ভয়াবহ নদীভাঙনে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

প্রকাশিত: ০৭ অগাস্ট, ২০২২ ১০:৫০:০০

ভয়াবহ নদীভাঙনে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

পানি কমে যাওয়ায় তিস্তায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তিস্তা তীরবর্তী বাসিন্দাদের চোখের সামনেই নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও ফসলি জমি। ভাঙনে ফসলি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব এসব মানুষ এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে দিশেহারা।

তিস্তা ব্যারাজের উজানে ভারত অংশে নির্মিত গজলডোবায় বাঁধের মাধ্যমে ভারত সরকার একতরফা এর পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতের আগেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানিপ্রবাহের ফলে বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাটের মানুষ।

এবার বর্ষায় সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাঙন আতঙ্কে পড়ে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। গত সপ্তাহে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে নদীপাড়ের মানুষ। এক একটি পরিবার একাধিকবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে সরিয়ে নিয়েছেন বসতভিটা। কেউ কেউ রাস্তার ধারে বা বাঁধের পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

গত এক সপ্তাহে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের খামারটারি ও পূর্ব কালমাটি গ্রামের প্রায় ১০-১৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়, খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, খুনিয়াগাছ উচ্চ বিদ্যালয়সহ নানা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। নদীর কিনারায় পড়েছে নির্মাণাধীন চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট ভবনসহ তিন শতাধিক বসতবাড়ি।

সদর উপজেলার পূর্ব কালমাটি গ্রামের নাদের আলীর মর্জিনা বেওয়া তিনবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যের জমি ৩০ হাজার টাকায় বন্ধক নিয়ে তিনটি ঘর করে দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন। সেই বসতভিটাও নদীর মুখে পড়েছে। জমি নদীতে বিলীন হওয়ায় বন্ধকের ৩০ হাজার টাকাও দিচ্ছেন না জমির মালিক। টাকার অভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে পারছেন না। স্থানীয়দের সহায়তায় ও আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে শুক্রবার ঘর তিনটি সরিয়ে পাশের একজনের জমিতে রেখেছেন। নতুনভাবে বাড়ি করার কোনো উপায় না পেয়ে দিশেহারা মিনু বেওয়া।

পাশের গ্রাম খামারটারীর আছিবি, সোনাবি, আকলিমা বলেন, রাতে ঘুমাতে পারি না। কখন যে ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে যায়। সেই আতঙ্কে ঘুম নেই। কয়েক দিন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে কোনো রকম ভাঙনটা রক্ষা করেছেন। নয়তো এত দিনে এ গ্রাম নদীতে বিলীন হতো। রিলিফ নয়, তারা দ্রুত নদীখনন করে স্থায়ী সমাধান দাবি করেন।

শুধু খামারটারী আর পূর্ব কালমাটি নয়। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে তিস্তা নদীর বাম তীরঘেঁষা প্রতিটি গ্রামের মানুষ। এসব মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। যাতে অনাবাদি থাকা তিস্তার বুকের হাজার হাজার বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় আসে। এসব জমি চাষাবাদ করে সংসার চালাবেন তারা।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ৫টি উপজেলা নদীবেষ্টিত হলেও এবারে তিস্তার ভাঙনটা সদর উপজেলায় কিছুটা বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলমান রয়েছে। কিছু কিছু স্থানে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলোও কয়েক দিনের মধ্যে রোধ করা যাবে আশা করছি।


প্রজন্মনিউজ২৪/এমআরএ

এ সম্পর্কিত খবর

৩টি ড্রোন ধ্বংস করল ইরান, নিরাপদে আছে ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, এলাকাবাসীর পিটুনিতে নিহত ২

ঈদের আমেজ কাটেনি বাজারে, ফাঁকা ঢাকাতেও দাপট গরু-খাসির

খালেদা জিয়া ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিল : শেখ হাসিনা

সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী আর নেই

গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে

রাজবাড়ীতে ঘুড়ি উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত

পর্তুগালে বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের স্থাপত্য প্রদর্শনী

মাদক ব্যবসার মূল হোতা সোর্স শহীদ ধরা ছোঁয়ার বাইরে

১২ বছর ধরে ইমামতি করে বেতন দুই হাজার, সেটাও ঠিকমতো পান না

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ