টাঙ্গাইলে ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই মরণ ফাঁদ

প্রকাশিত: ১৫ জুন, ২০২১ ১১:৩০:০১ || পরিবর্তিত: ১৫ জুন, ২০২১ ১১:৩০:০১

টাঙ্গাইলে ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই মরণ ফাঁদ

ফয়সাল আহম্মেদ, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে ব্রিজ উদ্বোধনের আগেই মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের উভয় পাশের এপ্রোচের মাটি সরে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও ব্রিজের সীমানা পিলার গুলো পড়ে রয়েছে দুই পাশে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় অল্প দিনেই ব্রিজের এমন দুর্দশা। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, চার কোটি ২৩ লাখ ১৪৬ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার ছিটকিবাড়ী-চরপৌলী সড়কের ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর ৮১ মিটার দৈর্ঘের ব্রিজটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স ফ্রেন্ডস অ্যান্ড নাইজ (জেভি) জয়েন ভেন্সার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন টাঙ্গাইল-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন।

স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন করা হয়নি। তবে তার আগেই ব্রিজটির দুই এপ্রোচে মাটি সরে গিয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজটির দক্ষিণ পাশের এপ্রোচের পূর্ব পাশে প্রায় ১০ ফিট অংশের মাটি সরে গেছে। অপর দিকে উত্তর পাশের এপ্রোচের দুই দিকে ১২ ফিট করে মাটি সরে গেছে। এ ছাড়াও ব্রিজের উভয় প্রান্তের সীমানা পিলারগুলো পড়ে আছে। দিনের বেলা পথচারীরা স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করলেও রাতে দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হয়। এর আগে দক্ষিণ প্রান্তের এপ্রোচে প্রায় ১৫ ফিট অংশে থেকে মাটি ও কার্পেটিং সরে গেলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ঢালাই করে ভরাট করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন বলেন, এ ব্রিজ দিয়ে যুগনী, বাঘিল, ছিটকি বাড়ি, পৌলি, শিবপুরসহ আশে পাশের ১৫ এলাকার লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে। কিন্তু নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ব্রীজটির এপ্রোচ ও পিলার উদ্বোধনের আগেই ধ্বসে গেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালেও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

সুলতান মাহমুদ নামের একজন বলেন, ব্রিজটির কাজ নিম্নমানের হলেও অভিযোগ করে কোন সুরাহা পাইনি। তাই সীমানা পিলার ও এপ্রোচ ধসে যাওয়ায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যে কোন সময় এই ব্রিজে মৃত্যুর মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পথচারি মিজানুর রহমান বলেন, এখন পুরোদমে বন্যা শুরু হয়নি। বন্যার আগে এপ্রোচ ঠিক না হলে বন্যায় উভয় পাশের এপ্রোচ ধসে চলাচল বন্ধ হতে পারে। তাহলে নৌকা ছাড়া আর কোন গতি থাকবে না আমাদের।

বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ধসে পড়ার পর উপজেলা চেয়ারম্যান, এলজিইডির প্রকৌশলী ও এমপি মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী ব্রিজটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী বলেন, ব্রিজটি পরিদর্শনের পর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলজিইডির প্রকৌশলীকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা হবে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী সৈয়দ শাহিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এখনও উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি হলে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ব্রিজের কোন ক্ষতি হয়নি। তবে রাস্তা যে কোন সময় ভেঙে যেতে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী একেএম হেদায়েত উল্ল্যাহ্ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রজন্মনিউজ২৪/শাওন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ