মোবাইল ফোন উদ্বারের নামে পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ১০:৫২:২৩

মোবাইল ফোন উদ্বারের নামে পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে এক পুলিশ কর্মকর্তা হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য সেবা গ্ৰহিতার নিকট প্রকাশ্যে ঘুষ দাবি করার ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। 

ওই  ভিডিওতে দেখা যায়, নোয়াখালী কবিরহাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাসরিন আক্তার প্রকাশ্যে ঘুষ দাবি করছেন। শনিবার(২৮ জানুয়ারী) ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় এনায়েত নামের এক ব্যক্তির একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে তিনি জিডি করেন। জিডি করার একমাস দুই দিন পর তিনি কবিরহাট থানায় গিয়ে তার মোবাইলের খোঁজ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে, এএসআই নাসরিন আক্তার সেবা গ্রহিতা কে বলেন- আপনার মোবাইল পেতে হলে ৫,০০০ টাকা দিতে হবে। মোবাইল উদ্বার করার আগে দিতে হবে ২,৫০০টাকা, মোবাইল উদ্বার হওয়ার পর দিতে হবে ২,৫০০টাকা। মোট ৫,০০০ টাকা দাবি করেন তিনি। 

সেবা গ্রহিতার সাথে দরকষাকষির পর ৩ হাজার টাকা দিতে বলে সেবা গ্ৰহিতা। তবুও এএসআই নাসরিন বলেন, পুরো ৫ হাজার টাকাই দিতে হবে। 

এদিকে, এএসআই নাসরিন আক্তারকে চাকুরী থেকে স্থায়ী ভাবে প্রত্যাহারের দাবি করেছেন নোয়াখালী জেলার সর্বস্তরের জনতা (যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দৃশ্যমান) তার বিরুদ্বে চাঁদাবাজি, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদত দেয়া, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে আটক করে ঘুষ নেয়ার অনেক অভিযোগ রয়েছে।

প্রকাশ্যে ঘুষ চাওয়ার ওই ভিডিও ফুটেজ টি ২৪ জানুয়ারীর বলে জানা গেছে। তার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে শত শত অনিয়মের অভিযোগ আসতে শুরু করেছে।

স্থানীয়রা জানান, যে কোন ব্যাক্তির মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে সাধারণ ডায়েরী(জিডি) করার পর মোবাইল উদ্বার করতে হলে এএসআই নাসরিন আক্তারকে ঘুষ দেওয়া বাধ্যতামূলক। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি হারানো মোবাইল উদ্বার করে দেন। এছাড়া উপজেলার প্রায় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মোবাইল ফোন উদ্বার করে দেওয়ার নামে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধশত মানুষ ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কমেন্টে বলেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন ভুক্তভোগী বলেন, টাকা ফেরত চাইলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখান তিনি। শহিদুল নামের এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, টাকা দেওয়ার পরও মোবাইল পাইনি। আরেক ভুক্তভোগী সালা উদ্দিন খান অভিযোগ করে বলেন, ৪মাস হয়েছে জিডি করেছি, মোবাইলের খোঁজে ফোন করলে টাকা চায়। আরেক ভুক্তভোগী বলেন, জিডি করার সময়ও টাকা দিতে হয়েছে, মোবাইল উদ্বার করার পরও ৪হাজার টাকা দিয়ে মোবাইল আনতে হয়েছে। আরেক জন বলেন, মোবাইলের দাম অনুযায়ী তাদেরকে টাকা দিতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আজিম তারেক বলেন, আমার বন্ধুর মোবাইল হারানোর পর জিডি করার পর এএসআই নাসরিন বলেছেন, ৮হাজার টাকা দিলে মোবাইল উদ্বারের কাজ শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, নাসরিন টাকা ছাড়া কোন সেবাই প্রদান করেনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ভুক্তভোগী বলেন, নাসরিন নোয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিলেন। তবুও কিভাবে সে ঘুরে ফিরে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় নিয়োগ পায়?

অপরদিকে নোয়াখালী মিডিয়ার এডমিন সাংবাদিক জহিরকে বিভিন্ন ভাবে মামলা-হামলা, পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি ভাড়াটিয়া দিয়ে ওই ভিডিও নিউজে আবল-তাবল অপমান জনক মন্তব্য ও করা হচ্ছে। নোয়াখালী জেলাবাসির দাবি এএসআই নাসরিন এর বিরুদ্বে যেন বিভাগীয় তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।

ঘটনা সম্পর্কে এএসআই নাসরিন আক্তার বলেন, প্রতিটি সিডিআর আনতে ২ হাজার টাকা খরচ হয়। তাছাড়া দুরের কোন জেলা থেকে মোবাইল উদ্বার করে আনতে গেলে, আরো ২-৩ হাজার টাকা খরছ হয়। তিনি আরও বলেন সরকারী ভাবে মোবাইল উদ্বার করার কোন নিয়ম নেই! (যাহা ভিডিওতে দৃশ্যমান)। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, সিডিআর বের করতে কিছু টাকা তার খরছ হয়। তাই বলে তিনি ৫হাজার টাকা চাইবেন কেন। 

অন্যদিকে জানা গেছে এএসআই নাসরিনকে নোয়াখালী জেলা ডিবি পুলিশে বদলি করা হয়েছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/উমায়ের

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ