বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর, ২০২২ ১০:২৪:২৫

বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ৫১ নম্বর দল সৌদি আরব, অন্যদিকে আর্জেন্টিনার অবস্থান তৃতীয়। 

শক্তির তফাত তো র‍্যাঙ্কিংয়েই পরিষ্কার। খেলার প্রথমার্ধেই কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি সৌদি আরব হারিয়ে দেবে বিশ্বকাপের অন্যতম হট ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে। টানা ৩৬ ম্যাচ হারের মুখ না দেখা দলের পুঁচকে সৌদির বিপক্ষে হারটাই কী বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন। অন্তত তেমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডেটা কোম্পানি নিলসন গ্রেসনোট।

বিশ্বকাপে গ্রুপ 'সি'-তে আর্জেন্টিনার সঙ্গে আছে সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও মেক্সিকো। নামে-ভারে এই গ্রুপে সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ সৌদি আরবই। দলটায় নেই ইউরোপে খেলা কোনো তারকা। সৌদি লিগের খেলোয়াড় দিয়েই গড়া দলটায় নেই বৈশ্বিক কোনো তারকাও। 

কিন্তু তাদের বিপক্ষেই কিনা হেরে বসে আছে লিওনেল মেসির মতো সর্বকালের সেরাদের একজনের দল। বিশ্বমঞ্চে প্রতিবারই ঘটে অঘটন। তারপরও এমন অঘটন হজম করাই কঠিন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে: বিশ্বকাপের মঞ্চে এটাই সবচেয়ে বড় অঘটন কি না?

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডেটা কোম্পানি নিলসন গ্রেসনোটের মতে, সৌদি আরবের এই জয় ছাড়িয়ে গেছে ১৯৫০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ১-০ গোলের জয়কেও! বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মাইটি ইংল্যান্ডের এই হারই অনেকের মতে সবচেয়ে বড় অঘটন। সে ম্যাচকেও ছাড়িয়ে গেছে এই ম্যাচের ফল।

নিলসন গ্রেসনোটের হিসাবে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের সম্ভাবনা ছিল মাত্র ৯.৫ শতাংশ। এটি এখন তালিকার দুইয়ে। তাদের হিসাবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আরবের জয়ের সম্ভাবনা ছিল মাত্র ৮.৭ শতাংশ।

নিলসন গ্রেসনোট একটা জটিল ফর্মুলা ব্যবহার করে বিশ্বকাপে অঘটনের তালিকা তৈরি করেছে। যেখানে বিবেচনায় নেয়া হয়ছে র‍্যাঙ্কিং, দলের শক্তি, অবস্থান ও ইতিহাসকে।

এ তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ২০১০ বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে স্পেনের হার। এই ম্যাচে সুইসদের জয়ের সম্ভাবনা ছিল ১০.৩ শতাংশ। 

পরের স্থানে ১৯৮২ বিশ্বকাপে আলজেরিয়ার বিপক্ষে জার্মানির হার। ১৩.২ শতাংশ সম্ভাবনা নিয়ে এই ম্যাচে আলজেরিয়া হারিয়ে দিয়েছিল তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে। 
]
তালিকায় আছে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে র‍্যাঙ্কিংয়ের দুইয়ে থাকা চেক প্রজাতন্ত্রের হার। ১৩.৯ শতাংশ সম্ভাবনা নিয়ে ২-০ গোলে চেকদের হারিয়ে দেয় ব্ল্যাক স্টাররা।

পরের পাঁচটি স্থানে জায়গা পেয়েছে ১৯৫০ বিশ্বকাপে মারাকানাজো নামে খ্যাত ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের হার (১৪.২ শতাংশ), ২০১৮ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে বিদায় করে দেয়ার ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার জয় (১৪.৪ শতাংশ), ১৯৫৮ বিশ্বকাপে আগের আসরের ফাইনালিস্ট হাঙ্গেরির বিপক্ষে ওয়েলসের জয় (১৬.২ শতাংশ), ১৯৮২ বিশ্বকাপে স্পেনের বিপক্ষে উত্তর আয়ারল্যান্ডের জয় (১৬.৫ শতাংশ) এবং ২০০২ বিশ্বকাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে  সেনেগালের জয় (১৭.৩ শতাংশ)।

তবে তালিকায় ঠাঁই পায়নি বিশ্বকাপের ইতিহাসের বেশ কয়েকটি আলোচিত অঘটন। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ইতালির বিপক্ষে নবাগত উত্তর কোরিয়ার জয়, ১৯৯০ বিশ্বকাপে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ক্যামেরুনের জয়, ১৯৫৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে মাইটি ম্যাগিয়ার্সখ্যাত হাঙ্গেরির বিপক্ষে পশ্চিম জার্মানির হার স্থান পায়নি তালিকায়।

লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটের মাথাতেই লিওনেল মেসির সফল স্পটকিকে সৌদি আরবের বিপক্ষে লিড নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে আরও তিনবার তারা বল পাঠিয়েছিল আরবের জালে, কিন্তু প্রতিটি গোল বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে ২ গোল করে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অঘটনের জন্ম দেয় তারা। ৪৮ মিনিটে ডি-বক্সে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে গোল করে সৌদি আরবকে সমতায় ফেরান সালেহ আল শেহরি। ৫৩ মিনিটে বক্সের সামনে আলগা বল পেয়ে আর্জেন্টিনার তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দুর্দান্ত এক গোল করেন সেলিম আল দাওসারি।


প্রজন্মনিউজ২৪/এ কে

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ