উত্তর কোরিয়া আরো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে: জাতিসংঘ

প্রকাশিত: ০৫ অগাস্ট, ২০২২ ১২:০০:৪৬

উত্তর কোরিয়া আরো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছে যে উত্তর কোরিয়া সপ্তম পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে প্রস্তুত, পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাকে আরো জোরদার করা হবে। উত্তর কোরিয়া চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা জাতিসংঘের গোপনীয় প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়র্টাস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা কমিটিকে ‘স্বাধীন পুংগি-রি পারমাণবিক পরীক্ষার কাজ পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশের পথ প্রশস্ত করে বলে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম- ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অফ কোরিয়া উল্লেখ করে মনিটররা লিখেছেন, "ডিপিআরকে ইয়ংবিয়ন সাইটে বিচ্ছিন্ন উপাদান উৎপাদনের জন্য তার সক্ষমতা বিকাশ অব্যাহত রেখেছে।" ইয়ংবিয়ন হল উত্তর কোরিয়ার প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা, এটিতেই প্রথম পারমাণবিক চুল্লি পরিচালনা করে দেশটি। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ার কোন সাড়া দেয়নি উত্তর কোরিয়া।

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা আরও বলেছেন, ‘তদন্তে দেখা গেছে, অন্তত একটি বড় হ্যাকিংয়ে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্রিপ্টো সম্পদ চুরির জন্য পিয়ংইয়ং দায়ী।’ পর্যবেক্ষকরা এর আগে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অর্থায়নে সাইবার হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছিল। মনিটররা লিখেছেন, "অন্যান্য সাইবার কার্যকলাপ তথ্য চুরি করা এবং ডিপিআরকে-এর নিষিদ্ধ প্রোগ্রামগুলোর জন্য মূল্যবান তথ্য এবং উপকরণ প্রাপ্তির আরও অভিনব উপায়ে ফোকাস করে, যার মধ্যে ডব্লিউএমডি (গণবিধ্বংসী অস্ত্র) রয়েছে"।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে পারমাণবিক পরীক্ষা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার জন্য বছরের পর বছর নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। কয়েক বছর ধরে পিয়ংইয়ংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরো জোরদার করেছে ও সেই কর্মসূচীর জন্য তহবিল বন্ধের চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে জাতিসংঘ। ২০২২ সালের শুরু থেকেই দেশটি তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর ত্বরণ (যা ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল) অব্যাহত রেখেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ডিপিআরকে তার পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিল যদিও তারা একটিও পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি।

তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক এবং গাইডেন্স প্রযুক্তির সমন্বয়ে ৩১টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে, যার মধ্যে ছয়টি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র  পরীক্ষা এবং দুটি ক্ষেপণাস্ত্র স্পষ্টভাবেই ব্যালিস্টিক অস্ত্র। নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার তেলের অবৈধ আমদানি এবং কয়লা রপ্তানি অব্যাহত রাখার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে আন্তর্জাতিক আলোচনা হয়েছিল সেটিও ২০১৯ সাল থেকে স্থগিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ এই আলোচনাটি পুরোপুরিভাবে ভেস্তে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। আর এই আশায়া পিয়ংইয়ং-ও আলোচনায় ফিরে আসতে নারাজ।
 


প্রজন্মনিউজ২৪/এসএমএ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ