প্রকাশিত: ০১ অগাস্ট, ২০২১ ০৩:৫৮:৪৭ || পরিবর্তিত: ০১ অগাস্ট, ২০২১ ০৩:৫৮:৪৭
সাধারণত মানুষ বাড়ির ছাদে ছাদকৃষি করে থাকেন। ছাদে ছাগল পালন খুব একটা চোখে পড়ে না। একটি ছাগল দিয়ে শুরু করে ছাদেই ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন গাইবান্ধার রোজিনা বেগম (৩০)। গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকায় তার বাড়ি। এখন ৩৯টি ছাগলের মালিক তিনি। ছাগলের লালন পালনের সব কাজ ছাদেই করেন। পাশাপাশি একই বাড়িতে হাঁস-মুরগি, কবুতর এবং গরুও পালন করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাত শতক বসতভিটায় রোজিনার একতলা পাকা বাড়ি। বাড়ির ছাদে ছাগলের খামার। একটি কক্ষে হাঁস-মুরগি, একটি কক্ষে কবুতর। আরেকটি কক্ষে গরু-বাছুর। দুইটি কক্ষে তারা থাকেন। জনবসতিপুর্ণ এলাকায় অবস্থিত বাড়িটি যেন পশুপাখিদের অভয়ারেণ্য। তার খামারে কাজ করে দুইজন নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। খামারের ছবি তোলার সময় দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা ফজেল হোসেন বলেন, আমরা পুরুষ মানুষ হয়ে যা পারিনি, রোজিনা আপা সেটা করেছে। পশুপাখি বিক্রির সময় তাকে আমরা সহায়তা করি।
রোজিনার পারিবারিক সুত্র জানায়, রোজিনার স্বামী সাইফুল ইসলাম মালেশিয়া প্রবাসী। দীর্ঘ বার বছর ধরে তিনি সেখানে থাকেন। একমাত্র মেয়ে শিখা খাতুন দশম শ্রেণিতে পড়ছে। দুর্গাপুরের বাড়িতে মা ও মেয়ের সংসার। মেয়ে বিদ্যালয়ে গেলে মা একাকি হয়ে পড়তেন। অবসর সময় একা কাটে না। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি শিখা খাতুন উপবৃত্তি পায় ১ হাজার ৩০০ টাকা। পুরো টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনেন। প্রথমবরাই ছাগলটি তিনটি বাচ্চা দেয়। এভাবেই গত পাঁচবছরে তার খামারে ছাগলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭টি। মাঝে মাঝে ছাগল বিক্রি করে শিখার লেখাপড়াসহ অন্যান্য খরচ চলে। বর্তমানে তার খামারে ৩৯টি ছাগল রয়েছে।
এদিকে ছাগল পালন লাভজনক হওয়ায় রোজিনা একই বাড়িতে হাঁস-মুরগি, কবুতর এবং গরুও পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার বাড়িতে ১৫০টি কবুতর, দুইটি গরু, ৫৫টি হাঁস-মুরগি রয়েছে। এসব থেকেও তার আয় হচ্ছে। খামারের আয় দিয়ে তার সংসার চলে। প্রবাসী স্বামীর আয় মেয়ের বিয়ে এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করছেন। ছাগল পালনের সাফল্যের জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ থেকে রোজিনা বেগম সেরা ছাগল খামরি হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন।
রোজিনা বেগম বলেন, বাড়ির ছাদে কাপড় শুকানো ছাড়া কোন কাজ হতো না। সেই ছাদে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের পরামর্শে তিনি ছাগল পালন করছেন। দিনে খোলা ছাদে ছাগল ঘুরে বেড়ায়। রাতে ছাদের একপাশে টিনের চালার নিচে ছাগল রাখা হয়। খাবার ও পরিচর্যা ছাদেই চলে। তিনি বলেন, একসময় সময় কাটানোর জন্য ছাগল পালন করতাম। এখন এই ব্যবস্যা লাভজনক হয়েছে। বুদ্ধি খাটিয়ে যে কেউ পরিশ্রম করলে সাফল্য অর্জন করতে পারে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে তার খামারে ১০০টি ছাগলের খামার করবেন।
রোজিনার মেয়ে শিখা খাতুন জানায়, মাকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। লেখাপড়ার কাজে তাকে সহায়তা করছি। শিখা জানায়, বাবা বিদেশের মাটিতে কষ্ট করে উপার্জন করেন। তার কাছে টাকা নিয়ে পড়াশুনার খরচ চালাতে হয়না। আমার সব খরচের টাকা মা বহন করেন।
এসব বিষয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. মাছুদার রহমান সরকার বলেন, ওই খামারিকে ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিনামুল্যে তার খামারের পশুপাখিদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রোজিনার ছাদে ছাগল পালনের জন্য শহরের খামারিদের উদ্বৃদ্ধ করা হচ্ছে।
প্রজন্মনিউজ২৪/আনোয়ার/রায়হান
গাইবান্ধা
ঘরের কাজে ব্যস্ত মা, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
নোয়াখালীতে ১২ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত তিন
তালাকের হার গ্রামে বেশি, বড় কারণ পরকীয়া
হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি দূতের পরিচয়পত্র পেশ
তারাবিহ নামাজের মাহাত্ম্য ও বিধান
সিমান্তে পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ
দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
ঈদে ঢাকা ছাড়বে দেড় কোটির বেশি মানুষ, ছুটি ২ দিন বাড়ানোর দাবি