২১ মে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস

প্রকাশিত: ২১ মে, ২০২২ ০৬:৫০:৩১ || পরিবর্তিত: ২১ মে, ২০২২ ০৬:৫০:৩১

২১ মে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস

আজ শনিবার (২১ মে) বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে।

মেডিটেশন ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ ধ্যান বা সাধনা। মেডিটেশনকে এক বাক্যে বলা যায়, মাথা ঠাণ্ডা রাখা ও মনকে নেতিবাচক ভাবনা থেকে মুক্ত রাখার বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। মাথা ঠান্ডা রেখে মগজকে বেশি কাজে লাগানোই মেডিটেশন বা ধ্যানের লক্ষ্য। মেডিটেশন মনের নেতিবাচক চিন্তার বিনাশ করে ব্যক্তিকে আত্মপ্রত্যয়ী, সাহসী ও ইতিবাচক করে তোলে। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চায় মনের রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ হতাশা, দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ দূর হয়।

বিশ্বজুড়ে এখন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। নিয়মিত মেডিটেশনে কোটি মানুষ উজ্জীবিত হচ্ছেন নতুন শক্তি ও উদ্যোমে। নতুন গতি অনুভব করেছেন স্বাস্থ্য ও মনে। দিন দিন মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

২০২১ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের উদ্যোগে ২১মে 'বিশ্ব মেডিটেশন দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালনের মূল উদ্যোক্তা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। ‘ভালো মানুষ ভালো দেশ স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’ -এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালনে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী মানবিক সংগঠন কোয়ান্টাম। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শনিবার (২১ মে) ফাউন্ডেশনের সেল, প্রিসেল, শাখা, সেন্টারসহ দুই শতাধিক উন্মুক্ত স্থানে সাংগঠনিকভাবে এবং ঘরে ঘরে ব্যক্তিগতভাবে লাখ লাখ মানুষ সম্মিলিত মেডিটেশনে অংশ নেন। এদিন বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় সারা দেশে এবং দেশের বাইরে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন শাখা ও ভার্চুয়াল সেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ধ্যানমগ্ন হন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘আমার মতে জগৎটাতে ভালোটারই প্রাধান্য মন্দ যদি তিন চল্লিশ, ভালোর সংখ্যা সাতান্ন’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বাণী বেশ ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন ধ্যানীরা। অন্তত নিজের জীবনে তো বটেই! নিয়মিত মেডিটেশন চর্চাকারীরা বোঝেন মেডিটেশন বা ধ্যানচর্চা একজন মানুষের ভেতরে কীভাবে শুভ শক্তি বা ভালো বৈশিষ্ট্যগুলোকে জাগিয়ে তোলে। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চাকারীর মনের ভেতর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে আত্মবিশ্বাস, সাহস, সমমর্মিতা, পরার্থপরতা, দেশপ্রেমসহ যাবতীয় মানবিক গুণাবলী। পাশাপাশি এ চর্চা ‘মন্দ’ জিনিসগুলোকে মুছে ফেলতে সাহায্য করে। এই মন্দের ভেতর রয়েছে রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা, ঈর্ষা, লোভ, লালসা, অহম, হীনম্মন্যতা, ভয়, দুশ্চিন্তা, নেতিচিন্তা, অবিশ্বাস আর সংশয় ইত্যাদি সকল আত্মবিধ্বংসী উপাদান। সব মিলিয়ে মন্দ মুছে মন হয় ময়লামুক্ত।

মনীষীদের ভাষায়, মানবজীবনের একক হচ্ছে প্রশান্তি। প্রশান্তি ছাড়া অর্থ-বিত্ত, খ্যাতি, সাফল্য সবকিছুই অর্থহীন। সেই প্রশান্তির খোঁজ মিলছে মেডিটেশনে। ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ সমস্যা ও দুর্দশাগ্রস্ত প্রাত্যহিক জীবন বদলে ফেলেছেন। নিরাময় লাভ করেছেন দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে। কাঙ্ষ্খিত সাফল্য এসেছে হাতের মুঠোয়। ২০১৮ সালের এক জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৫২ ভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের কর্মীদের মেডিটেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। কারণ, তারা দেখছে, মেডিটেশন করা কর্মীর উৎপাদন ক্ষমতা মেডিটেশন না করা কর্মীর চেয়ে শতভাগ বেশি। বাংলাদেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও সেদিকে ঝুঁকছে।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে উইল উইলিয়ামস নামে এক ব্রিটিশ মেডিটেশন প্রশিক্ষক প্রথম এ দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন। উইল উইলিয়ামস অনিন্দ্রার রোগী ছিলেন। মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময়ের পর তিনি এ সম্পর্কে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠেন। গভীর ধারণা লাভের জন্যে তিনি ভারতে এসে সেখানকার দুজন গুরুর সান্নিধ্য লাভ করেন। সেইসঙ্গে চীনা, মিসরীয় ও অ্যামাজন অঞ্চলের ধ্যান সম্পর্কে পাঠ নেন। একপর্যায়ে ’বিজা’ মেডিটেশন নামের একটি ধ্যান পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। যার মূল সুর উৎসারিত হয়েছে প্রাচ্যধারার ধ্যানপদ্ধতি থেকে।


প্রজন্মনিউজ২৪/এসএমএ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ