চিকিৎসক-শিক্ষিকার গোপন ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ১০ অগাস্ট, ২০২২ ১১:৩৯:০৬

চিকিৎসক-শিক্ষিকার গোপন ভিডিও ভাইরাল

অনলাইন ডেস্ক:নাটোরের এক স্বনামধন্য কলেজের শিক্ষিকা হলেও অবাধ চলাফেরা ও এক চিকিৎসকের সঙ্গে রহস্যজনক মেলামেশার আলোচনা ঢাকতে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। প্রথমে জেলার স্বনামধন্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে যেতেন পরিচিত রোগী হিসাবে সেবা নিতে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই পরিচয়ের মাত্রা গড়ায় বিছানাতে। ইতিমধ্যে সেই চিকিৎসক ও শিক্ষিকার যৌনাচারের ভিডিও অনেকের হাতে হাতে।

তবে বিষয়টি অনেকদিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও এক সেবিকার করা অভিযোগ তা ভাইরাল হয়েছে ব্যাপক আকারে। সেবিকার অভিযোগ মতে জানা গেছে, শিক্ষিকা ও চিকিৎসকের যৌনাচারে সহযোগিতা না করার খেসারত তাকে দিতে হয়েছে মাদক ব্যবসায়ীর অভিযোগে কারাবাস করে। দীর্ঘ কারাবাস শেষে বের হয়ে এসে জেলা প্রশাসকের কাছে এমন অভিযোগই করেছেন তিনি। এরপর থেকেই চাউর হয়েছে বিষয়টি। দুটি মহান পেশার মানুষ হয়েও এমন মানসিকতার লম্পট চিকিৎসক ও শিক্ষিকার সমালোচনা এখন মানুষের মুখে মুখে। সমালোচনা থেমে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

আর ২৮ মিনিটের ভিডিওটি ঘুরে বেড়াচ্ছে স্মার্ট দুনিয়ার নীল পর্দায়। ভিডিওটি কয়েক মাস আগের বলে মনে হলেও ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি। এদিকে এমন ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন ওই সচেতন মহলসহ শিক্ষার্থীরাও। এছাড়া এমন অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন জেলা প্রশাসক। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। 

জানা যায়, ডা. আমিনুল ইসলাম লিপন নাটোর শহরের পশ্চিম আলাইপুর হাফরাস্তা এলাকায় বসবাসকারী ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষিকা নাটোর সিটি কলেজের সমাজকল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক।  

গত বৃহস্পতিবার নাটোরের জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদের কাছে এক নারী ওই চিকিৎসক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। যাতে তিনি বলেন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আমিনুল ইসলাম লিপন নাটোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখতেন। সেখানেই নিয়মিত আসতেন ওই নারী। পেশায় শিক্ষক হলেও তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন সাংবাদিক হিসাবে। রোগী ও ডাক্তারের পরিচয়ে যাতায়াত করলেও তারা সময় কাটাতেন একান্তে। 

এদিকে কলেজ শিক্ষিকার আপত্তিকর  ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও শিক্ষিকার এ ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে নিন্দার ঝড় বইছে। অপরদিকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত শিক্ষিকাকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে বরখাস্ত অথবা বহিষ্কার না করায় কলেজটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নাটোর সিটি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে কলেজের সমাজ কল্যাণ বিষয়ের প্রভাষকের উপযুক্ত বিচার দাবি করে আবেদন করেছেন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। 
এদিকে এ ঘটনার পর নাটোর সিটি কলেজের দুজন সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কোন শিক্ষক এমনটা করতে পারে তা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারি না। কোথাও মুখ দেখাতে পারছি না। আমাদের প্রতিষ্ঠানে আমাদের এমন একজন সহকর্মী আছে এটা ভাবতেই আমরা লজ্জা পাচ্ছি। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই। 

অপরদিকে নাটোরে বসবাসকারী নাটোর সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট ও বর্তমানে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম লিপন, একাধিকবার মুঠোফোনে কল এবং এসএমএস দেয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি । শহরে তাঁর চেম্বারে গেলেও তিনি সাক্ষাৎ দেননি।

এদিকে ডা. আমিনুল ইসলাম লিপনের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন ক্লিনিক মালিক জানান, ওই শিক্ষিকা ফেসবুক এবং ফোনে ডা. লিপনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে। এক পর্যায়ে সে নিজেই ঘনিষ্ঠ মূহর্তের ভিডিও ধারণ করে এবং স্থানীয় কিছু তরুণকে দিয়ে ভিডিওটি পাঠিয়ে চিকিৎসককে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। মোটা অংকের টাকা না দিলে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে মান ইজ্জতের কথা ভেবে চিকিৎসক টাকা দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন। কিন্তু ততক্ষণে ভিডিওটি হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান বিষয়টি খুবই বিব্রতকর আখ্যায়িত করে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে মিটিং ডেকে শিক্ষিকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ।

এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি খতিয়েও দেখা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রজন্মনিউজ২৪/ইজা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ