গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যা দিবসে শোকর‌্যালি ও সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর, ২০২২ ০৫:৪৫:২৪ || পরিবর্তিত: ০৫ নভেম্বর, ২০২২ ০৫:৪৫:২৪

গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যা দিবসে শোকর‌্যালি ও সমাবেশ

আনোয়ার হোসেন শামীম গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও তিন সাঁওতাল হত্যার ৬ষ্ঠ বার্ষিকী উপলক্ষে ২দিন ব্যাপী কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে ১ম দিন রোববার (৫ নভেম্বর ) শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা নাট্য সংস্থার সামনে সাঁওতাল হত্যা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি পালণ করা হয়। একটি শোকর‌্যালি বের করে শহর প্রদক্ষিন করা হয়। পরে সাঁওতালরা নাট্য সংস্থার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ ও জনউদ্যোগ-গাইবান্ধা যৌথভাবে কর্মসূচি পালন করে।

বিক্ষাভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহবায়ক ও জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ আন্দোলন-গাইবান্ধার আহবায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাসকে, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুমু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ নেতা মৃণাল কান্তি বর্মণ, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ বাবু, রংপুর বিভাগীয় খ্রিষ্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাথিয়াস মার্ডি, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা কমিটির নেতা গৌর চন্দ্র পাহাড়ী, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদি থমাস হেমব্রম, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, কাজী আব্দুল খালেক, এ্যাড. কুশলাশীষ চক্রবর্তী, এ্যাড. মোহাম্মদ আলী প্রামানিক, এ্যাড. ফারুক কবির, এ্যাড. শাহনেওয়াজ খান, শহিদুল ইসলাম, জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবির রানা, রবিদাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক খিলন রবিদাস, রবিদাস ফোরামের উপদেষ্টা সুনীল রবিদাস, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে দাবি-দাওয়া সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও কালো পতাকা হাতে ৫ শতাধিক সাঁওতাল-বাঙালি শোক র‌্যালিতে অংশ নেন। র‌্যালিতে সাঁওতালরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তীর-ধনুক ও বাদ্যযন্ত্রসহ তাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি তুলে ধরেন।

বক্তারা সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার, গুলিতে আহত সাঁওতাল, বাড়ীঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ ও সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, যে কোন এলাকার উন্নয়নে ইপিজেড স্থাপন সেই এলাকার মানুষের জন্য অবশ্যই সুখের খবর। কিন্তু সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী ও বাঙালিদের বাপ- দাদার জমিতে সেখানকার ওয়ারিশগণের সাথে কোন ধরনের স্বাধীন, পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়াই ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা আদিবাসী-বাঙালি জনগণকে হতাশ করেছে।

তারা অবিলম্বে তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের প্রক্রিয়া বন্ধ করে জেলার অনত্র করা, চাষাবাদরত সাঁওতাল-বাঙালিদের সেচ সুবিধার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সংকট নিরসনে পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি করেন। উল্লেখ্য, স্থানীয় সাঁওতালরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের ওই জমি তাঁদের বাপ-দাদার দাবি করে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি আন্দোলন গড়ে তোলেন। জমি উদ্ধারে গঠিত হয় সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি। শুরু হয় নানা কর্মসূচি।

ওই বছরের ৬ নভেম্বর আখ কাটার নামে উক্ত জমি দখল করতে গেল চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে সাঁওতালদের ৩ জন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। এই দিনকে সাঁওতাল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে ভুক্তভোগীরাসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।


প্রজন্মনিউজ২৪/খতিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ