প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৫৪:১৪
সকাল থেকে সন্ধ্যা, রোদ কিংবা ঝড়, যা-ই হোক না কেন ছুটি নেই সত্তরোর্ধ্ব তাসলিমার। বয়সের দিকে তাকানোর সময় নেই। তাঁর কাছে বয়সের ভার সংসারের ভারের চেয়ে বড় নয়। কেননা নৌকা চালালে ঘরে রান্না হবে, তা না হলে তিনজনকে উপোস থাকতে হবে।
একসময় তাসলিমার স্বামীই নৌকা চালাতেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সেই নৌকার হাল ধরেন তাসলিমা, কিন্তু স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। আর তাঁরও বাঁচার একমাত্র সম্বল এখন এই নৌকা।
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের জয়ন্তী নদীর মাছুয়াখালী-হাজীপাড়া খেয়াঘাটের মাঝি এই তাসলিমা। তিনি হাজীপাড়া গ্রামের প্রয়াত নাসির সরদারের স্ত্রী।
সম্প্রতি তাসলিমার খোঁজ পেয়ে খেয়াঘাটে গিয়ে শোনা গেল তাঁর জীবনসংগ্রামের কথা। তাসলিমা জানান, তাঁর স্বামী ১৯৯৪ সালে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়েন। তখন নৌকার হাল ধরেন তিনি। সংসার চালানোর পাশাপাশি স্বামীর চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। ১৯৯৭ সালে স্বামী মারা যান। তাঁদের তিন মেয়ে, এক ছেলে। ছেলে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি থাকেন। তাঁর খোঁজ নেন না। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এখন ছোট মেয়ে এবং বড় মেয়ের ঘরের নাতি মানছুরকে (৮) নিয়েই তাঁর সংসার।
কেন খেয়ার মাঝি হতে হলো তা বলতে গিয়ে তাসলিমা জানান, আগে জয়ন্তী নদীর মোহনা ছিল অনেক বড়। নদীতে তখন অনেক স্রোত ছিল। এর মধ্যেই তাঁর স্বামী মাঝিগিরি করতেন। তখন তিনি বিলে কৃষিকাজ করতেন। কিন্তু স্বামী অসুস্থ হওয়ায় কৃষিকাজের আয়ে সংসার চলছিল না। তাই এক মেয়েকে নিয়ে খেয়ার হাল ধরতে হয় তাঁকে।
তাসলিমার আক্ষেপ, দিন দিন নদী ছোট হচ্ছে। এতে রোজগারের পথও কমে আসছে। আগে প্রতিদিন কয়েক শ লোক এই নদী পার হতো। আর এখন দিনে এক শ থেকে দেড় শ লোক পার হয়। তারপর আবার এলাকার লোক সব বাকিতে পার হয়। বছর শেষে তারা ধান বা অন্য ফসল দেয়। এলাকার বাইরের যেসব লোক এই খেয়া দিয়ে যায় তাদের কাছ থেকে পাওয়া টাকাই মূলত তাঁর দিনের উপার্জন।
হাড়ভাঙা খাটুনির পরও ভাগ্যের পরিবর্তন না হওয়া নিয়ে তাসলিমা বলেন, ‘জীবন নদীর মতোই। নদীর পানি এদিক-সেদিক যায়, আমি আগের জাগায়ই।’ তবে এত কিছুর মধ্যেও নিজের যা আছে তা নিয়ে আবার সান্ত্বনা খোঁজেন তাসলিমা—‘বাড়তে দেড়-দুই কড়া (চার শতাংশের মতো) জমি আছে, ছোট্ট একটা ঘর। বৃষ্টিতে পানি পড়ে। তা-ও ভালো আছি।’
এই খেয়ার নিয়মিত যাত্রী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘আমার বয়স হওয়ার পর থেকে তাঁকে দেখি এখানে নৌকা চালান। বয়স হয়েছে, এখনো চালান। কোদালপুরে প্রতি হাটবারে তিনি রাত ১১টা পর্যন্ত খেয়া বান।’
তাসলিমার জন্য কোনো সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে কোদালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তাসলিমা মাছুয়াখালী খেয়াঘাটে নৌকা চালান। ছেলেটি থেকেও নেই। পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়া হয়েছে। নৌকাঘাটের ইজারা নিই না আমরা, ফ্রি করে দিয়েছি।
প্রজন্মনিউজ২৪/কে.জামান
রায়পুরে উপজেলা প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আইপিএল জুয়াড়ি সন্দেহে চারজন গ্রেফতার
সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী আর নেই
গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে
ঢাকায় আসতে না পেরে দুবাই-শারজাহর ১০ ফ্লাইট বাতিল
রাজবাড়ীতে ঘুড়ি উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত
ভারতে নারী ভোটার বাড়ছে, ৫ বছরে ছাপিয়ে যেতে পারে পুরুষদের
মুস্তাফিজের আইপিএল খেলা নিয়ে দুই বোর্ড পরিচালকের ভিন্ন মত
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once