শুভ জন্মদিন

সাংবাদিক ও কন্ঠশিল্পী বাদল বিরোহীর গল্প

প্রকাশিত: ০৪ অগাস্ট, ২০২১ ০৬:৪৫:৪২

সাংবাদিক ও কন্ঠশিল্পী বাদল বিরোহীর গল্প

একই সাথে সাংবাদিকতা ও সঙ্গীত যার রক্তের সাথে মিশে আছে। সঙ্গীত ছাড়া যিনি বেঁচে থাকার কথা এক মূহুর্তও ভাবতে পারেন না। যার সূরের মূর্ছনা সবার মাঝে আবেগ ধরিয়ে দেয়। তিনি জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ও কলম সৈনিক সালাহউদ্দীন বাদল। বিরহের গান গেয়ে যিনি বন্ধুদের কাছে পরিচিত ‘বাদল বিরোহী’ বলে। একাধারে কলম যুদ্ধের এক অকুতভয় সৈনিক। টেলিভিশনে উপস্থাপনা ও সংবাদ পাঠে সুনাম কুঁড়িয়েছেন সমান তালে।

খুব ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল তার প্রবল আগ্রহ। শৈশব কেটেছে যমুনা নদীর তীরবর্তী জেলা টাঙ্গাইলে। বাবা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহমেদ ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা, মা প্রয়াত সুফিয়া আহমেদ সুগৃহিনী এবং সঙ্গীতানুরাগী। বাবার চাকুরিতে বদলীর সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় কেটেছে গুণীশিল্পীর শৈশব। বাবার কন্ঠে গান শুনে শুনেই সুরের প্রতি ভাব জমে যায় বাদল বিরোহীর। সঙ্গীতের প্রতি একাগ্র ভালোবাসা তাকে আজ নিয়ে এসেছে এক অনন্য উচ্চতায়।

দেশের নামকরা গুণী যে ক’জন শিল্পী শ্রোতাদের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন তাদের অধিকাংশেরই জন্ম টাঙ্গাইলে। আর সেই জেলাতেই বেড়ে ওঠা কন্ঠশিল্পী সালাহউদ্দীন বাদলের। সঙ্গীতে হাতেখড়ি প্রয়াত ওস্তাদ কবিরুদ্দীন, ওস্তাদ ফরহাদ হোসেন এবং ওস্তাদ ইব্রাহীম হোসেনের কাছে।

দীর্ঘদিন সঙ্গীতকে বুকে লালন করে বেঁচে থাকা এ মানুষটি কোন এক অজানা অভিমানে ২০০২ এর পর দীর্ঘ সময় সঙ্গীত থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। একটা সময় তার খুব কাছের একজন তাকে আবারোও সঙ্গীতে ফিরিয়ে আনতে নতুন উদ্যমে প্রেরণা যোগান। শিল্পী বাদল মনে করেন তার জীবনের সবচেয়ে গুণগ্রাহী ছিলেন এই মানুষটি।

এছাড়া গীতিকার-সুরকার এবং সঙ্গীত শিল্পী প্রয়াত আয়শা আক্তার বিউটিও তাকে অনেক বেশি উৎসাহ দিয়েছিলেন সঙ্গীতকে বাঁচিয়ে রাখতে।

অবশেষে দীর্ঘ বিরতির পর এ মানুষটি ফিরলেন তার সুরের জাদু নিয়ে। এসেই বেশ কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন।তাকে নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত হলো একক সঙ্গীত সন্ধ্যা । সেখানেও তিনি হারানো দিনের গান গেয়ে তার ভক্তদের হৃদয়ের মনিকোঠায় আরো বেশি জায়গা করে নিলেন। মনোমুগ্ধকর এ আয়োজনে ছিল “কালারস অব বাংলাদেশ” আর যৌথ সহযোগীতায় ছিল ওয়ালটন ও  ব্যুরো বাংলাদেশ।

জাদুঘরের ওই সঙ্গীতায়োজনে মুগ্ধ হয়েছেন অনেকেই। সালাহউদ্দিন বাদল সম্পর্কে সেই অনুষ্ঠানে সুরকার মিল্টন খন্দকার বলেছিলেন, ‘আমরা যদি বাদলকে সঠিকভাবে গাইড করতে পারতাম তাহলে সে দেশের শীর্ষ পাঁচ সঙ্গীত শিল্পীদের একজন হতো । আর কিংবদন্তী নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ভালো শিল্পী হতে চাইলে বিনয়ী এবং ভালো মানুষ হতে হবে, আর বাদলের সে গুনটা রয়েছে।

এসএ টিভিতে শিল্পী বাদলের সাথে দেড় ঘন্টার আড্ডা ও গানের অনুষ্ঠান ‘সকালের ডায়েরী’ গানের পালে লাগলো হাওয়া- প্রচারিত হলো। সেখানেও তিনি শ্রোতাদের উপহার দিলেন জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি গান।

গানের সাথে শিল্পী বাদলের মনে প্রাণে একাকার হয়ে আছে সাংবাদিকতা। নানা ব্যস্ততা আর চড়া উৎড়া পেরিয়ে সাংবাকিতা দিয়্ জীবনের ্তি টানতে চান িএ্ িশিল্পী। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কণ্ঠশিল্পী বাদলের কলম যুদ্ধ যেন শেষ হয়না। সুযোগ পেল্ িলিখতে বসে যান। সাংবাকিতায় ক্যারিয়ার শুরু করলেও ্িটো্ িতার নেশা-পেশা । সাংবাদিকতা ছাড়া কোনো পেশা্ যেন তার মনে টানেনি।

পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে আড্ডাবাজ এই মানুষটির বেশিরভাগ অবসর সময় কাটে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে, বই পড়ে আর গান শুনে। তার প্রিয় শিল্পীর তালিকায় রয়েছেন ফাতেমা তুজ জোহরা, প্রয়াত নিলুফার ইয়াসমিন, সুবির নন্দি ও নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। আর ওপাড় বাংলার মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গান তার খুবই প্রিয়। কখনো একাকী সময় কাঁটাতে ভালো লাগে তার।

সংসার জীবনে স্ত্রী মিনু আহমেদ এবং একমাত্র মেয়ে ফারিবা তাসবিহ  অবন্তিকে নিয়ে সুখেই কাটছে তার সংসার জীবন। মেধাবী ফারিবা তাসবিহ অবন্তী জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাসসহ বৃত্তি পেয়ে  এবার গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এইচ এসসি পাশ করেছে । এই দু’জন মানুষ ছাড়াও তার সঙ্গীত জীবনের অন্যতম প্রেরণা বন্ধু সহকর্মীরা। স্ত্রী মিনু আহমেদ শাহীন ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষিকা। শিল্পী সালাহউদ্দিন বাদল সঙ্গীতকে কখনই পেশা হিসেবে বেছে নেননি। সঙ্গীত তার জীবনে কেবলই ভালোলাগা আর ভালোবাসার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন এ শিল্পী।

পেশাগত জীবনে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন টাঙ্গাইলের জনপ্রিয় দৈনিক লোককথা ও দেশ কথায় কাজ করার মধ্য দিয়ে। এরপর যোগ দেন দৈনিক ইনকিলাব এবং তারপর লন্ডন থেকে সম্প্রচারিত বেসরকারী টিভি “চ্যানেল এস এ”-তে। এরপর ইসলামিক টিভির শুরু থেকে একটানা সাতবছর সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন তিনি।

সুর পাগল এ মানুষটির আরেকটি নেশা হচ্ছে সাংবাদিকতা। মানুষের জন্য কিছু করতে পারলেই নিজেকে স্বার্থক মনে করেন তিনি। সালাহউদ্দিন বাদল বর্তমানে বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল বাংলা টিভির সিনিয়র জয়েন্ট নিউজ এডিটর এবং ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

 শিল্পীর প্রিয় খাবার তালিকায় আছে খিঁচুরী, গরুর গোস্ত, ভাত-ছোট মাছ। লৈট্যার শুটকির কথা শুনলেই নাকি তার জিভে পানি এসে যায়।

প্রজন্মনিউজ২৪/নূর/খালেক

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ