মসজিদ কেন্দ্রিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৩:২৮:৫২

মসজিদ কেন্দ্রিক পাঠাগার প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

আব্দুল কুদ্দুছ ,
চাঁদপুর প্রতিনিধি: 
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় যতগুলো মসজিদ আছে, এর প্রত্যেক মসজিদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা চেষ্টা করেন, প্রতি বছর কমপক্ষে একটি মাহফিলের আয়োজন করতে। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এক বছরে একটি মাহফিল আয়োজনে যত টাকা খরচ হয়, তত টাকা দিয়ে মসজিদ কেন্দ্রিক একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি বা পাঠাগার গড়ে তোলা সম্ভব! 

একটি মাহফিল আয়োজনের জন্য অঞ্চল ও অবস্থা ভেদে সর্বনিম্ন ১ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। ক্ষেত্রবিশেষে, এ টাকার পরিমাণ ২০ লক্ষ কেও ছাড়িয়ে যায়!অথচ আমরা যদি মাত্র ১ লক্ষ টাকা একটি লাইব্রেরি বা পাঠাগার তৈরিতে ব্যয় করতাম, তাহলে এই লাইব্রেরি বা পাঠাগার থেকে উপকৃত হত একটি সমাজের হাজারো জ্ঞান পিপাসু বনি আদম। 

বর্তমান সময়ে এসে আমাদের মসজিদ গুলো জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছে। অথচ আপনি যদি মুসলিম সভ্যতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের দিকে তাকান, তাহলে আপনি দেখতে পাবেন, ইসলামি সভ্যতায় মসজিদ ছিলো জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। উদাহরণ হিসেবে আমরা প্রথমেই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত মসজিদের দিকে তাকাতে পারি। তিনি মদিনায় গিয়ে প্রথমেই মসজিদ তৈরি করলেন। অতঃপর সেই মসজিদকে একটি পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় রূপ দিলেন। 

দ্বিতীয়ত, মিশর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। যেটি প্রথম দিকে মসজিদ। অতঃপর মসজিদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। আর বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২০ লাক্ষ শিক্ষার্থী এক সাথে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করে পৃথিবিখ্যাত মানুষে পরিণত হচ্ছে। এভাবে আরো হাজারো মেচাল আমাদের সামনে বর্তমান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা মসজিদ কেন্দ্রিক একটি বুকশেল্পও রাখতে আগ্রহী নই।

জ্ঞান অর্জনের ব্যাপারে নবী করিম (সা.) আমাদেরকে কি পরিমাণ আগ্রহী হওয়ার জন্য বলেছেন, তা তার অসংখ্য হাদিস থেকে সবচেয়ে ছোট হাদিস খানা উপস্থাপন করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, .فضل العلم على العباد অর্থাৎঃ ইলম (জ্ঞান) অর্জনের মর্যাদা হচ্ছে ইবাদতের ওপরে। 

কুরআনে বর্নিত প্রথম আয়াতটিও اقرأ অর্থাৎ "পড়" দিয়ে শুরু হয়েছে। সেখানে اعبد অর্থাৎ "ইবাদত কর" দিয়ে শুরু হয়নি।কাজেই আমরা যদি আমাদের সমাজ ও সভ্যতাকে সোনালী সমাজে পরিনত করতে চাই, তাহলে জ্ঞান অর্জনের বিষয়টিকে ফার্স্ট ফ্রাইরুটি দিতে হবে। এর জন্য পাঠাগারের বিকল্প নেই।

পরিশেষে, ভারতে বৃটিশ শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তক জন মেকলের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করতে চাই। তিনি বলেছিলেন, ❝প্রচুর বই নিয়ে গরিব হয়ে চিলেকোঠায় থাকবো, তবু্ও এমন রাজা হতে চাই না যে বই পড়তে ভালোবাসে না।


প্রজন্মনিউজ২৪/সাঈদ
 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ