পাকিস্তানে নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করে পার্লামেন্টে বিল পাস

প্রকাশিত: ২৭ মে, ২০২২ ০৩:২৯:০৪

পাকিস্তানে নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করে পার্লামেন্টে বিল পাস

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বাতিল করে বিল পাস করেছে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ। একই সঙ্গে প্রবাসী পাকিস্তানিদের আই-ভোটিংও বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ক্ষমতা কমিয়ে আরেকটি বিল পাস হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন (সংশোধন) বিল, ২০২২ ও এনএবি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল, ২০২১ জাতীয় পরিষদে উত্থাপন করে সরকারি দল। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন আইনে সংশোধন আনার মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার এবং প্রবাসী পাকিস্তানিদের আই-ভোটিংয়ের মতো পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের আনা বিতর্কিত পরিবর্তনগুলো বাদ দেওয়া হলো।

সরকারি দল এমন সময় পার্লামেন্টে বিল দুটি উত্থাপন করেছে, যখন আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন চলছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় সরকারকে ছয় দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান আকস্মিক ‘আজাদি মার্চ’ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই বিল দুটি জাতীয় পরিষদে উত্থাপন করা হয়।

জাতীয় পরিষদে বিল দুটি পাস হওয়ায় এখন অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হবে। সিনেটে পাস হওয়ার পর বিল দুটি আইনে পরিণত হবে।

তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী উপনির্বাচনে ইভিএম ও বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য পাইলট প্রকল্প নিতে পারবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।একইভাবে প্রবাসী পাকিস্তানিরা যাতে উপনির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রযুক্তিগত কার্যকারিতা, গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও আর্থিক সম্ভাব্যতার বিষয়টি নিশ্চিত হতে কমিশন পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করতে পারবে।

এদিকে, জাতীয় পরিষদে পাস হওয়া বিলে প্রবাসীদের প্রযুক্তির মাধ্যমে নয়, সশরীর ভোটদান এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনগুলোয় ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান রাখার সমালোচনা করেছে পিটিআই। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কোরেশি বলেছেন, ৯০ লাখ প্রবাসী পাকিস্তানিকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো।

এই পিটিআই নেতা এক টুইটে বলেন, ‘পিটিআই সরকার ৯০ লাখ প্রবাসী পাকিস্তানিকে ভোটাধিকার প্রদান করেছিল। আজ, এই চোর ও দুর্বৃত্তদের দল সেটা কেড়ে নিয়েছে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পাকিস্তানিকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো। ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হলো।’


তবে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বঞ্চিত করার অভিযোগকে ‘ভুল তথ্য’ আখ্যা দিয়ে নাকচ করে দিয়েছেন প্রবাসী পাকিস্তানি ও মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সাজিদ হুসাইন তুরি। তিনি বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। আমরা প্রবাসীদের জন্য আরও ভালো কিছু করার জন্য কাজ করছি।’ প্রবাসীদের জন্য জাতীয় পরিষদে বিশেষ আসন সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে গত ৯ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হয় ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার। এরপর নতুন নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে একের পর এক সমাবেশ করেন তিনি। সর্বশেষ ইসলামাবাদ অভিমুখে গত বুধবার ‘আজাদি মার্চ’ করেন পিটিআই নেতা-কর্মীরা।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা পর্যন্ত রাজধানীতে লাগাতার অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইমরান খান। কিন্তু বৃহস্পতিবার সরকারকে ছয় দিনের সময় দিয়ে আকস্মিক কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করলে আগাম নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত বিষয়টি স্বীকার করেনি।

সূত্র: ডনের


প্রজন্মনিউজ২৪/মনিরুল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ