কোটচাঁদপুরে অপহৃত প্রেমা রানী দাস হয়নি এক মাসেও সন্ধান

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:১৫:৪৫

কোটচাঁদপুরে অপহৃত প্রেমা রানী দাস হয়নি এক মাসেও সন্ধান

রোকনুজ্জামান, কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরে এক মাস অতিবাহিত হলেও কিশোরী প্রেমা রাণী দাসকে উদ্ধার করতে পারেনি কোটচাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ। বাবা-মায়ের অভিযোগ ১৫ বছর বয়সী প্রেমা রাণী দাসকে ফুসলিয়ে অপহরণ করেছেন যশোর জেলার শার্শা’র ছেলে এক সন্তানের জনক মোঃ ইকরামুল হোসেন।একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বাবা-মা এখন পাগল প্রায়। মেয়েকে ফিরে পেতে অসহায় গরীব পিতা-মাতা প্রায় একটি মাস ঘুরছেন পুলিশ,রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তুু কিশোরী প্রেমা রাণী’র সন্ধান এখনো মেলেনি। মা রমা দাশের এখন প্রতিটি নিঃশব্দ রাত কাটছে কান্না আহাজারিতে।  

কোটচাঁদপুর উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের প্রেমা রাণী’র পিতা প্রশান্ত কুমার দাস অভিযোগ করেন-ভবানীপুর গ্রামের একটি ফার্ণিচার কারখানায় কাজ করত যশোর শার্শা থানার উলসী ডাঙ্গি মাঠাপাড়া গ্রামের একতার খাঁ’র ছেলে একরামুল ওরফে(রাফি)বেশ কিছু দিন যাবত স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেমা রাণীকে অশালীন কুটক্তিসহ উত্ত্যক্ত করে আসছিলো একরামুল। বিষয়টি প্রেমা রাণী বাড়িতে জানানোর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে একরামুলকে এমন কাজ আর না করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। তখন উপায় না পেয়ে প্রেমা রাণীদের অতি নিকট প্রতিবেশী বিদ্যুত হোসেনের স্ত্রী ডলি খাতুনের মাধ্যমে একরামুল কিশোরী প্রেমা রাণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

একপর্যায়ে প্রেমা রাণীর পরিবার কিছু ঝুঝে ওঠার আগেই গত ২১ই-আগস্ট সকাল সাড়ে ছয় টার দিকে প্রেমা রাণীকে নিয়ে একরামুল নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। প্রেমা রাণী’র পিতা বলেন-তার একমাত্র মেয়ে প্রেমা রাণী। সে কোটচাঁদপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রেমা রাণী সকালে প্রতিদিনের মত ওই দিনও প্রাইভেট পড়ার জন্য বের হয়ে গ্রামের জামে মসজিদের নিকট আসলেই একরামুল সেখান থেকে প্রেমা রাণীকে ফুসলিয়ে মাইক্রো বাসে তুলে নেয়। ওই মাইক্রোতে প্রতিবেশী অপহরন কারী মূলহোতা ডলি খাতুন এবং অজ্ঞাত আরো ১ থেকে ২ জন ছিলো। প্রেমা রাণী’র পিতা আরো বলেন, একরামুল এক সন্তানের জনক ও মুসলমান পবিবারের সন্তান। আর আমি হিন্দু পরিবারের। সে মুসলমান হয়ে আমার কিশোরী মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি।এর পর থেকে মেয়েকে খুঁজতে পিতা-মাতা পথে ঘাটে কাটিয়েছেন দিনের পর দিন। সেই থেকে প্রতিবেশী ডলি খাতুনও বাসায় ফেরেনি। শেষ পর্যন্ত মেয়ের কোন হদীস না মেলায় গত ১ সেপ্টেম্বর পিতা প্রশান্ত কুমার দাস বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় একরামুল ওরফে রাফি (২৮),প্রতিবেশী ডলি খাতুনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২ জনের বিরুদ্ধে ফুসলাইয়া অপহরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা নং-১ তাং-০১/০৯/২০২২। 

এদিকে মামলার বাদী প্রশান্ত দাস তার কিশোরী মেয়ে উদ্ধারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বলেন-বেশ কিছুদিন হয়ে গেল আমার মেয়েকে উদ্ধারে তাদের কোন ভুমিকা দেখছিনা। আমার একমাত্র মেয়ে প্রেমা। আমি এখন কি করবো কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছিনা। এবিষয়ে অপহরণ কারী মুল হোতা ডলি খাতুনের স্বামী বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী এমন কাজ করনি তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবী করেন।বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই নাজিবুল হক বলেন-আমরা মোবাইল ট্রাকিং-এর মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান জানার চেষ্টা করছি। কিন্তুু তাদের মোবাইল বন্ধ থাকায় উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে। তবে উদ্ধারের চেষ্টায় আছি। প্রেমা রানী দাসের মা-বাবার আকুল আবেদন দেশবাসী'র কাছে,মেয়েটিকে ও ছেলেটিকে দেখতে পান সাথে সাথে যে-কোন থানা পুলিশকে খবর দিয়ে ধরিয়ে দিন। অথবা ০১৩১৫-৮২৭১৭৪ নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।


প্রজন্মনিউজ২৪/ইজা 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ