আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের টাকার উৎস জানেনা এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ, ২০২৩ ১০:৫৩:২৬

আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের টাকার উৎস জানেনা এলাকাবাসী

কোটালীপাড়া  প্রতিনিধি: দেশব্যাপী আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের টাকার উৎস জানেনা এলাকাবাসী। তবে তিনি মাঝে মাঝে এলাকায় এসে দান করতেন বলেও তারা জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর কাছে আরাফ খান একজন রহস্যময় যুবক হিসেবে পরিচিত। দুবাইয়ে তার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের পরে তাকে নিয়ে এলাকায় আলোচনার ঝড় ওঠে। 

বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ের হিন্দ প্লাজায় আরাভ জুয়েলারি নামে আরাভ খানের স্বর্ণের দোকানটির উদ্বোধন করেন। 

দোকানটির মালিক গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামের আরাভ খান বলে জানাগেছে। তবে তার প্রকৃত নাম সোহাগ মোল্লা বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। 

সোহাগ মোল্লা আশুতিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে। মতিয়ার রহমান মোল্লা এক সময় বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাড়ি পাতিল বিক্রি করতেন। এখানেই ১৯৮৮ সালে সোহাগ মোল্লার জন্ম হয়। ২০০৫ সালে চিতলমারি সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে সোহাগ মোল্লা এসএসসি পাশ করে। দারিদ্রতার কারণে এরপরে আর তার লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারি থেকে ২০০৮সালে ভাগ্যের অন্বেষণে সে ঢাকা চলে যায়। ঢাকা গিয়ে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় মোল্লা আপন। জড়িয়ে পরে অপরাধ জগতে। ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের কারণে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজন খানেক মামলা হয়। এরপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খান ভারতে কোলকাতায় পালিয়ে যায়। সেখান থেকে আরাভ খান চলে যায় দুবাইয়ে। 

এদিকে আরাভ খানের দুবাইয়ে এই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের খবর জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনায় ঝড় ওঠে। সকলের মুখে মুখে একই প্রশ্ন সোহাগ মোল্লা কিভাবে রাতারাতি এতো টাকার মালিক বনে গেলেন। তবে এলাকার কোন ব্যক্তিই তার টাকার উৎস বলতে পারেনি। 

সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সাথে। তিনিও সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান অল্প দিনে এতো টাকার মালিক হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। গত কয়েকদিন আগে সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান তার দুই বোন ও মা বাবাকে দুবাই নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তার চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লা। 

হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান একই ব্যক্তি। আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গত পাঁচ সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসেনা। হঠাৎ করে সে কিভাবে এতো টাকার মালিক হলো এটা আমাদের বোধগম্য নহে। 

কোটালীপাড়া থানার ওসি মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমায় থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার জন্য চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু তার কোন হদিস আমরা পাইনি। 

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ১২ টায় আরাভ খান তার ফেসবুক থেকে লাইভে এসে দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থ রাখে তাহলে আমি শীঘ্রই দেশে গিয়ে দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৪টি মসজিদ নির্মাণ করবো। 

এছাড়াও তিনি তার এই ফেসবুক লাইভে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/হাসবি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ