শুধুমাত্র জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৫:৫১:৫৪

শুধুমাত্র জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল: শিক্ষামন্ত্রী

রাবি প্রতিনিধিঃ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শুধুমাত্র জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা এই যুগে অচল। যুগের সাথে চলতে হলে, দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। আমরা এমন একটি শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কাজ করছি, যেখানে একজন শিক্ষার্থী হবে সৃজনশীল, যোগাযোগে দক্ষ, প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ, সহমর্মিতাশীল, মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, সহিষ্ণু ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় বিশ্বাসী। আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই, কিন্তু বর্তমান জনশক্তি দিয়ে সেটা সম্ভব নয়।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি)  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে কৃতি শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্য বইয়ে ভুল নিয়ে গুজব রটানো হচ্ছে। তবে বইয়ে কিছুটা ভুল আছে। সেটা সংশোধনে কাজ করছি। আমরা যখনই ভুলগুলো সম্পর্কে অবগত হচ্ছি, তখনই সেটা সংশোধনে কাজ করছি। তবে যা বইয়ে নেই, সেটা নিয়েও বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান করছি সবাইকে।

শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচকদের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উন্নত শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় ষোলআনা এগিয়ে গেছি। কিন্তু সমালোচকেরা সেটা বাদ দিয়ে ছোট ছোট ভুলগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমাদের পঠনপাঠন ও মূল্যায়ণ পদ্ধতিতে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নিয়ে তাদের কোন কথা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভোগান্তি কমানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভর্তি ক্ষেত্রে অযথা ভোগান্তি দূর করতে গুচ্ছ পদ্ধতির কথা চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এটাতে যুক্ত হয়নি। নতুন পদ্ধতি চালু হলে শুরুতে কিছু ত্রুটি থাকে। তবে ধাপে ধাপে সেটা সমাধানযোগ্য। শুধু এটাই নয়। আমরা একমুখি শিক্ষাপদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছি। যেটা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হত্যার পর সেটা বহুমুখি রূপ নেয়। ফলে সবক্ষেত্রে আমরা সেটার ভালো সুফল পাচ্ছি না।

ভর্তি পরীক্ষা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, বিশ্বে প্রায় দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ভাষা জ্ঞান, ভনিতার জ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান যাচাই করেই মূল্যায়ণ করা হয়। ফলে একটি মাত্র পরীক্ষা দিয়ে সকল শিক্ষার্থীই তাদের যোগ্যতা অনুসারে ভর্তির সুযোগ পায়। তাই আমাদের দেশেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এখান থেকে ধাপে ধাপে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে। তাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কেও গুচ্ছ পদ্ধতির আওতায় আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশায় আসেন। তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মতো উচ্চশিক্ষা পর্যায়েও খুব শীঘ্রই ইউজিসির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছি। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি বিষয়ে পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর সেটা প্রাসঙ্গিক নাও থাকতে পারে৷ কেননা প্রতিনিয়ত বিশ্ব বদলাচ্ছে। কিন্তু সেই অবস্থায় তারা নিজের অবস্থানে থেকে যাতে নিজেকে দক্ষ ও সময়োপযোগী করতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। সেই লক্ষ্যে আমরা একটি মাস্টার্সপ্লান তৈরী করেছি। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করছি। এমনকি প্রয়োজন অনুসারে ছোট ছোট কোর্স করে শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষতার বৃদ্ধি করতে পারে সেই জন্য কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. মুরশেদুল কবীর।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনিস্টিউটের ১০৩ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের ৯৬ জন পাচ্ছেন 'বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক', দর্শন বিভাগের ৫ জন ‘ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ স্বর্ণপদক’ এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের ২ জন পাচ্ছেন ‘ডা. এ কে খান স্বর্ণপদক'।


প্রজন্মনিউজ২৪/খতিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ