রংপুরে ইউপি নির্বাচনে নৌকার গলার কাঁটা বিদ্রোহীরা, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ!

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী, ২০২২ ০৫:২০:০১

রংপুরে ইউপি নির্বাচনে নৌকার গলার কাঁটা বিদ্রোহীরা, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ!

নাজমুল হাসান, রংপুর প্রতিনিধি:  রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় ৭ম ধাপে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ইউপি নির্বাচন। উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়ন পরিষদে এবার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ১২৯ জন প্রার্থী। নির্বাচনের দিনক্ষন যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে নৌকার বিদ্রোহী আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংঘাত। রয়েছে নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। তবে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। 

মিঠাপুকুরে গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ১৭ জন চেয়ারমানের মধ্যে পুনরায় নৌকা প্রতীক মনোনয়ন পেয়েছেন মাত্র ৩ জন চেয়ারম্যান। তারা হলেন, রানিপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঙ্গা, ময়েনপুরে চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ও দুর্গাপুরে চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তালুকদার। বাকি ১৪ ইউপিতে আওয়ামীলীগের নুতুনমুখ প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এছাড়াও নৌকা মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে ৭জন বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, এবারের নির্বাচন বেশ জটিল হবে। ভোট সুষ্ঠু হলে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। এছাড়াও নির্বাচনের লড়াইয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ, বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। 

কাফ্রিখাল ইউপিতে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান রাজা বলেন, আমার ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারে প্রতিকী নৌকা ভাংচুর এবং পোষ্টারে আগুন দেয় দুস্কৃতিকারীরা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ঠ রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মিঠাপুকুর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

চেংমারী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল কবির টুটুল বলেন, আমি জীবনের দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগনের ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছি। এবারের নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্ধিতা করার ইচ্ছা ছিলনা। কিন্তু জনগণ আমাকে চাইছে তারা আমার বাড়ি ঘেরাও করে নির্বাচন করতে বাধ্য করেছে। আমার জনপ্রিয়তা দেখে সমর্থকদের নানাভাবে হয়রানি করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। 

কাফ্রিখাল ইউপিতে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়নাল আবেদীন (মাষ্টার) দাবি করেন, একটি কুচক্রী মহল তাদের জনপ্রিয়তা দেখে হিংসার বর্ষবতী হয়ে তাদের ফাঁসাতে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এটা নোংরা রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার বলেন, একটি বিশেষ মহলের নির্দেশে গত নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন এবং এবার নির্বাচনে নৌকা মার্কার মনোনয়ন পাননি, তারাই এই সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নৌকার সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। বিভিন্ন স্থানে নৌকার প্রতিক, পোস্টার পোড়ানোর জন্য তিনি নৌকার বিদ্রোহীদের দায়ী করেন।

উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মেসবাহুল ইসলাম মিলন চৌধুরী বলেন, ৫ ইউনিয়নে লাঙ্গল প্রতীকের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাাফিজার রহমান বলেন, আমরা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দিবোনা। যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দু-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের কোন সমস্যা হয়নি।

মিঠাপুকুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মৃধা জানান, দুটি ঘটনাস্থল তাৎক্ষনিক পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে কেউ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, সুষ্ঠ নির্বাচন আমাদের সকলের প্রত্যাশা। আমরা চাই অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন এজন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।


প্রজন্মনিউজ২৪/সুইট

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ