টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মত হারাল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪ অগাস্ট, ২০২১ ০১:৫২:৪৭

টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মত হারাল বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চার দেখায় কখনো জিতেনি বাংলাদেশ। ক্রিকেটের মাইটিদের সঙ্গে তাই অধরা জয়টা লুপে নেওয়ার বড় সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেনি টাইগাররা। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মাঝারি লক্ষ্য গড়ে বোলিং নৈপুণ্যতায় অজিদদের হারিয়েছে স্বাগতিকরা। স্পিনার নাসুম আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘হোম অফ ক্রিকেট খ্যাত’ মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩১ তোলে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রানে থামে অজিরা। বোল হাতে ১৯ রান দিয়ে চার উইকেট নেন নাসুম।

বাংলাদেশের দেওয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে এসে ইনিংসের প্রথম বলেই শেখ মেহেদীর শিকার হয়ে সাজঘরে পথ ধরেন ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি। অপর প্রান্তে থাকা জশ ফিলিপে পরের ওভারে ছয় দিয়ে শুরু করলেও পরের বলে তাকে ফেরান নাসুম। ৫ বলে ৯ রান করেন তিনি। তৃতীয় ওভারে এসে প্রথম বলেই নতুন ব্যাটসম্যান মোয়াসেস হেনরিকসকে সাজঘরে ফিরিয়ে সফরকারীদের ভিত নাড়িয়ে দেন সাকিব আল হাসান।

মাত্র ১১ রানে তিন উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে টেনে তোলেন মিচেল মার্শ ও অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও দলের মূল ভরসায় থাকা এই দুই ব্যাটসম্যানের ৩৮ রানের জুটিতে আঘাত হানেন নাসুম। দশম ওভারের চতুর্থ বলে ফাইন লেগে থাকা মুস্তাফিজের দারুণ ক্যাচে ফেরেন অজি অধিনায়ক। ২৩ বলে করেন মাত্র ১৩ রান।

অ্যাস্টন অ্যাগারকে নিয়ে আবারও রান তোলায় মনযোগী হয়ে উঠেন মার্শ। দু’জনের জুটি বেশিদূর এগোতে দেননি নাসুম। তার তৃতীয় শিকার হন অ্যাগার। যদিও অ্যাগার নিজের পা স্ট্যাম্পে লাগিয়ে হিট উইকেট হন। পরের ওভারে এসে উইকেটে থিতু হওয়া মার্শকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফেরান নাসুম।

১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অ্যান্ড্রু টাইকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল। একই ওভারের চতুর্থ বলে অ্যাডাম জাম্পাকেও ফেরান এই পেসার। অবশ্য তার আগের ওভারে অ্যাস্টন টার্নারকে ফিরিয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ বলে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। তাতেই সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা। ২৩ রান জয় পায় বাংলাদেশ।

এর আগে ব্যাট করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। চতুর্থ ওভারে ওপেনার সৌম্য সরকার নিজেই নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন। হ্যাজলউডের বল কাট করতে গিয়ে ব্যাটে করে স্ট্যাম্পে নিয়ে আসেন এই ওপেনার। অন্যপ্রান্তে থাকা আরেক ওপেনার নাঈম শেখের ব্যাটে কিছু রানের দেখা পায় বাংলাদেশ। তবে পাওয়ার প্লের পরের ওভারে তাকে সাজঘরে ফেরান অ্যাডাম জাম্পা। ২৯ বলে ৩০ রান করে সুইফ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন নাঈম।

এরপর সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টাইগার অধিনায়কের শুরুটা ভালো হয়নি, মাত্র পাঁচ রানের মাথায় জীবনও পেয়েও যান তিনি। অ্যাগারের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগেছিল। তবে স্লিপে অ্যাশটন টার্নার রাখতে পারেননি ক্যাচ। জীবন পেয়ে যান রিয়াদ। তাতেও ইনিংস বেশিদূর নিতে পারেনি তিনি। হ্যাজলউডকে প্রথম বলে ছয় মেরে পরের বলে লং অফে হেনরিকসের দারুণ ক্যাচে ফেরেন তিনি। দু’জনের ৩২ বলে ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন হ্যাজলউড। ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ।

নতুন ব্যাট হিসেবে ক্রিজে এসে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। মাত্র ৩ রান করে অ্যান্ড্রু টাইয়ের শিকার হন এই পাওয়ার হিটার। দীর্ঘ সময় উইকেটে থিতু হয়ে থাকা সাকিব ঠিক মতো রানের দেখা পাচ্ছিলেন না। এই অলরাউন্ডারকেও ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার পূর্ণ করেন হ্যাজলউড। ৩৩ বলে ৩৬ রান করে ব্যাটের কাণায় লেগে বোল্ড হন সাকিব।

ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে ব্যাট করতে এসে মাত্র ৪ রানে থামেন শামীম পাটোয়ারি। ১৮তম ওভারের শেষ বলে মিচেল স্টার্কের ইয়র্কায় বোল্ড হন তিনি। একপাশ আগলে রাখা আফিফ হোসেনের সঙ্গে শেখ মেহেদী হাসানের ১৭ রানের জুটিই বাংলাদেশকে ১৩১ রানের পুঁজি পড়ে দেয়। শেষ বলে বোল্ড হন আফিফ। ২৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন হ্যাজলউড।

প্রজন্মনিউজ২৪/আ.আমিন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ