ডিজিটাল যুগেও শিক্ষার্থীদের এনালগ ভোগান্তি

প্রকাশিত: ১৩ অগাস্ট, ২০২১ ০৭:২৮:১৫ || পরিবর্তিত: ১৩ অগাস্ট, ২০২১ ০৭:২৮:১৫

ডিজিটাল যুগেও শিক্ষার্থীদের এনালগ ভোগান্তি

চবি প্রতিনিধি: মাহমুদুল হাসান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স করে মাস্টার্স এ পড়ছেন এখন। করোনার কারণে দীর্ঘদিন আছেন বাড়িতে। এরইমধ্যে চাকরির আবেদন করতে প্রয়োজন হচ্ছে অনার্সের সার্টিফিকেট। এজন্য একাডেমিক শাখা থেকে আবেদন পত্র ফরম পূরণ করে বিভাগীয় সভাপতির স্বাক্ষর নেন। তারপর হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আসেন একাডেমিক শাখায়। তার এই কাজটি শেষ করতে লেগেছে তিন দিন। সব কাজ শেষ করেও সার্টিফিকেট তুলতে কয়দিন লাগবে সেটাও জানেনা সে।

শুধু মাহমুদই নয়। তার মত এমন হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন একাডেমিক শাখার দপ্তরে।আর এই শাখায় সার্টিফিকেট অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে তো কথাই নেই। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। একটি জরুরী প্রয়োজনীয় কাগজ তুলতেও সপ্তাহখানেক সময় লেগে যায়। ফরম পূরণ করা, তারপর সেই ফরম নিয়ে বিভাগীয় সভাপতি হয়ে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর করা। এরপর ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমার রশিদ নিয়ে আবেদন করা। আবার আবেদন শেষে বেশ কয়েকদিন একাডেমিক শাখার বিভিন্ন টেবিলে ঘুরাঘুরি করে শিক্ষার্থীদের উত্তোলন করতে হয় প্রয়োজনীয় এসব কাগজপত্র।

এনালগ পদ্ধতির কারণে একাডেমিক শাখার সকল কার্যক্রম ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়। এতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।তার উপর রেজিস্ট্রার ভবনের এই শাখায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতার অভাব সহ সর্বোপরি প্রশাসনিক কাজের ধীরগতির ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। যাকে আমরা ডিজিটাল বলে থাকি। বাংলাদেশেও এখন তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রযুক্তির এই গতিশীলতায় সবকিছু এগিয়ে গেলেও ডিজিটালের ছোঁয়া লাগেনি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক শাখায়। এখনও শিক্ষার্থীদের দিনের বেশিরভাগ সময় কাগজ-ফাইল নিয়ে এক অফিস থেকে অন্য টেবিল ঘুরে বেড়াতে হয়। প্রায় আটাশ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এনালগ নিয়মের কারণে ভোগান্তির মাত্রা চরমে পৌঁছেছে।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ ডাটা সংরক্ষিত থাকে এই শাখায়। ভর্তি কার্যক্রমের পর থেকে এই বিভাগেই শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি কাজ থাকে। ডিজিটাল কার্যক্রম চালু আছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই ওয়েবসাইটে সয়ংক্রিয় একাউন্ট তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা নিজস্ব আইডি নাম্বার দিয়ে সার্চ দিলেই জানতে পারেন তার একাডেমিক অবস্থা। এর ফলে দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজে সুবিধা পায় ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন চাইলেই একাডেমিক শাখা কে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটালাইজড করতে পারে। যেখানে শিক্ষার্থীরা যেকোনো স্থান থেকে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে পারে। একটি ছোট কাজ করতে হলেও আমাদের কে চট্টগ্রামের বাহির থেকে আসতে হয়। আর এতে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় ।


লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন বলেন, দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক শাখার কার্যক্রম ডিজিটাল করা হয়েছে। ফলে তারা এক স্থান থেকেই সকল কাজ করতে পারে। চবিতে যদি ডিজিটাল কার্যক্রম চালু করা হয় তাহলে আমরা সার্টিফিকেট উত্তোলনসহ অন্যান্য জরুরী একাডেমিক কাজ সমূহ কোন ভোগান্তি আর জটিলতা ছাড়াই করতে পারব।

প্রজন্মনিউজ২৪/আল-নোমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ