের। অন্যের বাড়িতে এক ঘরে থাকতেন পরিবারের চারজন। একদিন নিজের বাড়ি হবে-এমন স্বপ্ন দেখতেও ভয় পেতেন! অথচ আজ তারা সুখের সংসার গড়েছেন নিজ ঘরেই। শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে তাদের জীবন। তারা এখন স্বপ্ন দেখেন জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার।

খায়রুল  সংবাদ বুলেটিনকে বলেন, কৃষিশ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান তিনি। আগে কামারপাড়া গ্রামে তার মামার বাড়িতে বসবাস করতেন। সেখানে এক ঘরে থাকতেন তারা। অনেক কষ্ট হত। এখন নিজের ঠিকানা পেয়ে অনেক খুশি তারা।

সেখানকার আরেক বাসিন্দা সালমা বেগম। স্বামী রেজাউল করিমকে নিয়ে উপজেলার মাঝিড়া এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। রেজাউল পেশায় দিনমজুর। তার একার রোজগার দিয়ে সংসার চলতো না। অভাব মেটাতে সালমাও গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে সন্তান আছে। উপহারের ঘরে উঠার পর রেশমী আক্তার মেঘলা নামে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন সালমা। মাস সাতেক আগে তার বিয়ে হয়। এখন মুন্নিফা নামে তিন বছরের এক মেয়ে রয়েছে তার।

সালমা বলেন, নিজের একটা বাড়ি হওয়ার পর অন্যের বাড়িতে গিয়ে কাজ করা ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি ঘর সামলান। তার স্বামী বাইরে কাজ করেন। একজনের আয় দিয়েই এখন তার সংসার চলছে। নিজের একটা বাড়ি হবে এটা তার স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার।

স্বামীকে নিয়ে উপজেলার শাহনগর এলাকায় ভাড়াবাড়িত থাকতেন জুলেখা খাতুন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে এখন নিজ ঘরেই বসবাস করছেন। সংসারেও তার আর অভাব নেই। স্বামী মামুনুর রশিদ ও তিনি সুপারি কেটে দেওয়ার কাজ করেন। দুইজনের আয়ে সুখের সংসার তাদের। অথচ যখন তাদের জমি ও বাড়ি ছিল না, তখন অনাহার-অর্ধাহারে কেটেছে তার দিন।

জুলেখা বলেন, আগে গৃহকর্মী ছিলেন। ঘর পাওয়ার পর থেকে বাজারের দোকানগুলোর সুপারি কেটে দেওয়ার কাজ করছেন। সুখেই কাটছে তাদের দিন। দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে আছে। তাদের মধ্যে একজনের বিয়ে দিয়েছেন।

এ উপজেলায় শুধু এ তিন পরিবারই নয়, তারাসহ ৯৫ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের স্বপ্নের রঙে গড়া পাকা নীড়ে বসবাস করছেন। নতুন করে আরও ৭৭ পরিবার উপহারের ঘর পেতে যাচ্ছে। এরমাধ্যমে এ উপজেলা ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত হবে। ফলে সুবিধাভোগীদের জীবন চিত্রে পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে। ঘর পাওয়ার আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন তারাও। এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট ১৭২টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ে ৭৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সব মিলে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদা খানম বলেন, আগামী বুধবার (২২ মার্চ) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত পাকা ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে শাজাহানপুর উপজেলাসহ সাত জেলার ১৫৯টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হবে।


প্রজন্মনিউজ২৪/খতিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ