অর্ধ কোটি টাকার এক্স-রে মেশিন অচল হয়ে পড়ে আছে!

প্রকাশিত: ১০ অগাস্ট, ২০২২ ০৬:৩৪:৪১

অর্ধ কোটি টাকার এক্স-রে মেশিন অচল হয়ে পড়ে আছে!

রৌমারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রৌমারীর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা। প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ৪ টি এক্স-রে মেশিন কোনো কাজেই আসছে না জনসাধারনের জন্য। ১৯৯৬ সাল থেকে অফিস হিসাব অনুযায়ী যে খানে চারটি মেশিন থাকার কথা সেখানে একটি মেশিন দেখা গেলেও বাকি গুলো পাওয়া যায়নি। 

সরেমিনে গিয়ে দেখা গেছে এক্স-রে মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ছিন্ন ভিন্ন অবস্থা পরে আছে স্টোর রুমে। কাগজে থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন চিত্র। জনগনের  চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কর্মকর্তা লোকবল সংকট দেখিয়ে অবহেলায় অচল পরে আছে এক্সরে মেশিন গুলো। যার কারনে কাংক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ৫০ এম এম, ১৯৯৬ সালে ৩০০ এম এম,২০২০ সালে ২৪ আগষ্ট একটি এক্স -রে আর-ওয়াই-৭৯৯-২০০এম এম ও ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে এক্স-রে আর-ওয়াই ৯২১- ৩০০ এম এম এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ পায় রৌমারী স্বাস্থ কমপ্লেক্স। এ হতদরিদ্র এলাকার মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সরবরাহ করা হয়েছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৭ বছর অতিবাহিত হলেও জনবলের অভাবে চালু করা হয়নি এক্স-রে মেশিন। দু:খ জনক হলেও সত্য, যেখানে সরকার মানুষের স্বাস্থ্য-সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিনা মূল্যে ঔষুধ ও পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য সকল যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছে। সেখানে যুগযুগ ধরে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি-এক্স-রে মেশিন ব্যবহার না করে ষ্টোরে তালাবদ্ধ রেখে আবার হারানোর অভিযোগে লোপাটে মেতে উঠেছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এদিকে এক্স-রে মেশিন ৪টির আনুমানিক সরকারী মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকার উপরে। সাংবাদিকবৃন্দ র্কতৃপক্ষের নিকট এক্স-রে মেশিন ৪টি দেখতে চাইলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১টি মেশিনকে ৪টি বুঝাতে চেষ্টা করেন। একটু শক্ত করে ধরলে তিনি পাশ কাটিয়ে চলে যান। তবে অনেকে ধারনা করছে এক্স-রে মেশিনের যন্ত্রাংশ চুরি যাওয়া নয়, সরিয়ে ফেলানো হয়েছে।

উল্লেখ্যঃ রৌমারী উপজেলা ১৫টি নদ-নদী দ্বারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অঞ্চল এলাকা। এখানকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপেক্সের উপর স্বাস্থ্যসেবার জন্য নির্ভরশীল। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণে হাজার হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই সাথে চিকিৎসা নিতে আসা অসুস্থ্য রোগীরা ঔষধ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। প্রায় বছর খানেক আগে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানালা ভেঙ্গে এক্স-রে মেশিনের যন্ত্রাংশ চুড়ি হয়েছে মর্মে হাসপাতাল র্কতৃপক্ষ থানায় একটি জিডি করেন। জিডি করার প্রায় ১ বছর পর গত ৮ আগষ্ট ২০২২ রৌমারী হাসপাতালের প: প: কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি এক্স-রে মেশিনের চুরি যাওয়া যন্ত্রাংশ তদন্ত করেন।

এব্যাপারে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদেরকে তো মেশিন গুলি দেখালাম। আর একটি মেশিন উপরে রয়েছে যাহা রুমের ভেতরে প্যাক করা অবস্থায় আছে। এটা আগে দেখানো যাবে না। আগামী দিন মেশিন চুরি যাওয়া তদন্ত টিম আসবে, তখন আপনাদেরকে ডাকা হবে। কিন্তু তদন্ত টিম আসলেও সাংবাদিকদেরকে না ডেকে তারাহুড়া করে তদন্ত শেষ করে চলে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ আসাদুজ্জামানের নিকট চুরি যাওয়া মেশিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিভিন্ন কথা বলে পাশ কাটিয়ে যান।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ