রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে সোমবার (২ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। 

মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ছয়জন, পাবনার পাঁচজন, নওগাঁর দুজন, নাটোরের একজন এবং কুষ্টিয়ার একজন রয়েছেন। এদের মধ্যে করোনায় সাতজন এবং করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে আটজন মারা গেছেন।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর চারজন, পাবনার দুজন এবং কুষ্টিয়ার একজন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে। করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন পাবনার তিনজন, রাজশাহীর দুজন, নওগাঁর দুজন এবং নাটোরের একজন।

মৃতদের আটজনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। এছাড়াও  ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ পাঁচজন মারা গেছেন হাসপাতালের ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে। নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) দুজন, ১, ৩, ৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও  ২২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন। সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন রাজশাহীর ১৮০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৯ জন, নাটোরের ৬৮ জন, নওগাঁর ৩২ জন, পাবনার ৮১ জন, কুষ্টিয়ার ১০ জন, চুয়াডাঙ্গার ৩ জন, সিরাজগঞ্জের ৩ জন এবং ময়মনসিংহ জেলার একজনসহ মোট ৩৯০ জন। ২০ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ২০ জন।

এদের মধ্যে করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ১৭৪ জন। এছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৪৬ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৭০ জনের নমুনায়। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন। এই এক দিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৯ জন।

এর আগে রোববার (১ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা ধরা পড়েছে ৪৪ জনের নমুনায়। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ২৭৫ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৭ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩২ দশমিক ৯৮ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ আগস্ট রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৮ জন মারা যান। এর মধ্যে করোনায় ছয়জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে সাতজন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন। এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।

প্রজন্মনিউজ২৪/আবু সাঈদ রনি/আ.খালেক