মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে গরুর মাংসের দাম

প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল, ২০২২ ০৫:৪২:০৬

মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে গরুর মাংসের দাম

নাজমুল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি: দুই বছর আগেও এক কেজি গরুর মাংস পাওয়া যেত ৫০০ টাকায়। বর্তমানে সেই মাংস কিনতে গুনতে হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। দেশের বেশির ভাগ মানুষের প্রতিদিনের আয় এর চেয়ে কম। ফলে এসব মানুষের পক্ষে আর গরুর মাংস কেনা সম্ভব নয়।

মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ক্রেতারা বলছেন, প্রবিত্র রমজানে কেজিতে আরো ৩০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা কেজি।

মধ্যম আয়ের মানুষও এখন আর গরুর মাংস কেনার সাহস করছে না। অনেক পরিবার শুধু বাড়িতে অতিথি এলে নিরুপায় হয়ে গরুর মাংস কেনার সাহস দেখায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এই মানুষগুলোর সাধ্যের মধ্যে আর থাকবে না গরুর মাংস।

অথচ দেশে প্রতিবছর বাড়ছে গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার উৎপাদন। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় চার লাখ পশু উৎপাদন বেড়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৫৪ হাজার গরু। চাহিদার তুলনায় মাংস উদ্বৃত্ত ১০ লাখ মেট্রিক টন। তার পরও গরুর মাংসের দাম বাড়ছে। মাংস কিনতে নাভিশ্বাস ভোক্তাদের।

খামারিরা বলছেন, দেশের বাজারে গোখাদ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ কারণে বাড়ছে গরুর মাংসের দাম।

আজ রবিবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, মানভেদে কোনো বাজারে ৬৬০ টাকা কেজি।

কবিরাজহাট এলাকার সাইফুল হোসেন গোস্ত বিতানের মালিক বলেন, ‘গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৬৮০ টাকার নিচে বিক্রি করলে আমাদের লস হয়। গরুর দাম অত্যধিক বাড়ায় মাংসের দামও বেড়ে গেছে। ’

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন রফিকুল ইসলাম। বাজারে গরুর মাংস কিনতে এসেছিলেন তিনি। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম বেড়ে যে পর্যায়ে গেছে, ২০-২৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরিজীবীদের গরুর মাংস খাওয়ার দিন শেষ। আগে মাসে দু-একবার খাওয়া গেলেও এখন আর গরুর মাংস কিনে খাওয়ার অবস্থায় নেই। ’

জানতে চাইলে ব্যাবসায়ীরা বলেন, ‘গোখাদ্যের দাম বাড়ায় বাজারে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে। বর্তমানে বাজারে গোখাদ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এতে বেড়ে গেছে গরুর উৎপাদন খরচ। সরকার গোখাদ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ নিলে বাজারে মাংসের দাম কমে আসবে। ’

আরো বলেন, ‘আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। কৃষক বা খামারির কাছ থেকে কসাই পর্যন্ত একটি গরু পৌঁছতে তিন-চার হাত বদল হয়। প্রতি হাত বদলে বাড়ে গরুর দাম। ’

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) হিসাব মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে পশু উৎপাদন হয় পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার।


প্রজন্মনিউজ২৪/মনিরুল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ