পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৩:৩২:০৮

পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া

এসডি দোহা,পাটগ্রাম প্রতিনিধি: যথাসময়ে যথোপযুক্ত পরিবেশে দক্ষ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে যথাযথভাবে আন্তরিক চিকিৎসা সেবা ও রোগীদের আস্থার প্রতীক এখন পাটগ্রাম হাসপাতাল।

হাসপাতাল হচ্ছে চিকিৎসা সেবা প্রদানের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তাই মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে চিকিৎসাকেন্দ্র বা হাসপাতালের আদর্শ ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই। গুণগত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যেমনি প্রয়োজন যথাসময়ে ন্যায়সঙ্গত ও সুসংহত দক্ষ সেবা ঠিক তেমনি দরকার নিরাপদ, কার্যকরী ও গণমুখী হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা।

দীর্ঘদিন পরে হলেও এই কাজটি করে দেখিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইফুল ইসলাম। তার সুদক্ষ কর্ম পরিকল্পনায় এবার পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। উন্নয়নে বাংলাদেশ যেমন বিশ্বের মানুষের কাছে একটি রোল মডেল হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। তেমনি পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন ক্ষেত্রের পাশাপাশি পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি রোগীর বিছানার পাশে অক্সিজেন লাইন চালু হয়েছে। পুরাতন ভবনের মেঝেতে টাইলস্ স্থাপন করে দেয়ালের পুরাতন প্লাস্টার চটিয়ে নতুন করে প্লাস্টার করা হয়েছে। টয়লেট গুলোতে টাইলস্ ও কমোড ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। ওয়েটিং রুমের ব্যবস্থা ও ব্রেস্ট ফিডিং এর সুব্যবস্থা। বিষ খাওয়া রোগীদের ভালোমতো ওয়াশের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা। সেইসাথে রংতুলির আলপনায় পুরো ভবনটিকে আধুনিক মানের করে গড়ে তোলা হয়েছে।

সেবা গ্রহণকারী শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পকেট এলাকার ডাইরীয়া রোগী মফুজন নেছা ও তার সাথে আসা আবু রায়হান এবং কালীরহাট, টেপুরগাড়ী গ্রামের অস্ত্রোপচারের রোগী মজিদা আক্তার বলেন, কয়েক দিন থেকেই এ হাসপাতালে ভর্তি আছি, খুব ভালো মানের সেবা পেয়েছি। সেবার মানে সন্তোষ প্রকাশ করে তারা বলেন,‘সার্বক্ষণিক ডাক্তার ও নার্সের সেবায় আমরা দ্রুত সেরে উঠেছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,‘আমি ২০২১ সনের ২ মে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করি। সেসময় ডাক্তার ও নার্সের স্বল্পতার কারনে রোগীর সেবা দেওয়া ছিলো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তারমধ্যে কোভিটের দিশাহারা অবস্থা। তবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ মনোবল ও ইচ্ছে শক্তির কারনে আজ আমরা সেই কোভিট-১৯ এর ভয়াবহ অবস্থা থেকে কেটে উঠতে সক্ষম হয়েছি। নানা প্রতিকুলতার মাঝে উপজেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন স্যার ও এমপি মহোদয়ের সার্বিক সহযোগিতায় সারা দেশের ন্যায় এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নয়ন কর্মকান্ডের কার্যক্রম শুরু করেছি। উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে সফলভাবে একটি গ্যারেজ ও বজ্র ব্যবস্থাপনা পিঠ নির্মাণ করি।

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, এসময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে নরমাল ডেলিভারি বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে দর্শনার্থীর চাপ বেড়ে যায়। এতে সেন্টাল অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে তা চালু করতে সক্ষম হই। এরপর ব্লাড ট্রানসমিশন চালু ও অ্যানিথেশিয়া ডাক্তার এনে সপ্তাহে দুই দিন সিজারিয়ানের কার্যক্রম চালু করি। সিজার চালু হওয়ায় অন্তঃ ও বহিঃ বিভাগে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার দিয়ে তার মোকাবেলা করি। একই সাথে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে অরক্ষিত হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ডাক্তার-নার্স সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হই।

তিনি আরও বলেন,ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, জিন এক্সপার্ট মেশিন স্থাপন করে সেবার মান বৃদ্ধি করি। পুরাতন ভবনের মেঝেতে স্টাইল, দেয়ালের প্লাস্টার উঠিয়ে নতুন করে প্লাস্টার করে তাতে রংয়ের ব্যবস্থা করি। মহিলা ডাক্তার, নার্স ও দর্শনার্থীদের জন্য নারী-পুরুষ আলাদা স্থানে অপেক্ষমানের ব্যবস্থা তৈরি করে দেই। একই সাথে সেবার মান ধরে রাখতে মনিটরিং জোরদার ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পুরো হাসপাতালের মেইন গেট সহ প্রাচীর নির্মাণসহ পুরো হাসপাতালেকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসি। পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় হাসপাতালে রোগী পাঠানোর জন্য পূর্বের একটি বাদে নতুন করে আর একটি অ্যাম্বুলেন্স আনতে সক্ষম হই। একই সাথে গাড়ীগুলো নিরাপদে রাখার জন্য স্থায়ী গ্যারেজ নির্মাণের ব্যবস্থা করি। করোনা মহামারি মোকাবেলায় স্পেশাল বিসিএসের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের ফলে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও নার্সের স্বল্পতা কেটে যায়।


প্রজন্মনিউজ২৪/উমায়ের

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ