পুলিশের সাথে প্রতারণা করলো পালানো ২ শিশু

প্রকাশিত: ০৭ অগাস্ট, ২০২২ ০৪:২০:৪৭

পুলিশের সাথে প্রতারণা করলো পালানো ২ শিশু

রাস্তার পাশে কাঁদতে দেখে শনিবার সন্ধায় দুটি শিশুকে পুলিশের নিকট তুলে দিয়েছিল স্থানীয় এক তরুণ। এরপর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাবার ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে পালানোর পুরোদস্তুর গল্প বানিয়ে বোকা সাজিয়ে দেয় পুলিশদের।

ফেসবুকে তাদের বানিয়ে বলা গল্পকেই প্রচারও করে পুলিশ। অবশ্য পরে তাদের ছবি দেখতে পেয়ে শিশু পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ করলে তাদের আসল পরিচয় ও নিখোঁজ হওয়ার প্রকৃত কাহিনী বেরিয়ে আসে। এতে পুলিশও অবাক বনে গেছে। ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

পুলিশ জানায়, আলোচিত এই দুই শিশুর নাম রাসেল (৮) ও রবিউল (৭)। সায়েম নামে এক তরুণ গত শনিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের ফরিদপুর রেলস্টেশনে পেয়ে ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে।

পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের আপন দুই ভাই হিসেবে পরিচয় দেয় তারা। ঠিকানা প্রথমে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় এবং পরে ঢাকায় ও আবার গাজীপুরের পাশে কালিগঞ্জ বলে জানায়। পুলিশকে তারা বলে, তাদের মা মারা গেছেন। বাবা কালিগঞ্জ এলাকায় ভ্যান চালায়। বাবা তাদের বকুনি দেয়ায় শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বাসযোগে মাওয়া হয়ে ভাংগা এসেছে। এরপর ট্রেনে করে ফরিদপুর স্টেশনে এসে নামে। তারা আলী হাসান একাডেমিতে ক্লাস টু ও ক্লাস ওয়ানে পড়ে বলেও জানায়।

২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ সুনীল কর্মকার জানান, শিশু দুটির করুণ বর্ণনা শুনে তাদের খাওয়া-দাওয়া ও গোসল করিয়ে ঘুমানোর সুন্দর ব্যবস্থা করে দেন।

এদিকে শনিবার রাতে ওই দুই শিশুর ছবিসহ তাদের দেয়া বর্ণনা উল্লেখ করে ফরিদপুর জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে তাদের অভিভাবকদের সন্ধান চেয়ে একটি পোস্ট করা হয়। এরপর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে রোববার সকালে রাসেল ও রবিউলের বিষয়টি নজরে আসে ফরিদপুরের শিশু পরিবারের সংশ্লিষ্টদের। তারা থানায় যোগাযোগ করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসে।

শিশু পরিবারের অফিস সহকারী মিরাজুল ইসলাম বলেন, রাসেল ও রবিউল ফরিদপুরের সরকারি শিশু পরিবারের বাসিন্দা। ফরিদপুর শিশু পরিবার থেকে শনিবার তারা পালিয়ে যায়। এরপর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসার গল্প ফাঁদে। তিনি বলেন, ফরিদপুর সরকারি শিশু পরিবারটি উন্মুক্ত। এখানে কাউকে আটকে রাখা হয়না। এই সুযোগে শনিবার সকালে তারা শিশু পরিবার থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি।

তিনি জানান, রাসেলের মা-বাবা কারো পরিচয় জানা নেই। পুলিশ তাকে অভিভাবকহীন অবস্থায় উদ্ধার করে শিশু পরিবারে হস্তান্তর করে। আর রবিউলের বাড়ি আলফাডাঙ্গার পানিগাতি গ্রামে। বাবার নাম মৃত আব্দুর রহমান। তার মা পারুলি বেগম। ছেলে রবিউলের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে তাকে শিশু পরিবারে দিয়ে যান।

ফরিদপুর সরকারি শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক সুজাউজ্জামান রাশেদ জানান, ওই দুই শিশুকে ফিরিয়ে আনতে আইনিপ্রক্রিয়া চলছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/ইজা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ