আবারও শিরোপার উৎসব মেসির আর্জেন্টিনায়

প্রকাশিত: ০২ জুন, ২০২২ ০৪:২৪:৪৩ || পরিবর্তিত: ০২ জুন, ২০২২ ০৪:২৪:৪৩

আবারও শিরোপার উৎসব মেসির আর্জেন্টিনায়

১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকা জেতার পর সেই বছরই ফাইনালিসিমায় ডেনমার্ককে হারিয়ে দুই আন্তঃমহাদেশীয় সেরার শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষা। অবশেষে গত বছর জুলাইয়ে ব্রাজিলকে ১-০ গোল ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জিতে শিরোপা খরার অবসান ঘটায় লিওনেল মেসির দল।

বছর না ঘুরতেই আবারও শিরোপা উৎসবে মাতলো লিওনেল মেসির দল। ১৯৯৩ সালের পর আরেকটি ফাইনালিসিমায় মাঠে নেমে আবার শিরোপা জিতলো মেসির অদম্য আর্জেন্টিনা। ইতালিকে দুই আন্তঃমহাদেশীয় সেরার লড়াইয়ে ৩-০ গোল ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিলো আর্জেন্টাইনরা।

ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেছেন লাউতারো মার্টিনেজ, অ্যানহেল দি মারিয়া এবং পাউলো দিবালা। মেসি গোল না করলেও আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর ছিলেন এই ম্যাচের প্রাণভোমরা। করিয়েছেন দুই গোল। স্পর্শ করেছেন আর্জেন্টিনার জার্সিতে অ্যাসিস্টের ফিফটি।

ওয়েম্বলিতে আর্জেন্টিনার পক্ষে ম্যাচের প্রথম গোল করেন মার্টিনেজ। স্কোরশিটে এই ফরোয়ার্ডের নাম উঠলেও গোলটির সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেওয়া যায় আর্জেন্টাইন প্রাণভোমরা মেসিকে। খেলার ২৮ মিনিটের সময় মেসি বাম পাশে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যায়।

সেখান থেকে ডিফেন্ডারকে দারুণভাবে কাটিয়ে বাম সাইড দিয়ে বল নিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর বারের কিছু আগে দারুণ এক ক্রস করেন ফুটবল জাদুকর মেসি। সেখানে কেবল আলতো ছোঁয়াতে গোল নিজের নামে করে নেন মার্টিনেজ। এটি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মার্টিনেজের ২০তম গোল।

এদিকে এই অ্যাসিস্টের ফলে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অ্যাসিস্টের ফিফটি স্পর্শ করেছেন মেসি। ১৬১ তম ম্যাচে এসে ইতালির বিপক্ষে এসে এই কীর্তি গড়লেন মেসি।

এদিকে ম্যাচে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল আসে প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে। এই গোলে অ্যাসিস্ট করেন প্রথম গোলদাতা মার্টিনেজ। মধ্যমাঠে বল পেয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে দারুণ এক পাস দেন দি মারিয়াকে। সেখান থেকে চিপ করে গোলের দেখা পান আর্জেন্টাইন এই তারকা ফুটবলার।

ম্যাচের প্রথমার্ধে ইতালি তেমন সুবিধা করতে পারেনি। দুই একটা আক্রমণ করলেও সেগুলো হুমকি ছিলো না আর্জেন্টাইনদের জন্য। ম্যাচের ২১তম মিনিটে অবশ্য ফ্রি কিক থেকে একটি সুযোগ তৈরি করলেও আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের গ্লাভস কোনো বিপদ হতে দেননি।

প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। ম্যাচের নিয়মিত বিরতিতেই ইতালির গোলরক্ষক দোনারুম্মার পরীক্ষা নিতে থাকেন মেসি, দি মারিয়া, মার্টিনেজ এবং লোস সেলসোরা।

খেলার ৫৫ মিনিটে বোনুচ্চির ব্যাকপাস থেকে আত্মঘাতী গোল পেতে বসেছিল আর্জেন্টিনা। তবে শেষ মুহূর্তে লাইনের আগের থেকে বল ফিরিয়ে দলকে বাঁচান ইতালিয়ান গোলরক্ষক দোনারুম্মা। এর ৫ মিনিট পরে দি মারিয়ার দারুণ এক একক প্রচেষ্টা অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন দোনারুম্মা। এর আগে

৬২তম মিনিটে কর্ণার থেকে সরাসরি দি মারিয়াকে বল দেন মেসি। বক্সের বাইরে মেসির উড়ন্ত পাস থেকে দারুণ এক ভলিতে গোলমুখে শট করেন মারিয়া। তবে সরাসরি দোনারুম্মার কাছে বল যাওয়াতে বেঁচে যায় ইতালি। এরপরের মিনিটে মেসির ক্রস ফাঁকায় বল পেলেও মিস করেন লো সেলসো।

খেলার ৬৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া মেসির শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন দোনারুম্মা। ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে একবার বল জালে পাঠানোর সুযোগ পায় ইতালি। তবে জিয়ানলুকা কামাক্কার প্রচেষ্টা অফসাইডের খাড়ায় বাদ যায়।

খেলার ইনজুরি টাইমে মাঠে নেমে ইতালির জালে শেষ কফিন মারেন দিবালা। খেলার ইনজুরি টাইমে নামার ২ মিনিট পরই গোল দেখেন দিবালা। তবে এই গোলের আলোও কেড়ে নেন মেসি। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক ক্ষীপ্র টানে বল নিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন মেসি।

তবে শেষ মুহূর্তে আর গোলমুখে শট নিতে পারেননি তিনি। সেই মুহূর্তে পেছন থেকে আসা দিবালাকে বল দিতেই বাঁ পায়ের দারুণ এক শটে দলকে ৩-০ গোল ব্যবধানে এগিয়ে দেন দিবালা। এই গোলের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৫১ অ্যাসিস্ট পূর্ণ করলেন মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে যা সর্বোচ্চ। অবশ্য এই রেকর্ডে মেসি ভাগ বসিয়েছেন পিএসজির সতীর্থ নেইমারের সঙ্গে। ব্রাজিলের জার্সিতে নেইমারেরও অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৫১।

এই জয়ে এক বছরের মধ্যে দুটি আন্তর্জাতিক শিরোপার স্বাদ নিলো মেসির আর্জেন্টিনা। এদিকে ইতালির রেকর্ড ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডের পথেও আরেক পা এগোলো লিওনেল স্কালোনির দল। ইতালিকে হারিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এখন মেসিদের।


প্রজন্মনিঊজ২৪/খতিব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ