প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ১২:৪৭:৫০
ছুটির দিনে মুন্সীগঞ্জে পদ্মাপাড়ের মাওয়া মৎস্য আড়তে রুপালি ইলিশের জমজমাট বেচাকেনা। প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ইলিশের স্বাদ নিতে দূরদূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারা। তাই রুপালি ইলিশের পসরা ঘিরে উপচেপড়া ভিড়। অগ্রহায়ণের শীতল ভোরে ইলিশ নিয়ে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা তীরের মাওয়া মৎস্য আড়তে আসেন জেলেরা। অর্ধশতাব্দী প্রাচীন এই হাটে পাইকারি ডাকের প্রচলন রয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীসহ নানা এলাকার মানুষ এখানে আসেন ইলিশের স্বাদ নিতে। সরবরাহ ভালো থাকায় দামও অনেকটা নাগালের মধ্যে। বড় ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, উপকূলের ইলিশ পদ্মার বলে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
মাওয়া মৎস্য আড়তের সভাপতি ছানা রঞ্জন দাস বলেন, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে কারেন্ট জাল বন্ধ এবং প্রবেশপথটি প্রশস্ত করাসহ আড়তটির আধুনিকায়নের দাবি জানাচ্ছি। এই হাটে ২৯টি আড়ত রয়েছে। এ ছাড়াও হাটের খোলা মাঠে পসরা নিয়ে বসেন আরও প্রায় ২০০ বিক্রেতা। দেশসেরা এই ভোরের হাটে ৩ হাজার মানুষের রুটিরুজির জোগান হচ্ছে। ফজরের আজানের পরপরই তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে এই পদ্মা তীর। শত শত জেলে নৌকা নোঙর করে হাটের পাশে। এরপর মাছ নিয়ে হাটে পসরা দেয়ার প্রতিযোগিতা লেগে যায়। জেলে নৌকাগুলোতে মাছে খাড়ির পাশাপাশি পেটির ভেতরে বরফেও মাছ রাখা হয়। রাতে ধরা মাছগুলো যাতে নরম হয়ে না যায় সে জন্যই ব্যবহার করা হয় বরফ।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরবেলায় নদীতীরে যেন এলাহি কাণ্ড। এই ইলিশের হাট কেন্দ্র করে আরও নানা রকম বাজার বসে গেছে। পেটি, বরফ ছাড়াও নানা রকম দোকান। আর ইলিশের হাটের বাইরেই নদী থেকে প্রবেশমুখের আশপাশে বসেছে চরের নানা রকম সবজি আর ফল-ফলাদির পাসরা।
হেমন্তের ভোরের শিশিরে ভরে যায় মাঠঘাট। এর মধ্যেই হাজারো মানুষের ব্যস্ততা। জেলেদের নাস্তার জন্য ভাসমান রুটি পরোটার দোকান, ডাবসহ নানা কিছু। মাছের হাটের বেচাকেনা শেষ হতেই সকাল ৮টার মধ্যেই এসব দোকান বন্ধও হয়ে যায়। ভোরের বেচাকেনা শেষ। নানা অঞ্চল থেকে আসা মানুষ মাছ কেনা ছাড়াও পদ্মা সেতু পাদদেশের ভোরের এই কর্মযজ্ঞ দেখেন এমনকি ছবিও তুলে নিয়ে যান।
আড়তে নিয়মিত মাছ বিক্রি করেন ভজন লাল দাস। তিনি বলেন, ভোর বেলায় ইলিশ ঘিরে পদ্মা পারের যে কর্মচঞ্চলতা, যা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন দক্ষিণাঞ্চল থেকেও দ্রুত সময়ে মাছ চলে আসতে পারে। একইসঙ্গে পদ্মার অপর প্রান্তের অনেক সৌখিন ক্রেতাও সড়কপথে আসে এই হাটে।
হাটের ইলিশের বড় আড়তদার শ্রীধাম দাস বলেন, ইলিশ কিনতে আশপাশের হাটবাজারে পাইকার ছাড়াও দূরদূরান্তের বহু সৌখিন ক্রেতারা আসেন প্রতিনিয়ত। প্রতিদিনই ভিড় থাকে হাটে। তবে ছুটির দিন ভিড় আরও বেড়ে যায়। কিন্তু গাড়ি নিয়ে আসে লোকজন কিছুটা দূরে পার্কিং করে হাটে প্রবেশ করে। যেন মানুষের স্রোত নেমে যায়। তবে যারাই এই আড়তে আসেন পছন্দের মাছ কিনে খুশি হন। তাই ফিরে ফিরে আড়তে আসেন অনেকেই।
গাজীপুর থেকে আসা সৌখিন ক্রেতা মনির হোসেন বলেন, এত মাছের পসরা থাকে যে দেখেও ভালো লাগে।
আড়তদাররা জানান, প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টায় এই হাটে বিক্রি হয় প্রায় কোটি টাকার মাছ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামশুল করিম জানান, গেল এক বছরে জেলায় ২ হাজার ৭২ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এর বড় একটি অংশ বিক্রি হয় এই হাটে।
মাওয়া ইলিশের পাইকারি দর কেজিপ্রতি বড় ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা।
প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে
প্রতিবছর গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের একই নৈরাজ্য
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে শেষ মুহুর্তে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতা বিক্রেতা
মৃত্যুর আগেই কবর ও মাজার তৈরি করেছেন এক দম্পতি
ট্রেনের সময় বিলম্ব হওয়া নিয়ে যা বললেন স্টেশন ম্যানেজার
গুচ্ছ গ্রামের এক পুকুরে ধরা পড়ল ১০০ ইলিশ
নোয়াখালীতে এক পুকুরে মিলল ৯ কেজি ইলিশ