মাহমুদউল্লাহর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা বিসিবি সভাপতির

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর, ২০২১ ০৪:৪৪:৪৫ || পরিবর্তিত: ২৩ অক্টোবর, ২০২১ ০৪:৪৪:৪৫

মাহমুদউল্লাহর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা বিসিবি সভাপতির

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল সময় টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি দাবি করেন, তারা কখনোই ক্রিকেটারদের আত্মনিবেদন (কমিটমেন্ট) নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। মাহমুদউল্লাহর ক্ষোভে ফেটে পড়াকে পাপন দেখছেন, স্রেফ ছেলেমানুষি হিসেবে।

পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের চাপা ক্ষোভ আর ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর চারদিকে হতে থাকা সমালোচনা মূলত মেনে নিতে পারেনি তার দল। বিশেষ করে মিডিয়া এবং খোদ বোর্ড থেকেও তাদের দিকে আঙুল তোলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।


সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দাবি করেন, ‘স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার নিয়ে সমালোচনা হবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যখন আমাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, বলা হয় সিনিয়রদের স্ট্রাইকরেট কম থাকার কারণে বাংলাদেশ হেরেছে। সমালোচনা করতে গিয়ে যখন আমাদেরকে ছোট করা হয়, তখন খারাপ লাগে।

শুক্রবার সেই টিভি মিডিয়াকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মাহমুদউল্লাহর করা সেই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পাপন যা বললেন, তাতে ক্রিকেটার এবং বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি অনেকটাই প্রকাশ্যে চলে এলো।

স্কটল্যান্ড ম্যাচের পর দল যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সে ব্যাপারে এখনো অনড় জানিয়ে পাপন বলেন, ‘স্কটল্যান্ডের মতো আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশ অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। এমন খেলা অপ্রত্যাশিত। ম্যাচ হারের পর যা বলেছি, আমি এখনো ওই কথায় অনড় আছি।’

সিনিয়রদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। দিয়েছিলেন তার জবাবও। তবে পাপন বলছেন, আমি দুটো বিষয়ের কোনো মিল পাইনি।


প্রথমটি হলো, সে বলেছে কেউ তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের খারাপ লাগে। কিন্তু আমি মনে করি কেউই তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। একাবারের জন্যও না। আমি তো আমার বক্তব্যে একবারের জন্যও কমিটমেন্ট নিয়ে কোনো কথা বলিনি।

দ্বিতীয়ত সে (মাহমুদউল্লা) বলেছে যে, তাদেরকে নাকি ছোট করে কথা বলা হয়েছে। আমার মনে হয় সে এটা আবেগী হয়ে বলছে।

মাহমুদউল্লাহর বক্তব্য শুনে পাপন খুব অবাক হয়েছে বলেও জানান ওই সাক্ষাৎকারে। কারণ, মাহমুদউল্লাহ তার (বিসিবি সভাপতি) বক্তব্যকে ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতাও থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিসিসি সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সে (মাহমুদউল্লাহ) এবং অন্য ক্রিকেটারদের একটি বিষয় বোঝা উচিৎ। যেমন সে বলেছে, আমরাও তো মানুষ। কিন্তু একইভাবে আমিও বলতে চাই, এ দেশে যারা তাদের সমর্থক তারাও মানুষ। বিসিবিতেও আমরা যারা আছি তারাও সবাই মানুষ। সুতরাং, এখানে ব্যক্তিগতভাবে নেওয়ার কিছুই নেই। কারণ, আমরা যাই বলি, সে সব কিছুই দলের জন্য, দেশের জন্য। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়।

ভবিষ্যতে কী টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে? বিসিবি সভাপতি সেই পরিবর্তনেরও কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন। বাংলাদেশ বর্তমানে তিন ফরম্যাটে ভিন্ন তিন অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলছে। বিশ্বকাপের মত বৈশ্বিক এক টুর্নামেন্টে মাহমুদউল্লাহর বিব্রতকর বক্তব্যের কারণে এই ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব পরিবর্তন হতে পারে, এটাই এখন যেন অবধারিত বিষয়। যদিও পাপন নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।

বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এই মুহূর্তে নেতৃত্ব (টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে) আমাদের কোনো চিন্তা নেই। তবে এটা স্বাভাবিক, যে কোনো সময় নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে। এবং এখানেও সম্ভাবনা আছে যে, নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবেই। তবে কোন ফরম্যাটে পরিবর্তন আসছে সেটা আমি এখন আমি প্রকাশ করবো না।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে বিসিবি সভাপতির একটা দ্বন্দ্ব বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চলে আসছিল। যে কারণে দেখা গেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট চলাকালেই হঠাৎ করেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেন রিয়াদ। যদিও সেই ঘোষণাটা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দেননি তিনি।

প্রজন্মনিউজ২৪/আল-নোমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ