জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক সুমন

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ১১:৩২:০৫

জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক সুমন

নাজমুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধিঃ ‘হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমায়-আমায় অন্য গানের সুরে’। দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী কবির সুমনের এই গান কম-বেশি সবারই শোনা। এই গান অনুপ্রেরণার। যার মাধ্যমে সুমন বলছেন, হাল না ছাড়তে। কখনো না কখনো জয় আসবেই। মানব জীবনে তো বাধা-বিপত্তি আসবেই। কিন্তু থেমে গেলে তো হবে না।

নিজ উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। অনেকেই আছেন যারা নানা ঝড়-ঝাপটা থাকা সত্ত্বেও জীবন যুদ্ধে হার না মেনে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজ প্রচেষ্টায়।

এমনই একজন দিনাজপুর সদর উপজেলার মেডিক্যাল মোরের বাসিন্দা মোঃ সুমন ইসলাম (৩৯)। দিনাজপুর থেকে ঠাকুরগাঁও অপেক্ষা কখন ট্রেন আসবে দিনাজপুর থেকে ট্রেনে করে ঠাকুরগাঁও এর উদ্দেশ্যে এসে ঠাকুরগাঁও স্টেশনে বিক্রি শুরু হতেই আবারও অপেক্ষা কখন দিনাজপুরগামী ট্রেন আসবে অপেক্ষার অবসন ঘটিয়ে দিনাজপুরের উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে পৌঁছাতেই দিনাজপুর স্টেশনে বিক্রি শুরু হতেই আবারও ঠাকুরগাঁওগামী ট্রেনের অপেক্ষায় মাঝে মধ্যে এলাকার বা দূরের কোথাও অনুষ্ঠান বা খেলা হলে সেখানেও ফেরী করে বিক্রি করেন এভাবেই পারি দিচ্ছে দিনের পর দিন সুমন।

তবুও নিরাশ হননি। বেছে নেননি ভিক্ষাবৃত্তির পথ। জীবন-জীবিকার তাগিদে কখনো দিনাজপুর স্টেশন কখনো ঠাকুরগাঁও স্টেশন পাশাপাশি ট্রেনেই বিক্রি করে সংসারের হাল টানছেন তিনি। তার সন্তান নেই, স্ত্রীর সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনিই।

কথা হয় সুমন ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, আমার সন্তান নেই আমার স্ত্রী এবং আবার ছোট একটা পরিবার। আমার হাত নেই তাতে কী হয়েছে? ইচ্ছাশক্তিই বড়। পরিবারের ভরন-পোষণ জোগাতে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি স্টেশনে থেকে স্টেশনে ফেরিকরা।

‘জীবন মানেই বেঁচে থাকার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে সেই টিকে থাকবে ও সফল হবে, যার রয়েছে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস এবং হার না মানার প্রবণতা। ’

তিনি বলেন, প্রতিদিন স্টেশন থেকে স্টেশন ফেরী করে বিক্রি করি, আমার শরীরের গঠন দেখে অনেকেই ক্রয় করতে চায়না। আবার অনেকে দয়া করে কিনে নেয়। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যা পাই, রাত হলে তাই নিয়ে বাড়ি ফিরি।

‘রাত পোহালেই আবারও স্টেশন থেকে স্টেশন যাত্রা পথ ট্রেনেই বেড়িয়ে পড়ি। দুই জেলা দিনাজপুর থেকে ঠাকুরগাঁও এবং ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুর স্টেশন থেকে স্টেশন মাঝে মধ্যে অনুষ্ঠান বা খেলার মাঠে ১০০০-১৫০০ টাকা নিয়মিত বেচাকেনা ৩০০-৪০০ টাকা থাকে এভাবেই জীবনের চাকাটা চালিয়ে নিচ্ছি,’ যোগ করেন সুমন ইসলাম।

ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনে একতা এক্সপ্রেস এর টিটির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিন ওই ফেরীওয়ালার সাথে দেখা হয়। মায়াবী চেহারা আর পরিশ্রমী ওই মানুষটার জন্য। কোনো কোনো সময় চোখে অশ্রু চলে আসে। তাই দেখা হলেই যাত্রীদের বলি ভাইয়ের কাছে অল্প কিছু হলেও সবাই কেনার চেষ্টা করবেন।


প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ