ওভার ইনভয়েসিংয়ে বাড়ছে পণ্যের দাম

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০১:১৫:৩৬

ওভার ইনভয়েসিংয়ে বাড়ছে পণ্যের দাম

বিদেশ থেকে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ‘ওভার ইনভয়েসিং’র নামে চলছে ভয়ংকর প্রতারণা। তৃতীয় দেশের মাধ্যমে ভোগ্যপণ্য আমদানির ফলে একদিকে যেমন দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে আমদানিতে অতিরিক্ত মূল্য দেখানোর ফলে পকেট কাটা যাচ্ছে জনগণের। এমন পরিস্থিতিতে ওভার ইনভয়েসিং রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশে বর্তমানে ডলার সংকট চলছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি ওভার ইনভয়েসিং হয়ে থাকে, তা হবে দুঃখজনক। সরকারের উচিত ওভার ইনভয়েসিং রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু আমদানিকারকের দুবাই-সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে অফিস রয়েছে। তারা মূল রপ্তানিকারক দেশ থেকে সরাসরি ভোগ্যপণ্য না এনে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে আমদানি করছে। তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য এনে আমদানিকারকরা ওভার ইনভয়েসিংয়ে অনেক পণ্যের অতিরিক্ত দাম দেখান। এই ওভার ইনভয়েসিংয়ের ফলে ভোক্তা পর্যায়ে অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
অর্থ পাচার প্রতিরোধে নিয়োজিত সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে ওভার ইনভয়েসিংয়ের বিষয়টি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক ডলার সংকটের মধ্যে কোনো কোনো আমদানি পণ্যে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েসিং দেখানো হয়েছে। এই অর্থবছরে বিভিন্ন রিপোর্টিং এজেন্সি ৮ হাজার ৫৭১টি সন্দেহজনক লেনদেন ‘এসটিআর’ করেছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশে ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারকদের বেশির ভাগই রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, হংকংসহ বিভিন্ন দেশে নিজস্ব অফিস। তারা কোনো পণ্য আমদানির সময় সরাসরি রপ্তানিকারক দেশ থেকে না করে নিজস্ব অফিসের মাধ্যমেই তা করে থাকে। তৃতীয় দেশের মাধ্যমে আমদানির ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি মূল্য দেখিয়ে ভোগ্যপণ্য দেশে আনা হচ্ছে। তৃতীয় দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমেই হচ্ছে ওভার ইনয়েসিংয়ের কারসাজি। ফলে একদিকে যেমন দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে অতিরিক্ত মূল্যে আমদানি দেখানোর ফলে জনগণকেও পণ্য কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। এতে জনগণের পকেট থেকে আরেক দফায় হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। 

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের এক আমদানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমানে দেশে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকদের অনেকেরই সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে একাধিক নিজস্ব অফিস আছে। তারা কোনো ভোগ্যপণ্য আমদানির আগে রপ্তানিকারক দেশের বাইরে তৃতীয় দেশের অফিসের মাধ্যমে অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে আমদানি করে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি দামে আমদানি করা হচ্ছে ভোগ্যপণ্য।


প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ