বেড়িবাঁধ রক্ষায় জিওবি ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের দাবী স্থানীয়রা

প্রকাশিত: ০৬ জুলাই, ২০২২ ১১:৩৪:৩৮

বেড়িবাঁধ রক্ষায় জিওবি ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের দাবী স্থানীয়রা

মোহাম্মদ মুজাহিদ পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া টেকপাড়া ৬৪/২ বি পোল্ডার ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ রক্ষায় জিওবি ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের দাবী তুলেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সহ নানা দপ্তরে আবেদন  করেছেন তারা। আবেদনের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি এখনও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সম্প্রতি উজানটিয়া ইউনিয়নের টেকপাড়া ৬৪/২ বি পোল্ডারে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এ বেড়িবাঁধটি। কিন্তু বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জায়গা গুলো মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেলের উজানি পানির ধাক্কায় আস্তে আস্তে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বেড়িবাঁধের কানায় চলে আসে। ফলে এখন পানির ধাক্কাটি বেড়িবাঁধে লেগে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে ভাঙ্গন দেখা দিলে বেড়িবাঁধের কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে কোন মতে রক্ষা করে। কিন্তু বেড়িবাঁধের আরো ২০ চেইন পর্যন্ত বাকী ছিল। এ বাকী অংশে এখন ভাঙ্গন শুরু হয়ে বেড়িবাঁধের বুক কেটে নিচ্ছে। এমন সময় জিওবি ব্যাগ বা পাথরের বল্ক দ্বারা রক্ষা করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে দাবী।

স্থানীয়রা জানান, মাতামুহুরী নদীর উজানি পানির ঢলে প্রতিবছর শত শত একর জমি ও ঘর বাড়ী বিলিন হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিগত সময়ে কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষা করেন। পরবর্তীতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাধঁ নির্মাণ করেন। 

তারা আরো জানান, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পূর্ণিমার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে শতাধিক ঘরবাড়ি, একটি পাকা মসজিদ, দুই শত কানি জমি, চিংড়ি ঘের, লবণের মাঠসহ পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি পূরন হতে না হতে আবার আসছে বর্ষা মৌসুম। এ বর্ষা মৌসুমে এলাকার জনগণ চরম আতংকে ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় দিনকাটায়। কেননা কখন বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে সাগর গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এ এলাকার বাসিন্দারা বর্তমানে চরম উৎকন্ঠায় রয়েছে। এ আতংক কাটতে বেড়িবাধঁও এলাকা রক্ষার স্বার্থে নদী ভাঙ্গন এলাকার বাকী অংশে জিও ব্যাগ বা পাথরের ব্লক দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাধেঁর ভাঙ্গনরোধে আবেদন করেছি। আবেদনের ৩ মাস পার হলেও কোন কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। 

তারা আরো বলেন, প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানির সাথে লুকোচুরি করে বসবাস করতে হয়। আমরা ঘরবাড়ি মালামাল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি বারবার।

এদিকে উজানটিয়ার মালেকপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, উজানটিয়া ইউনিয়নের টেকপাড়া ৬৪/২ বি পোল্ডারে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বেড়িবাধঁও জনবসতী পূর্ণ এলাকা রক্ষার স্বার্থে বেড়িবাঁধের বাকী অংশে জিওবি ব্যাগ বা পাথরের বল্ক দ্বারা রক্ষা করার জন্য আমরা আবেদন করছি পাউবোসহ বিভিন্ন দপ্তরে। কিন্তু আবেদন করার তিন মাস পার হয়ে গেলে ও আবেদনের কোন সুরাহ হয়নি। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে যেকোন মহুর্তে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ বিলিন হয়ে গিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমি এলাকাবাসির পক্ষে হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভারী বর্ষা মৌসুম না হওয়ার আগেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি। 

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা অংশে জিও ব্যাগ বসিয়ে বেড়িবাঁধ রক্ষা করার জন্য দাবি জানিয়েছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে পাউবোকে অবগত করেছি।

এ বিষয়ে পাউবোর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী জানান, বিষয়টি জরুরী বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান, আমি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে জিও ব্যাগ বসিয়ে বেড়িবাধঁ রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব


প্রজন্মনিউজ২৪/মনিরুল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ