চীন তাইওয়ানকে হামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে :মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০২১ ১২:৩৫:৫১

চীন তাইওয়ানকে হামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে :মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চীন তাইওয়ানে হামলা করলে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো ‘ব্যবস্থা’ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তবে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি উল্লেখ করেননি তিনি। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তাইওয়ান আশঙ্কা প্রকাশ করার পর বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন বলে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এসময় চীন তাইওয়ানে হামলা করলে সেই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না, সাংবাদিকরা তার কাছে এমন প্রশ্ন তোলেন। এর জবাবে ব্লিংকেনের উত্তর ছিল তাইওয়ান ইস্যুতে ওয়াশিংটনের নিয়মিত বিবৃতির মতোই।

তার ভাষায়, তাইওয়ানের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে ওয়াশিংটন উপত্যকাটিকে সহায়তা করবে। তবে এরপরই অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘একই সময়ে এটিও বলা উচিত যে, এই ইস্যুতে আমরা একা বা বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নই। আমরা বিশ্বের ওই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করছি।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়, ‘ওই অঞ্চলের (তাইওয়ান উপত্যকার) শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের মাধ্যমে তাইওয়ানের ক্ষতির একতরফা কোনো চেষ্টা করা হলে বিদ্যমান সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশই পদক্ষেপ নেবে।’

তাইওয়ানকে রক্ষায় ব্লিংকেন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও ঠিক কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি উল্লেখ করেননি। এর আগে চীন তাইওয়ানে হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র রক্ষা করবে বলে গত অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে মন্তব্য করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে কি না সেসময় এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, ‘হ্যা, তাইওয়ানকে রক্ষার ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি আছে।’

উল্লেখ্য, দিন দু’য়েক আগে বৈশ্বিক পরাশক্তি চীনের পক্ষ থেকে ‘গুরুতর সামরিক হুমকির’ আশঙ্কার কথা সামনে আনে তাইওয়ান। দেশটির দাবি, তাইওয়ানের প্রধান প্রধান বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলো অবরোধ করতে পারে চীনের সামরিক বাহিনী। গত মঙ্গলবার দ্বীপ রাষ্ট্রটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই আশঙ্কার কথা সামনে আনে।

দেশটির দাবি, ‘২০৩৫ সালের মধ্যে নিজেদের আধুনিকায়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। মূলত তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানে নিজেদেরকে এগিয়ে রাখতেই এই লক্ষ্য নিয়েছে তারা। একইসঙ্গে বিদেশি বাহিনী ও শক্তিকে উপেক্ষা করার শক্তি অর্জনও পিএলএ’র লক্ষ্য। এটি তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তায় গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।’

মন্ত্রণালয়ের ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে তাইওয়ানের প্রধান প্রধান বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বহির্গামী ফ্লাইট রুটগুলো একসঙ্গে অবরোধ করার মতো সক্ষমতা রয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র। এর মাধ্যমে বেইজিং আকাশপথে এবং সমুদ্রপথে তাইওয়ানকে অবরুদ্ধ করতে চায় এবং আমাদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে চায়।’

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে তাইওয়ান।

প্রজন্মনিউজ২৪/ইমরান হোসাইন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ