যৌন কর্মীদের আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে ভারতীয় আদালত

প্রকাশিত: ২৭ মে, ২০২২ ০৬:১৮:৪২ || পরিবর্তিত: ২৭ মে, ২০২২ ০৬:১৮:৪২

যৌন কর্মীদের আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে ভারতীয় আদালত

যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিয়ে রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির আইনের আওতায় এখন থেকে যৌনকর্মীরা অন্য সব পেশার মতো সমান মর্যাদা ও সুরক্ষা পাবেন। একই সঙ্গে নিজ ইচ্ছায় যেসব প্রাপ্তবয়স্ক এই পেশায় এসেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে ও বাধা দিতে পারবে না পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার(২৬ মে) ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। পর্যবেক্ষণে আদালত জানান, ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীন সব নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বলা হয়, ‘যৌনকর্মীরা আইনের অধীন সমান সুরক্ষা পাবেন। “বয়স” ও “সম্মতির” ওপর ভিত্তি করে ফৌজদারি আইন সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। একজন যৌনকর্মী প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিজের ইচ্ছায় এ পেশায় এসেছেন, এমনটা জানা গেলে তাঁদের ওপর হস্তক্ষেপ ও ফৌজদারি পদক্ষেপ নেওয়া থেকে পুলিশের বিরত থাকতে হবে।’

একই সঙ্গে আদেশে বলা হয়, যৌনপল্লিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় কোনো যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার, শাস্তির মুখোমুখি করা, হয়রানি ও অনৈতিকভাবে দোষারোপ করা যাবে না। কারণ, যৌনকর্ম বেআইনি নয়, শুধু যৌনপল্লি চালানো বেআইনি।

মা যৌনকর্মী বলে তাঁর সন্তানকে তাঁর কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত। বলেছেন, ‘কোনো ছোট শিশুকে যৌনপল্লি বা যৌনকর্মীর সঙ্গে দেখলেই তাকে পাচার করে আনা হয়েছে, তা ধারণা করা ঠিক হবে না। যদি কোনো ক্ষেত্রে একজন যৌনকর্মী কাউকে তাঁর ছেলে বা মেয়ে দাবি করেন, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে জোর করে তাদের আলাদা করা যাবে না।’

একইসঙ্গে যৌনকর্মীরা যদি কোনো অপরাধের অভিযোগ নিয়ে থানায় যান, তা গুরুত্ব সহকারে শোনা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কোনো যৌনকর্মী যদি শারীরিক নির্যাতন বা অন্য কোনও অপরাধের অভিযোগ আনেন, তবে দ্রুত শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। যৌনকর্মীদের পরিচয় গোপন রাখারও নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।

এছাড়া পুরো এই বিষয়টিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও মতামত জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী ২৭ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেই দিন কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত শুনবেন শীর্ষ আদালত।


ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশের শীর্ষ আদালতের এই নতুন নির্দেশিকায় ভারতের প্রায় ৯ লাখ যৌনকর্মী উপকৃত হবেন। বস্তুত ভারতে দেহ ব্যবসা অবৈধ না হলেও পতিতালয় চালানো বা পতিতাবৃত্তিতে প্ররোচনা দেওয়া অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়।

আর এই আইনের কারণেই বহু যৌনকর্মীকে সেবা দেওয়ার সময় হেনস্তার শিকার হতে হয়। ফলে শীর্ষ আদালতের নতুন এই গাইডলাইনে তারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/এসএমএ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ