দূষিত ওষুধ সেবন করে ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৫:৪৫:০৩

দূষিত ওষুধ সেবন করে ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯ শিশুর মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক:দূষিত কাশির সিরাপ সেবনের ফলে ইন্দোনেশিয়ায়  কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর শিকার হওয়া শিশুদের অভিভাবকরা সরকার এবং সিরাপ প্রস্তুতকারী কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন।

রাজধানী জাকার্তার একটি আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে এএফপি।

মামলায় ইন্দোনেশীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং কাশির সিরাপ প্রস্তুত ও বিপণনকারী ৭টি ওষুধ কোম্পানিকে আসামি করা হয়েছে বলে এএফপিকে জানিয়েছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী আওয়ান পুরইয়াদি।

আইনজীবী বলেন ‘এত শিশু মারা গেল, অথচ কেউ কোনো দায়দায়িত্ব স্বীকার করল না। আমরা অত্যন্ত হতাশ ও ক্ষুব্ধ।মামলায় বিবাদিপক্ষের কাছে মৃত প্রত্যেক শিশুর জন্য ২০০ কোটি রুপিয়াহ (১ লাখ ২৭ হাজার ৪৯ ডলার) এবং অসুস্থ প্রত্যেক শিশুর জন্য ১০০ কোটি রুপিয়াহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন অভিভাবকরা—উল্লেখ করে পুরইয়াদি বলেন, ‘আপাতত ১২টি পরিবারের অভিভাবক মামলার বাদি হিসেবে নিজেদের তালিকাভুক্ত করেছেন। সামনে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে বলে আমরা আশা করছি।’

এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর গুরুতর কিডনি জটিলতায় ভুগে ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই শিশুদের সবার বয়স ৫ বছরের মধ্যে এবং তাদের ৬৫ শতাংশই রাজধানী জাকার্তা ও তার আশপাশের অঞ্চলের।

পরীক্ষা থেকে  জানা যায় ,এই শিশুদের সবাই ঠাণ্ডাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল এবং সুস্থ হয়ে উঠতে প্যারাসিটামল গ্রুপের যেসব কাশির সিরাপ তাদেরকে খাওয়ানো হয়েছিল, সেসব সিরাপে এথিলিন গ্লাইকল ও ডায়াথিলিন গ্লাইকল নামের দুটি রাসায়নিক উপাদানের বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

সাধারণত শিল্প ও কলকারখানায় এই দু’টি রাসায়নিক উপদান ব্যবহার করা হয়। দামে সস্তা হওয়ায় অনেক ওষুধ কোম্পানি সিরাপ তৈরিতে খাবার উপযোগী গ্লিসারিনের পরিবর্তে এই দুই উপাদান ব্যবহার করে। কোনো তরলে স্বল্পমাত্রায় এথিলিন গ্লাইকোল ও ডায়াথিলিন গ্লাইকোল ব্যবহার করা হলে মানবদেহে তেমন গুরুতর কোনো প্রভাব পড়ে না, কিন্তু সেই মাত্রা অতিক্রম করলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা থাকে।

চলতি বছর পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়াতেও একই কারণে, অর্থাৎ দূষিত কাশির সিরাপ খেয়ে ৭০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাম্বিয়ায় শিশুমৃত্যুর জন্য যে চারটি সিরাপকে দায়ী করা হয়েছে, সেসবেও বিপজ্জনক মাত্রার এথিলিন গ্লাইকোল ও ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।

‘আমরা চাই…ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি, ফার্মেসি, খাদ্য ও ওষুধ ‍নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় (এসব মৃত্যুর) দায়দায়িত্ব নিক,’ এএফপিকে বলেন আওয়ান পুরইয়াদি।


প্রজন্মনিউজ২৪/সাঈদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ