দিল্লির সরকারি স্কুলে যাদুর ছোঁয়া

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী, ২০২৩ ১০:২৭:৩৩

দিল্লির সরকারি স্কুলে যাদুর ছোঁয়া

আরমান বিন আজাদ, ক্যাম্পাস প্রতিনিধিঃ দিল্লিতে বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে ছুটছে শিক্ষার্থীরা সুন্দর পরিবেশ দিতে পারে নিরাপদ বর্তমান ও সফল আগামী। বিষয়টি সবাই মানে বিধায় সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে দ্বিধা করে না। তেমন সুযোগ পেতেই দিল্লির বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী যাওয়ার হার বেড়ে গেছে। স্ট্রেটস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের আগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শিক্ষার্থীরা সরকারি স্কুলে যেতেই চাইত না। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে তাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠত নোংরা শৌচাগার।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে এসব স্কুলের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠত। অধিকাংশ স্কুলের ছাদ টিনের হওয়ায় শ্রেণীকক্ষ আগুনগরম হয়ে থাকত। বিষয়টি জেনেও লাখ লাখ পরিবার সন্তানদের এসব স্কুলে পাঠাত। ভবিষ্যৎ বলতে বরাবরই একই স্বপ্ন, দারিদ্রের চক্র থেকে বেরিয়ে চাকরি করে একটু স্বচ্ছল হওয়া। যার উপায় হলো, সন্তানদের স্কুলে পাঠানো। কিন্তু স্কুলের কথা মনে হলেই জরাজীর্ণ ভবন, অব্যবস্থাপনা, অপুষ্টিকর খাবার প্রভৃতি ছবি শিক্ষার্থীদের মনে ভেসে উঠত। ফলে তারা স্কুলে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলত।

দিল্লির এমনই একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘রেড স্কুল’। বর্তমানে স্কুলটির অতীত অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ক্যাম্পাসের উচ্চ শোরগোল ও ইউনিফর্মের রঙের জন্য স্কুলটি এর মধ্যে বেশ আলোচনায় এসেছে। গত বছর বোর্ড পরীক্ষায় দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাদের পাশের হারও ছিল উল্লেখযোগ্য।

এ পরিবর্তনের পেছনে কাজ করেছে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। প্রতিবেদনে বলা হয়, আম-আদমি পার্টি স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি ও শিক্ষা খাতে উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির ক্ষমতায় আসীন হয়েছিল। তখন থেকেই মূলত স্কুলগুলো পরিবর্তন হতে শুরু করেছিল।

আম-আদমি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল স্কুলগুলোকে পুনর্গঠিত করতে চান, যাতে মন্ত্রীরা নিজের সন্তানদের এসব পাবলিক স্কুলে পাঠাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্কুলের মেরামতের জন্য তার সরকার কোটি কোটি ডলার খরচ করে, প্রণয়ন করে নতুন পাঠ্যক্রম। দিল্লির সরকার শিগগিরই ফল পেতে শুরু করে।

সম্প্রতি ঘোষণা এসেছে যে, গত পাঁচ বছরে আড়াই লাখের বেশি শিক্ষার্থী বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকার পরিচালিত এসব স্কুলে ভর্তি হয়েছে।

২০১৫ সাল থেকে দিল্লির স্কুলগুলো এ পরিবর্তন দেখতে শুরু করে। এ সময় মনিশ সিসোদিয়া ছিলেন কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী। প্রথমেই তারা সরকারি স্কুলের শৌচাগার মেরামত করতে শুরু করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য পরিষ্কার শৌচাগারের ব্যবস্থা করা, শিক্ষাগত পরিবর্তন তবেই আসবে। এ কাজে সরকার বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ওপর দায়িত্ব অর্পণ করে। অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তারা ছিলেন তদারকির দায়িত্বে।

পরিকল্পনামাফিক সরকার টাকার সংস্থান করে স্কুলের পরিবেশের উন্নয়ন ঘটায়। নতুন নির্মিত শ্রেণিকক্ষ ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর চেহারাই পাল্টে দেয়। সে মডেল কাজ করায় সংস্কার কর্মসূচিতে এখন অন্যান্য রাজ্যও প্রথমে স্কুলের শৌচাগারের দিকে নজর দিচ্ছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ